আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আব্বাস কিরোস্তামির উইন্ড উইল ক্যারি আস

সাহিত্যের সাইটhttp://www.samowiki.net। বইয়ের সাইট http://www.boierdokan.com

উইন্ড উইল ক্যারি আস (1999) দেখে তাজ্জব হয়ে গেলাম। ইরানের কুর্দি এলাকাটা জিওগ্রাফিক্যালি একটা সাবজেক্ট। আর কিরোস্তামি তার এই সিনেমার জন্য সেখানকার এমন এক গোলকধাঁধাময় গ্রাম বেছে নিয়েছেন যাকে সিনেমা তৈরির জন্য যথার্থ বলতে হয়। তেহরান থেকে একদল সাংবাদিক একটি রিপোর্টের ছবি তুলতে যায় ওই পার্বত্য গ্রামে।

সেখানে এক বৃদ্ধার মৃতু্যর পর ঘটার কথা মহিলাদের ওই শোক-বিলাপের বিশেষ অনুষ্ঠানটি। কিন্তু ভিজিটররা বলে, তারা সেখানে গুপ্তধন খুঁজতে গিয়েছে। স্থানীয় একটি ছেলে ফারজাদকে তারা গাইড হিসাবে পায়। আশ্রয় নেয় একটি বাড়িতে। বৃদ্ধার মুতু্য সংবাদের অপোয় থাকে।

কিন্তু সপ্তাহ চলে গেলেও বৃদ্ধার মৃতু্য হয় না। মূল চরিত্রটি (ইঞ্জিনিয়ার) ছাড়া সকলেই হতাশ হয়ে চলে যায় তেহরানে। কিন্তু ইঞ্জিনিয়ারটি থেকে যায়। না বৃদ্ধার মৃতু্যর অপোয় আর নয়, জীবনের এক নতুন উপলদ্ধি হয় তার। জড়িয়ে পড়ে ওই গ্রামের জীবনের সঙ্গে।

এক বাড়িতে দুধ আনতে গিয়ে অন্ধকার দোহন কক্ষে দেখা মেলে ষোল বছরের এক তরুণীর। তাকে সে একটি কবিতা শোনায়। সে কবিতাটিরই একটি লাইন উইন্ড উইল ক্যারি আস। ইরানি কবি ফারোঘ ফারোখজাদের কবিতা সেটি। ফারোঘ ছিলেন বেদনা আক্রান্ত এক নারী।

ফারোঘের বিয়ে হয়েছিল ষোল বছর বয়সে। ইঞ্জিনিয়ার জড়িয়ে পড়ে ওই গ্রামের নানা অনুষঙ্গের সাথে। সিনেমাটি এমন এক কবিতা হয়ে ওঠে শেষ পর্যন্ত যাকে কথায় আর ভাষায় র্ণনা করা সম্ভব নয়। সিনেমায় অনেক কিছুই দেখা যায় না। খানিকটা সংকেত, খানিকটা বলার মধ্য দিয়ে শেষ হয় এর কাহিনী।

কিন্তু সেইটুকুই যথেষ্ট। মানুষগুলো ছাড়া আছে একটি মোবাইল ফোন আর একটি গাড়ি। ফোন ধরার জন্য ভূতের গাড়িতে করে ইঞ্জিনিয়ার যখন উঁচু পাহাড়ে উঠতে থাকে তখন অবাক এক নাটকীয়তা তৈরি হয়। বারবার ঘটতে থাকে এই ঘটনা। শেষ পর্যন্ত গ্রামের প্রকৃতি প্রেমিক এক ডাক্তারের কাছে ইঞ্জিনিয়ার জেনে যায় ওমর খৈয়ামের একটি কবিতা।

না বাকীর জন্য অপো করে আর লাভ নেই। নগদ যা আছে তাকেই মেনে নাও। যাপন করো একেই। শেষ পর্যন্ত অস্পষ্ট এক সকালে শেষ হয় সিনেমা। ঠিকই মেয়েরা শোক করতে রাস্তায় নামে।

আর ইঞ্জিনিয়ার তাদের ছবি তুলে শহরের পথে রওয়ানা হয়। অন্ধকার দোহন কক্ষে [লিংক=যঃঃঢ়://িি.িভড়ৎঁমযভধৎৎড়শযুধফ.ড়ৎম/রহফবী1.যঃস]ফারোঘ ফারোখজাদের[/লিংক] যে কবিতাটি ইঞ্জিনিয়ার বালিকাটিকে শোনায়: যদি আমার বাড়িতে আসো, তাহলে আমার জন্য একটা বাতি আর নিয়ে এসো একটা জানালা। ওই জানালা দিয়ে আমি দেখবো রাস্তার সুখী ভীড়। আমার রাতটি ছোট, বাতাসের খুব কাছাকছি আছে পাতা। আমার রাত খুব ছোট আর যন্ত্রনা-ভাঙনে ভ রা।

শোনো, তুমি কি ছায়াদের ফিসফাস শোনো? সুখ বিদেশী অচিন লাগে, হতাশাই খুব বেশি চেনা চেনা। যায় ছায়াদের ফিসফাস শোনা? এই গভীর নিশুতি রাতে কোথাও ঘটছে হয়তো কিছু, চাঁদ লাল হয়ে গেছে রাগে। ছাদের সঙ্গে লেগে থাকা এই চাঁদ হঠাৎ পড়বে ধ্বসে । হাহাকার করা নারীদের মতো মেঘ, এক সেকেন্ড থামাও বৃষ্টিপাত। একটি সেকেন্ড আর কিছু নয়, ব্যস।

এই জানালার ওই তীরে কাঁপছে একাকী রাত পৃথিবী বন্ধ করেছে ঘোরা। এই জানালার পাশে আছে একজন। তোমাকে আমাকে নিয়ে ভাবনায় আছে সে। তুমি তোমার গোয়ালে বসে ওই স্মৃতিতে রাখো হাত- আমার হাতের 'পরে, ঠোঁটে রাখো ওই ঠোঁট আস্থা রাখো এইখানে। ভরো গরম হাওয়ার গান ছুঁয়ে দাও এই ঠোঁট।

বাতাসে রাখো ভর, ভেবো না কিছু আর হাওয়াই বইবে ভার। (অনুবাদটা খারাপ হলো, পরে ঠিক করবো)


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.