বাংলাদেশ নিয়ে ভাবনা, প্রত্যাশা ও সম্ভাবনার সংগ্রহমালা
মোবাইল ফোনের প্রতি আমার বাড়তি কোন আকর্ষণ বা আসক্তি নেই। যখন দরকার, শুধু খবরটা জানবার বা জানাবার জন্য ফোনটার ব্যবহার। কিন্তু মোবাইল ফোনের সুবিধার পাশাপাশি এর বিপওি যে কতো বেশী তা বুঝাই কি করে। মিথ্যে বলার হাতেখড়ি ও কসরৎ দেওয়া হয় মোবাইল ফোনে। অধিকাংশ সময় ফোন করলেই বলে, "এই তো আর পাঁচ মিনিট"।
"এই তো চলে আসছি"। "না এখনও মিটিং-এ"। "সরি, জ্যামে পড়ে গেছি, আজকে তোমার সাথে দেখা হবে না"। "সরি, ফোনে চার্জ দিতে ভুলে গিয়েছিলাম"। আরও কতো কি? ভুক্তভোগীরা আরও চমৎকার চমৎকার উদাহরণ দিতে পারবেন।
ইদানীং আমি একটা কল্ পাচ্ছিলাম, ফোন তুললেই জিগ্যেস করে, "ভাই, এডা কোনহানে"? যখনই জিগ্যেস করি, কাকে চান? ফোন রেখে দেয়। আবার কিছুক্ষণ পরে ফোন করে বলে, "ভাই, এডা কোনহানে"? লোকটা কাকে চায় সেটা বলবে না। জিগ্যেস করলেই ফোন রেখে দেয়। এ কি যন্ত্রণা!!! শেষ পর্যন্ত আমি বলা শুরু করলাম, "আমি যেহানে ফোনডাও সেইখানে"। লোকটাকে কি করে বুঝাই যে মোবাইল ফোনের কোন স্থায়ী ঠিকানা নেই।
তার ক'দিন পরে শুরু হলো, আরেকজনের ফোন। ফোন করেই জিগ্যেস করে, "ভাই, এই সীম কার্ডটা কি আপনার"? আমি উওর দিলাম, "আমার না হলে তো সীমটা আপনার কাছেই থাকতো"। অন্যদিক থেকে উওর দেয়, "কাগজ আছে তো"? এবার দেখি, মহা ফ্যাসাদ। ভাই, আপনার কাছে কাগজ থাকলে যান না ফোনের দোকানে। মেজাজ এবার সত্যি গরম।
রাগ করে ফোন করলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া ভাগ্নেকে, "এই সীম কার্ডটা কার"? অন্যদিক থেকে ভাগ্নে হাসতে হাসতে উওর দেয়, "কেন মামা কোন সমস্যা? আপনি এখন কোথায়? আপনার জন্য আরেকটা সীম কার্ড নিয়ে আমি এখনই আসছি"। ততক্ষণে মেজাজ আমার ভীষণ বিগড়ে গেছে। বললাম, "সীম কার্ড আনতে হবে না, আজকে তোর মাথা ভাঙ্গব"। বলে ফোনটা বন্ধ করে দিলাম।
এর পর যখন ফোনটা অন করলাম, শুধু দেখায় আউট অব সার্ভিস।
ভাগ্নী হাসতে হাসতে বলে, "মামা, আপনার সীম কার্ড বাতিল হয়ে গেছে"। ওর ফোনটা দিয়ে দোস্তকে ফোন করে বললাম, "আমি বসুন্ধরা সিটিতে আসছি। তুই আয়"। ভাগ্নী এলবাম থেকে আমার একটা পাসপোর্ট সাইজের পুরনো ছবি বের করে বলল, "এটা নিয়ে আরেকটা ছবিসহ আইডি কার্ড নিয়ে যান। নতুন সীম কার্ড পাবেন"।
বসুন্ধরা সিটিতে ফোনের দোকানে গিয়ে ছবি দেওয়ার পর দোকানদার বলে, "ছবিতো আপনার 2 কপি লাগবে। এক কপিতে হবে না"। দোস্ত বলে, "অসুবিধা নাই, আমি ছবি নিয়ে আসছি"। আমি বলি, তোর ছবি দিয়ে কি হবে? বলে, "ছবি হলেই হলো"। করিৎকর্মা দোস্ত 5 মিনিটের মধ্যে ছবিসহ হাজির।
নিজেই ফোনের ফর্ম ফিল আপ করে ছবি দিয়ে সীমকার্ড হাতে নিয়ে ফোন অ্যাক্টিভ করে দিল। না, পয়সাটা নিজের পকেট থেকেই দিলাম। শুধু নামটা আর ছবিটা জানী দোস্তের। হাসতে হাসতে বলে, "এক্সট্রা ছবি সবসময়ই রাখি, বন্ধুদের উপকার করার জন্য"। বড়োই উপকারী বন্ধু আমার।
শুধুহাসতে হাসতে সে বলল, "ফোনটা সামলে রাখিস্ । কালা জাহাঙ্গীরের হাতে পড়লে র্যাব কিন্তু আমারে ক্রসফায়ারে ফেলবে"।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।