সযতনে খেয়ালী!
-[ গল্পটা লেখার অনুপ্রেরণা এসেছে Click This Link - - এখান থেকে ]-
..... সাদা শিফনের শাড়ির পেছনের ঘটনাটাই সবকিছু এলোমেলো করে দিয়ে যাচ্ছে। এইতো সেদিন, অথচ এর মাঝে কেটে গেছে কয়েকটা বছর। স্পষ্ট মনে আছে সব। চোখের সামনে ভাসছে একের পর একটা মুহুর্ত। সেদিনের গন্ধটাও নাকে লাগছে, মনে হচ্ছে যেন হাত বাড়ালেই স্পর্শ করা যাবে সবকিছু।
মার্বেল পাথরের বারান্দায় উবু হয়ে নিজের ডায়রীতে কিছু একটা লিখছে শুভ্রা। সারা বড়িময় শোনা যাচ্ছে এর ওর ইতস্তত: ছুটাছুটি, দাপাদাপি আর কোলাহল। মায়ের গলা কানে আসছে একটু পরপরই। মায়ের সবকিছু কড়ায় গন্ডায় পরিপূর্ণ হওয়া চাই। কোন খুঁত থাকা চলবেনা কিছুতে।
তাই নিজের হাতেই সব তদারকি করছেন। হঠাৎ ই কানে এলো, "শুভ্রা কই গেলি। এদিকে একটু আয় তো"!
ব্যস কম্মো সাবার। মায়ের ডাক পড়লে পৃথিবীর যেখানেই থাকুক শুভ্রা, ঠিকই তার ছুটে আসা চাই। "আসি মা", বলে ডায়রীটা সেখানেই ফেলে রেখে ধুপ ধুপ শব্দে বারান্দা ধরে দৌড়।
তেমন কিছুই না। সিঁড়িতে গাঁদা ফুলের মালা লাগনো হবে। মালা লাগাবে ফুলওয়ালারাই। মায়ের অন্যকাজ আছে বলে এই তদারকির দায়িত্বটা পড়েছে শুভ্রার ঘাড়ে।
"দেখবো তোর রুচিবোধের পরীক্ষা, কেমন সাজাতে পারিস আজ।
অবশ্য আমার বিশ্বাস আছে তোর ওপর"।
"কি আর দেখবে, আমি তো তোমারই মেয়ে মা!"
মা তার ভুবন ভুলানো হাসিটা দিয়ে চলে যাবার মুহুর্তে শুভ্রার কপালে একটা ছোট্ট আদর করে দিলেন। বুঝতে শেখার পর থেকে কেবল মাত্র মা ছাড়া তার গাল, কপাল কেউ ছুঁতে পারেনি, আদর করা তো দুরের কথা।
অনেক কসরতের পর সিঁড়ি ঘরটাকে খুব সুন্দর করে সাজনো গেলো। ভাগ্যিস মা ওকে ডেকেছিল, নাহলে ফুলওয়ালারা যেভাবে সাজানো শুরু করেছিল, এতো সুন্দর মার্বেল পাথরে মোড়া বাড়িটাও শাহবাগের মোড়ের কোন অগোছালো, স্তপিকৃত ফুলের দোকান হয়ে যেতো এতোক্ষনে।
থ্যাংক গড.... বলে রুপোর নূপুর পড়া কাঁচা হলুদ রঙের পা ফেলে সিঁড়ি ভাঙতে গিয়েই মনে পড়লো ডায়রীর কথা। আবারো ধপধপ করে দৌড়ে উঠে এলো মার্বেলের বারান্দায়।
অপরিচিত একজনকে নিজের ডায়রী হাতে দেখে জ্বলে উঠলো শুভ্রা। আলগা বাতাসে উড়ে চলা খোলা চুলের কাঁচা হলুদ রঙের মুখটা মুহুর্তেই হয়ে উঠলো লাল টকটকে। লজ্জ্বায় নয়, প্রচন্ড রাগে, ঘৃণায়......
চলবে কি?
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।