আমাদের একটা মানুষের সমাজ লাগবে
১৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন দুটি কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করিয়া জাতিকে ব্যাপক আকারে বিদ্যুৎ সুবিধা প্রদানের মহান লক্ষ্য হাতে লইয়াছে ক্ষমতাসীন দল। ৩০ ভাগ অর্থ বাংলাদেশ ও ভারতের যৌথ কোম্পানি প্রদান করিবে। বিদেশী রিনে (সম্ভবত ভারতের কোন আর্থিক সংস্থা বা ব্যাংক থেকে) ১৪ % হারে সুদে আর বাকী ৭০ ভাগ অর্থ সংগৃহিত হইবে। ভারতীয় যন্ত্রপাতি ও প্রযুক্তির সহায়তা লইয়া ৫০/৫০ হারে (ব্যায় বাদে) বিদ্যুৎ পাইব আমরা বঙ্গজাতি।
দেখা যাচ্ছে ভারত মাত্র ১৫ ভাগ অর্থ বিনিয়োগ করেই ৫০ ভাগের মালিকানা পাইতেছে।
এবং অবকাঠামোগত কর্মকান্ড ভারতীয় কোম্পানীর নিকট ন্যাস্ত করা হইতেছে।
ক্ষমতাসীন দল আমাদের বিদ্যুৎ সংকট নিরসন করবার জন্য মরিয়া হইয়া উঠিয়াছেন তাই তারা যেনতেন ভাবেই হোক এই প্রজেক্ট করিতে চায়, কোন কথা তাদের কর্ণকুহরে প্রবেশ করছে না। বলা যায় না আসন্ন বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিকট আওয়াজের ভয়ে পুর্বেই তাদের কর্ণযুগলকে রক্ষা করার জন্য এ কম্ম তারা করে থাকতে পারেন।
উৎপাদিত বিদ্যুতের দাম কত হবে তা তন্ন তন্ন করে খুজিয়াও চুক্তির কোন জায়গায় পাওয়া যায় নাই, তবে ধারণা করা হচ্ছে গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের চেয়ে এর খরচ হবে কমপক্ষে ৪গুণ বেশী। আর এন.টি.পি.সি আর পিডিবি যদি ১৪৫ টাকা টন দরে কয়লা কেনে তবে বিদ্যুতের দাম পড়িবে ৮.৮৫ টাকা!! !!!!।
বঙ্গসমাজের উচিৎ একটু নড়িয়া চড়িয়া বসা, তবে বিলক্ষন বলা যাচ্চে তাদের নড়ন লক্ষনীয় নয়।
প্রথম প্রকল্পটি কোথা্য় হইবে জানেন কি? সুন্দরবনের সন্নিকটে রামপালে ১৮৩০ একর ধানী জমি জুড়ে। ইতোমধ্যই সেখানকার খয়রাতী কৃষককুলকে ছলে বলে সেখান থেকে উচ্ছেদ শুরু হয়েছে ভুমি অধিগ্রহন আইনকে কাচকলা দেখিয়ে। উল্লেখ্য এই উচ্ছেদের বিষয়ে হাইকোর্ট নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল।
দেখা যাইতেছে প্রকল্পের প্রাকৃতিক ক্ষতি বাংলাদেশের পোহাইতে হইবে।
গাঙ্গেয় ডলফিনের নাম শুনেছেন, এনারা পশুর নদীতে জলকেলী করে থাকেন ,সংখ্যায় খুবই নগন্য তাহারা দুনিয়াজুড়ে। কয়লার দুষনে দুষিত পশুর নদীতে এনারা এন্তেকাল ফর্মাইবেন একথা চোখ বন্ধ রেখে বলা যায়।
একখান মাত্র ৫০০ মেগাওয়াটের কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র কি পরিমান বায়ুদুষন করতে পারে কল্পনা করতে পারবেন না, এ বছরে ৩৭ লক্ষ টন কার্বন ডাই অক্সাইড তৈরী করবে যার মানে ১৬ কোটি গাছ কেটে ফেলা। আর কিছু কইতে মন চাচ্ছে না।
তরল ও কঠিন বর্জ্য উৎপাদন করবে এ প্রকল্প, পানি দুষন করবে আর শব্দ দুষন ফাও।
যন্ত্রপাতি শীতলায়নের জন্য বিপুল বিশালায়তন ভুগর্ভস্থ পানি ক্ষরার সম্ভাবনা তৈরী করবে। গ্রীন মুভমেন্ট আর রামসার কতৃপক্ষ তাদের উদ্বেগ জানিয়েছেন। আমরা বুঝি এমনে হয়না।
ভারতের মধ্যপ্রদেশের বাতিল প্রকল্প কেন বাংলাদেশে সুন্দরবনের পাশে আস্তানা গাড়ে তা আমরা বুঝতে পারি, এই রকম অমর্যাদাকর দেশের স্বার্থবিরোধী চুক্তি কেন হয় তাও আমরা বুঝতে পারি। রাজনৈতিক ক্ষমতা।
ইহার মোহে শাসকগোষ্ঠী এতই ব্যাকুল যে "সবই লইয়া যাও তয় আমারে ক্ষমতায় বসাও টাইপ এটিচুড এর সৃষ্টি হয়"।
তেল-গ্যাস-বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি এই প্রকল্পের প্রতিবাদে ২৪ থেকে ২৮ ঢাকা সুন্দরবন লংমার্চ এর আয়োজন করেছে। দৃপ্ত কন্ঠে আসেন বলি " বিদ্যুতের বিকল্প আছে, সুন্দরবনের বিকল্প নাই"।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।