আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

♣♣♣প্যারোডি কবিতা টু নোয়াখাইল্যা ভাষা♣♣♣ কেউ কথা রাখেনি

বোবা আর বোকার কোনো শত্রু নাই কনুগা কথা রাখে ন কনুগা কথা রাখে ন, তেততিরিশ বোছর কাডিগেছেগই, কনুগা কথা রাখে ন ছোডথাইকতে এক বোষ্টুমী হেতির আইয়ইন্যা গান হঠাৎ করি থামাই কয় শুক্লা দ্বাদশীর দিন অন্তরাখান হুনাই যাইব হেয়ারহরে কত চন্দ্রভূক অমবইস্যা চলি গেছে, মাগার হেই বোষ্টুমী আর আইয়ে ন হুঁচিশ বছর হতিক্ষায় আছি। মামাগো বাড়ির মাঝি নাদের আলী কইছিল, বড্ডা অ ভাইচা তোঁয়ারে আঁই তিন প্রহরের বিল দেখাইতে লই যামু হিয়ানে হদ্মহুলের মাথাত হাপ আর ভোঁরা খেলা করে! নাদের আলীরে, আঁই আর কত বড্ডা অমু? আঁর মাথা ঘরের চাল ছেদা অই আকাশ ছুঁইলে হেরহরেদি নি তুঁই আঁরে তিন প্রহরের বিল দেখাইবি? এইগ্গাও রয়্যাল গুল্লি কিনতাম হাইরলাম না কনদিন লাডি-লজেন্স দেয়াই দেয়াই চুইছে লস্করবাড়ির হোলারা হৈরার মতন চৌধুরীগো গেটে খাড়াই দেইকছি ভিত্রে রাস-উৎসব কী সোন্দর রঙের ধারার মইদ্যে হোনার চুঁড়ি হরিন্না হর্সা বেডিঅগল কত রকমে দাঁতকেলাই ভেটকাইছে আঁর দিকে হেগুনে হিরিও চায় ন! আব্বা আঁর কান্ধে আত দি কইছিলেন, চাইছ, একদিন, আমরাও… আব্বা অন আন্ধা, আংগো দেয়া অয়'ন কিছুই হেই রয়্যাল গুল্লি, হেই লাডি-লজেন্স, হেই রাস-উৎসব আঁরে কনুগা হিরাই দিত নয়! বুকের মইদ্যে সুগন্ধি রুমাল ভরিদি বরুণা কইছিল, যেদিনগা আঁরে হাঁচাহাঁচা ভালবাইসবি হেদিন আঁর বুকেও এ-রকম আতরের গেরান অইব! ভালোবাসার লাই আঁই আতের মুডাত রু' লইছি বদমাইশ ষাঁড়ের চোখে বাইনছি লাল কাপড় বিশ্বসংসার তন্ন তন্ন করি টোগাই আইনছি একশআঁস্টেগা নীল হদ্ম তবু কথা রাখে ন বরুণা, অইনগ্গা হেতির বুকে হুদাই গোস্তের গেরাণ অনো হেতি যে-কোনো মাইওলা। কনুগা কথা রাখে ন, তেততিরিশ বোছর কাডিগেছে, কনুগা কথা রাখে ন! মূল কবিতা কেউ কথা রাখেনি, তেত্রিশ বছর কাটলো, কেউ কথা রাখেনি ছেলেবেলায় এক বোষ্টুমী তার আগমনী গান হঠাৎ থামিয়ে বলেছিল শুক্লা দ্বাদশীর দিন অন্তরাটুকু শুনিয়ে যাবে তারপর কত চন্দ্রভূক অমাবস্যা চলে গেলো, কিন্তু সেই বোষ্টুমী আর এলোনা পঁচিশ বছর প্রতিক্ষায় আছি। মামা বাড়ির মাঝি নাদের আলী বলেছিল, বড় হও দাদাঠাকুর তোমাকে আমি তিন প্রহরের বিল দেখাতে নিয়ে যাবো সেখানে পদ্মফুলের মাথায় সাপ আর ভ্রমর খেলা করে! নাদের আলী, আমি আর কত বড় হবো? আমার মাথা এ ঘরের ছাদ ফুঁড়ে আকাশ স্পর্শ করলে তারপর তুমি আমায় তিন প্রহরের বিল দেখাবে? একটাও রয়্যাল গুলি কিনতে পারিনি কখনো লাঠি-লজেন্স দেখিয়ে দেখিয়ে চুষেছে লস্করবাড়ির ছেলেরা ভিখারীর মতন চৌধুরীদের গেটে দাঁড়িয়ে দেখেছি ভিতরে রাস-উৎসব অবিরল রঙের ধারার মধ্যে সুবর্ণ কঙ্কণ পরা ফর্সা রমণীরা কত রকম আমোদে হেসেছে আমার দিকে তারা ফিরেও চায়নি! বাবা আমার কাঁধ ছুঁয়ে বলেছিলেন, দেখিস, একদিন, আমরাও… বাবা এখন অন্ধ, আমাদের দেখা হয়নি কিছুই সেই রয়্যাল গুলি, সেই লাঠি-লজেন্স, সেই রাস-উৎসব আমায় কেউ ফিরিয়ে দেবেনা! বুকের মধ্যে সুগন্ধি রুমাল রেখে বরুণা বলেছিল, যেদিন আমায় সত্যিকারের ভালবাসবে সেদিন আমার বুকেও এ-রকম আতরের গন্ধ হবে! ভালোবাসার জন্য আমি হাতের মুঠেয়ে প্রাণ নিয়েছি দূরন্ত ষাঁড়ের চোখে বেঁধেছি লাল কাপড় বিশ্বসংসার তন্ন তন্ন করে খুঁজে এনেছি ১০৮টা নীল পদ্ম তবু কথা রাখেনি বরুণা, এখন তার বুকে শুধুই মাংসের গন্ধ এখনো সে যে-কোনো নারী। কেউ কথা রাখেনি, তেত্রিশ বছর কাটল, কেউ কথা রাখে না! (কবি সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের কাছে পূর্ণ শ্রদ্ধা রেখে)

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ৩৭ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।