পচা কথা বলি। আবালেরা অফ যাও।
1.
আমার বন্ধু আজিজ অত্যন্ত দুষ্ট প্রকৃতির লোক। কেন যে তাহার সঙ্গে বন্ধুত্ব করিতে গিয়াছিলাম ভাবিয়া আজ নিজের মনে আপসোস হয়।
আজিজ কলেজে উঠিয়াই মদ খাইত, এবং মাগীবাজি করিত।
সেই কথা সে গর্বভরে বলিয়াও বেড়াইতো। শুধু আমাদের বলিলে সমস্যা হইতো না, কিন্তু সে আমাদের গুরুজনদেরও বলিতো, আর বলিবেন না চাচা, সেইদিন মদের আড্ডায় গিয়া এমন ঝামেলায় পড়িয়াছিলাম ...। আমাদের পিঠেই স্যান্ডেল পড়িতো। বিনা দোষে।
আজিজ সিক্ত নেশার পাশাপাশি শুষ্ক নেশাও করিতো।
বলিতো, গাঁজা মিশাইয়া ধূমপান না করিলে নাকি তার কোষ্ঠ সাফ হয় না। হাগিয়া মজা মিলে না। এই নিয়া সে আমাদের গুরুজনদের কাছেও আসিয়া খেদোক্তি করিতো। বলিতো, আগামীকাল পরীক্ষা, অথচ সাঞ্জুমাঞ্জু খাওয়া হয় নাই। হাগা আটকাইয়া আছে।
পড়িবো কী রূপে? ... আমরা মারধর খাইতাম।
আজিজ এ ছাড়াও নানা অনৈতিক কর্ম করিতো। একদিন যেমন আমার এক মামাকে হাইজ্যাক করিয়া বসিলো। মামা অস্ফূটে বলিয়াছিলেন, আজিজ, তুমি ...। সে মামার গালে পটাং করিয়া এক চড় কষাইয়া বলিলো, কীসের আজিজ তুমি, কীসের আজিজ তুমি? মানিব্যাগ বাইর কর নাটকার জানা! মামা তো আসিয়া আমাকে পিটাইলেন।
পরবর্তীতে আজিজ আবার অভিনয় করিয়া দেখাইলো, মামাকে সে কীরূপে প্রহার করিয়া মানিব্যাগ কাড়িয়া লইয়াছিলো। শত দুঃখেও হাসিলাম।
একদিন পেপারে পড়িলাম, আজিজ মোহাম্মদভাই নামক জনৈক ব্যক্তির কাহিনী। ধনাঢ্য লম্পট। তাঁহার নামে ব্যাপক অভিযোগ।
কিন্তু তিনি রমণীমোহন ব্যক্তি। তাবড় তাবড় নায়িকারা (নানা অর্থে) তাঁহার অঙ্কশায়িনী, শয্যা ভাগাভাগি করেন।
আজিজ মুচকি হাসিলো। বলিলো, আজিজ নামক ব্যক্তিরা স্বাভাবিকভাবেই লেডিকিলার। নারীরা তাহাদের পৌরুষের কাছে ঘায়েল হয়।
যেমন আজিজ মোহাম্মদভাই, যেমন আজিজ। সে কলার ঝাঁকাইয়া নিজেকে দেখাইলো।
আজিজের দাপটে আমরা অতিষ্ঠ হইয়া পড়িলাম। তাহার মাগীবাজির নানা সত্যিমিথ্যা গল্প শোনা যাইতে লাগিলো তাহার নিকট হইতে। সে নাকি যাবতীয় নারী টিভিস্টারকে শয্যায় লইয়াছে, এবং তাহারা অনেকেই তাহার ক্রিয়াকলাপে মোহিত হইয়া পাওনা টাকা মকুফ করিয়া দিয়াছে।
কেহ কেহ নাকি তাহাদের মাসতুতো ভগি্নদেরকেও তাহার কাছে পাঠাইবার কড়ার করিয়াছে। ভালো জিনিস নাকি ভাগাভাগি করিয়া লইতে হয়।
2.
সেদিন বহুদিন বাদে আজিজের সহিত দেখা। আগের মত গুন্ডা সে আর নাই, বিবাহ করিয়াছে, কী একটা ব্যবসা করে। মাথায় টাক পড়িয়া গিয়াছে, চলনে বলনেও একটা ভীরু ভালোমানুষ ভাব।
আমি প্রথমে তাহাকে চিনি নাই, সে-ই আগাইয়া আসিয়া বলিল, বন্ধু মুখফোড়, কেমন আছ?
আজিজকে চিনিতে পারিয়া আমি প্রফুল্ল হইতে পারিলাম না, বিশেষ করিয়া তাহার কারণে মামাকাকার হাতে ব্যাপক ধোলাই খাইয়াছি। কিন্তু সে যখন একরকম জোর করিয়া একটি খাবার দোকানে লইয়া পরটা-কাবাব ও চায়ের অর্ডার দিলো, তখন মানা করিতে পারিলাম না। আলকাৎরাও মাগনা পাইলে খাইব।
তাহার এই অভূতপূর্ব পরিবর্তনের কারণ নাকি তাহার বউ। সে অতিশয় গুণবতী রমণী, সন্দেহ নাই, তাহার মত একটি লম্পটকে মানুষ করিয়া তুলিয়াছে।
আমি বলিলাম, তারপর আজিজ, কী ব্যবসা করিতেছ বলিলে ...?
আজিজ চমকাইয়া উঠিয়া বলিল, খবরদার! ঐ নামে ডাকিও না! আমি এফিডাভিট করিয়া নাম পরিবর্তন করিয়াছি, এখন আমার নাম মোখলেছ ...! মোখলেছ ডাকিও!
আমি বীতশ্রদ্ধ হইয়া বলিলাম, কেন আজিজ এত খারাপ কী? আগে তো খুব জাঁক করিয়া বলিতে আজিজ নামের লোকজন বড় কামেল হইয়া থাকে ... নারীরা আসিয়া দলে দলে তাহাদের শিশ্নে আত্মসমর্পণ করে ...।
আজিজ ওরফে মোখলেছ কাঁদ কাঁদ হইয়া বলিল, ভাই মুখফোড়, সেই দিন কি আর আছে? আগে মাথায় কেশ ছিল, এখন টাক পড়িয়া গিয়াছে। ইদানীং টাকমাথা লইয়া নিজের নাম আর আজিজ রাখিতে সাহস হয় না! তাছাড়া .. তাছাড়া ... আমি আগে দুর্বৃত্ত ছিলাম, কিন্তু ... নির্লজ্জ তো ছিলাম না কোন কালে!
আমি স্তব্ধ হইয়া রহিলাম। পরটা কাবাব আসিল।
সে বলিল, লও খাও।
আমি গদগদ স্বরে বলিলাম, বন্ধু মোখলেছ, ধন্য তোমার কান্ডজ্ঞান!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।