যদি নির্বাসন দাও.................................................................. আমি ওষ্ঠে অঙ্গুরী ছোঁয়াবো আমি বিষ পান করে মরে যাবো! বিষণ্ন আলোয় এই বাংলাদেশ নদীর শিয়রে ঝুঁকে পড়া মেঘ, প্রান্তরে দিগন্ত নির্নিমেষ- এ আমারই সাড়ে তিন হাত তুমি।
সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়। একাধারে কবি ও কথাসাহিত্যিক। অসাধারণ সব কবিতা আর উপন্যাসের জন্য পুরষকৃত হয়েছেন বহুবার। সময়ের ব্যবধানে এখন কলকাতাবাসী হলেও তাঁর জন্ম এই বাংলাদেশের ফরিদপুরেই।
তাই মাটির টানে টানে বার বার ফিরে আসেন তিনি। কিন্তু তবুও নিজভূমে পরবাসী আমার ভালোবাসার কবি, যিনি 'কৃত্তিবাস' আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে বাংলা কবিতার মোড় একেবারে অন্যদিকে ঘুরিয়ে দিয়েছিলেন । 'সত্যবদ্ধ অভিমান', 'জাগরণ হেমবর্ণ'থেকে শুরু করে 'আমি কিরকমভাবে বেঁচে আছি' সব কবিতা সম্ভারেই বিস্মময়কর লেখনীর অনাবিল সৌরভ আর তারুণ্যদীপ্ত ঝলক স্পর্শ করেছিল আমার কৈশোরের কাব্যিক মনকে যার সম্মোহন আজো কাটেনি। তাই প্রিয় কবির একটা প্রিয় কবিতা পোস্ট করলাম সবার জন্যে।
কত দূরে ?
ভোরবেলায় বৃষ্টি একজন সাক্ষী চেয়েছিল, তাই আমি হঠাৎ ঘুম ভেঙ্গে বাইরে
আসি।
বারান্দার সামনেই ব্রিজ, একটাও মানুষ নেই, মাথার মধ্যে নেশার মতন
বৃষ্টির শব্দ, দূরে ছানার জলের মতন হালকা নীল আলো।
এই যে দৃশ্য, আমি কি এর যোগ্য? পৃথিবীতে জন্মেছি বলেই কি আমি
সুন্দরের অংশভাগ পাবার অধিকারী? আলো, হাওয়া, অন্ধকার এবং নারীর জন্য
নিরন্তর এক জুয়াখেলা চলছে, ক্রমশ সবাই দূরে চলে যায়, এক বিকল
টেলিফোনে বারবার আমি ডাকাডাকি করেছি। কেউ জানলো না বিচ্ছেদের
আগে ছিল কতখানি আকুলতা।
আমার মুখে জলের ঝাপটা লাগে, এখন আমি কাঁদতে পারি, আমার
যাবতীয় দু:খ ও ক্ষমা প্রার্থনা এই মানবহীন প্রতূ্যষে সুক্ষ্ম বৃষ্টির সামনে। একটা
হারিয়ে যাওয়া ছবি, এই রকম বারান্দার সামনে ব্রীজ, ভোরের বর্ষণ, দূর
আকাশের গায়ে আঁকা বৃক্ষ, যেন আগে কোথাও ছিল, এখন নেই, আমি ঝুলে
আছি শূন্যে।
কিংবা আমার ঘুম ভাঙেনি, কেউ ক্ষমা চায়নি।
হাত দিয়ে স্পর্শ করি জল। আমাকে যেতে হবে। আর কত দূরে? আর
কত দূরে?
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।