আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শীতের শুরুতে পাহাড়ে পাহাড়ে চলে জুম কাটার ধুম

শীতের শুরুতে পাহাড়ে পাহাড়ে চলে জুম কাটার ধুম। বছরের এ সময় (নভেম্বর-ডিসেম্বর) আদিবাসী পাহাড়িরা তাদের উৎপাদিত ভিন্নধর্মী এই ফসলটি নিয়ে মেতে ওঠে অনাবিল আনন্দে। পার্বত্য চট্টগ্রামের দশ ভাষাভাষী এগারোটি জনগোষ্ঠীর জীবন প্রবাহের সঙ্গে মিশে থাকা এই চাষ পদ্ধতি এ অঞ্চলের মাটি আর মানুষকে যেন এক গভীর হৃদ্যতার টানে এক করেছে। পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ের পাদদেশে গাছ-গাছালি কেটে আগুনে পুড়িয়ে ধানের বীজ দিয়ে জমিতে যে চাষ করা হয় তার নাম হচ্ছে জুম চাষ। যুগ যুগ ধরে পাহাড়িরা এই সনাতন পদ্ধতিতে পাহাড়ের উপর চাষাবাদ করে আসছে।

তবে বর্তমানে জুম চাষের প্রচলন দিন দিন কমে যাচ্ছে। ১৮১৮ সালের আগে পার্বত্য চট্টগ্রামে জুম চাষই ছিল একমাত্র কৃষি চাষ পদ্ধতি। ১৮৬৮ সাল থেকে ১৮৭১ সালে ব্রিটিশ সরকার পাহাড়িদের সমতল ভূমিতে চাষাবাদে উদ্বুদ্ধ করার জোর প্রচেষ্টা চালায়। যে সময় সরকারের পক্ষ থেকে পাহাড়িদের ৩৮ হাজার ১০০ টাকা ঋণ দেয়া হয়েছিল। প্রধানত রাজস্ব আয় বৃদ্ধি এবং বনজসম্পদ রক্ষার উদ্দেশ্যে ব্রিটিশ সরকার সমতল ভূমিতে চাষাবাদ শুরু করার উদ্যোগ গ্রহণ করে বলে জানা যায়।

পাহাড়ি প্রধান ও মৌজা প্রধানদের বিরোধিতা সত্ত্বেও ১৮৭২ সাল নাগাদ ৪ হাজার ২৫৬ একর সমতল জমি বন্দোবস্ত দেয়া হয়। আরো জানা যায়, ১৮৬০ সালে পার্বত্য চট্টগ্রামে বসতবাড়ির খাজনা প্রথা চালু করা হয়। ১৮৭০ সালে এটিকে জুম চাষ খাজনা করা হয়। মাথাপিছু চার টাকা জুম খাজনা থেকে সরকারি তহবিলে জমা হতো এক টাকা। দুই টাকা রাজা ও এক টাকা খাজনা আদায়কারী দেওয়ান বা হেডম্যানরা পেতেন।

কৃষি বিভাগের মতে তিন পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি ও বান্দরবানে অবস্থিত ৫ হাজার ৪৮০ বর্গকিলোমিটার অশ্রেণীভুক্ত বনভূমির সিংহভাগ অংশেই জুম চাষ করা হয়। পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন জেলায় ৩৪ হাজার পরিবার এখনো জুম চাষনির্ভর জীবিকায় অভ্যস্ত। এর মধ্যে খাগড়াছড়িতে প্রায় ১২ হাজার রাঙ্গামাটিতে প্রায় ১০ হাজার এবং বান্দরবানে প্রায় ১৩ হাজার জুমিয়া রয়েছে। এশিয়া উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) এক জরিপে দেখা গেছে, পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর মধ্যে শতকরা ৮০ শতাংশ জুম চাষের ওপর নির্ভরশীল। বর্তমানে জুমিয়ারা জুম ধান, তিল, বেগুন, শাক-সবজি ফলানোর পাশাপাশি অর্থকরি ফসল হিসেবে আদা, হলুদ, কলা এবং পেঁপের গাছও লাগাচ্ছেন।

আদা ও হলুদ ব্যপক উৎপাদন হচ্ছে। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।