আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বাজি

একদিন তোর কথা শুনবে নদি...

----(1)---- 'আসবে না' 'সিওর?' 'ড্যাম শিওর' 'বাজি হয়ে যাক!' 'সই' 'গ্র্যান্ড প্রিন্স এ খাওয়াতে হবে কিন্তু?' 'এ্যানি হোয়্যার' '2 দিন সময় নিলাম; এর মধ্যে ও তোর সামনে হাজির হবেই শালার কপালের ঝোল আমি মাটিতে ফেলবোই!' 'শুধু ঘাম ফেললেই হবে না; নাকানিচুবানিও খাওয়ানো লাগবে' 'হা হা হা, ওকে; দ্যাখ না কি করি ' ----(2)---- হ্যালো- রাখাল? 'কি ব্যাপার মহারাজ... এতদিন পর?' 'আরে বলিস না; লাইফ আমার হেল হয়ে গেছে' 'ঐটাতো আগেও ছিল!' 'দ্যাখ ফাজলামি করবি না; মনটা বহুত খারাপ' 'তাই নাকি?' 'হুম, সকাল থেকেই অদ্ভুত সব ফোনকল আসতাছে, বলছে- আপনি কি পাত্র?' 'বলিস কি?' 'সত্যিই তাই; অনেকেতো গালিগালাজও দিল। আচ্ছা তোর কাছে প্রথম আলো পত্রিকা আছে? 'নাহ, কেন বলতো?' 'তুই নির্মলের বাসায় থাক; আমি বাসা হয়ে আসতাছি' 'ঠিক হ্যায়' ----(3)---- তারপর? নির্মল খুব আগ্রহ ভরে তার দিকে তাকিয়ে আছে। 'মাটির সাথে মিশে যেতে ইচ্ছা করতাছে। ঘরে ঢুকেই দেখলাম ভাইয়া, ভাবী আর আত্মীয়স্বজনরা গোল মিটিং করতাছে। দুলাভাই আমাকে দেখে বলছে- 'তুমি যে বড় হয়েছো, সেটাতো আমাদের আগে জানাবা, নাকি?' আমিতো তাজ্জব।

সকাল থেকে আজব ফোন পেয়ে তিক্তবিরক্ত, বাসায় ফিরেও যদি এমন আজব কথা শুনি কেমন লাগে বল? দেখলাম, আমার দিকে সবাই তাকিয়ে আছে! বড় ভাই প্রথম আলো'র একটা পৃষ্ঠা ছুঁড়ে দিলেন। ঠোঁট বাঁকিয়ে নাকি সুরে বললেন- পাত্রকে স্বাবলম্বী করার মানসিকতা থাকতে হবে...। পত্রিকা পড়ে আমিতো বেকুব বনে গেছি। ভাবী বলছে, 'ইদানিং ওর আচার আচরন আমার কাছে কেমন যেন ঠেকছিল। ভেতর ভেতর যে কিছু একটা ঘটাচ্ছে তা টের পাচ্ছিলাম'।

ভাইয়া বলছে- 'আমার সংসারে যদি তোর মন না টেকে তাহলে আর কাউকে না হয়, আমাকেতো বলা উচিৎ ছিল তোর। নাকি?'। এসব কথা শুনে দুকান দিয়ে ঝাঝা করছিল। আর কি বলবো, বল? সবইতো শুনলি। 'হুম, খুবই মর্মস্পশী, খুবই হৃদয়বিধারক কাহিনী! তা পত্রিকায় কি লেখা ছিল?' ও খবরের কাগজের পৃষ্ঠাটা ছুঁড়ে দিল।

পাত্র/পাত্রী চাই কলামের তিন নাম্বার সিরিয়ালে লেখা- 'জরুরী ভিত্তিতে পাত্রী চাই। বিবিএ তে (শেষবর্ষ) অধ্যায়নরত সুদর্শন, স্মার্ট, ভদ্র, নামাজী পাত্রের (5-7''/23) জন্য সুন্দরী, মার্জিত, সংস্কৃতমনা অবিবাহিত পাত্রী চাই। পাত্রকে স্বাবলম্বী করার মানসিকতা থাকতে হবে। সরাসরি যোগাযোগ- 017119712....? হাসতে হাসতে নির্মল বেড থেকে নিচে পড়ে গেছে। থেমে থেমে বলছে- পাত্রকে স্বাবলম্বী করার মানসিকতা থাকতে হবে? হা হা হা হা হা।

'রাজু হাবার মত তাকিয়ে আছে' 'চল তোকে আজ গ্র্যান্ড প্রিন্স এ খাওয়াই। দিনটাকে সেলিব্র্যাট করি' 'তুই খাওয়াবি? তুই? ফকির রাখাইল্যার ব্যাংকে দেখি টাকা উপছে যাচ্ছে!' 'তা বলতে পারেন। আজকে বড় একটা দাও মেরেছি কিনা। ' শুনে নির্মল চুপশে গেছে! ----(4)---- (গ্র্যান্ড প্রিন্স) 'দেখলি? দোস্তদের ভুলে থাকলে এমনই হয়' 'ঠিক ঠিক' মাথা নেড়ে সায় জানায় নির্মল। 'তার মানে?' 'নিয়মিত দেখা সাাৎ করলে এমনটা নাও হতে পারতো।

মানে, আমরা সব কিছু ম্যানেজ করে দিতাম' 'ম্যানেজ করে দিতি মানে?' 'ম্যানেজ মানে এখন তোর বাসায় যেয়ে ভাইয়াকে বলতাম, ভাইয়া ওর কোনো দোষ নাই- ওটা একটা প্রিন্টিং মিসটেক ছিল। কিন্তু এখন আমরা যাব না; কারন তুই দোস্তদের ভুলে গেছস!' 'দেখ, আমার কিন্তু সন্দেহ হইতাছে, কাজটা তোরা করস নাইতো?' রাখাল আর নির্মল একে অপরের দিকে তাকিয়ে মাথা নেড়ে সমস্বরে বলে- 'মোটেই না, মোটেই না!' ----(5)---- বাসে উঠে গেছে রাজু। জানলা দিয়ে বলছে- 'দোস্ত কাজটা তোরা করিস নাইতো?' 'গ্র্যান্ড প্রিন্সে তোকে খাওয়ালাম, তারপরও সন্দেহ আছে?' 'কী??? শালা তোদের আমি...' বাস থেকে নেমে রাজু দুজনের কাউকে দেখতে পেল না। ওরা হাসতে হাসতে ভিড়ে মিশে গেছে। একবুক স্বস্তির শ্বাস ফেলে ও গাড়িতে চেপে বসে।

বাস চলে যাওয়ার জন্য অপো করছিল ওরা দুজন। নির্মলের কাধে হাত ঝুলিয়ে রাখাল বলে- 'ক্যামন দেখলি?' 'তোর কোন তুলনা নাই' 'ওরকম শুষ্কা মুখে এত সুন্দর কথা মানাচ্ছে না। একটু হাসি দিয়ে বল ' 'টাকাতো আমার গেছে, তোর যায় নাই' 'চল শোধবোধ করে দেই' 'ক্যামনে?' 'স্পেশাল চানাচুর খাওয়াবো তোকে আজ! জিবে পানি এসে যাচ্ছে!' 'দুই টাকায় সব শোধবোধ? হা হা হা, শালা তুই মানুষ হবি না' 'বড়লোক হয়ে নেই, তারপর তোদের সামনে মানুষ হবোনে, দেখে নিস? সন্দেহ থাকলে আবার বাজি ধরতে পারিস হা হা হা' 'আবার বাজি? কাভি নেহি, কাভি নেহি! '

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।