সযতনে খেয়ালী!
পূর্বে প্রকাশিত অংশ
: হ্যালো
: কেমন আছো 'জরিমানা'?
: ভালো, তুমি?
: এইতো চলে যাচ্ছে...। কতোক্ষণ সময় দিতে পারবে?
: তুমি কতোক্ষণ চাও?
: তোমাকে না বলেছি একটা প্রশ্নের উত্তর কখনো আরেকটা প্রশ্ন দিয়ে দিবেনা আমাকে! কথা শুনোনা কেন?
: হাহাহা, তোমার কথা শুনলেতো তুমি ক্ষেপবে না, আর তোমাকে না ক্ষেপাতে পারলে কথা বলে মজা কোথায়?
: আমি যে ক্ষেপি সেটাই বা বুঝলে কী করে?....
: কতোগুলো দিন পর তুমি আমাকে শুনতে চাইলে.... এতোদিন পর মন চাইলো তোমার?
: ..... মন যে চেয়েছে সেটা কি বলেছি?
: নাহ্, তা অবশ্যি বলোনি! আচ্ছা তুমি আমার সাথে এমন ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে কথা বলো কেন জিলাপীর মতো!
: হাহাহাহা...
: আরে হাসো কেন ভিলেইনের মতো, আজ্জবতো!
: না ভাবছিলাম আপনার সাথে হিজ এক্সিলেন্সী, হার এক্সিলেন্সী স্টাইলে কথা বলা শুরু করবো কিনা!
: তাও করতে পারেন, আপনাকে দ্বারা এটাও মানায়...। কিন্ত হাসিটা যে সেই জন্য দেননি এটা আপনার মতো এম্পটি হেডও বুঝবে!
: আমারে এম্পটি হেড বললা?
: নতুন করে বললাম নাকি, এটা তো গেলো পাঁচ বছর ধরে শুনে আসছো! আহারে কষ্ট পেয়ো না, কানাকে কানা আর খোঁড়াকে খোঁড়া বলতে নেই, ভুল হয়ে গেছে মাফ চাও...।
: কে মাফ চাইবে, ফাইজলামী করো? যাহ্ দূরে গিয়া কান ধইরা খাড়ায়া থাক্...।
: হাহাহা, এইতো তুমি ক্ষেপছো, কী মজা! আচ্ছা একটা শব্দ পাচ্ছি, সেটা কিসের?
: পিয়ানোর, পিয়ানো শুনছি...।
অদ্ভুত রকমের সুন্দর জানো, মন খারাপ থাকলে আরো খারাপ করে দেয়, ভালো থাকলে আরো ভালো করে দেয়!
: সেদিন একটা প্রোগ্রামে তোমার শাড়িটা পড়তে গিয়েও পড়লাম না, যদি পুরাতন হয়ে যায়!
: আমার শাড়ি?
: ঈশ, আবারো প্যাঁচায় রে!
: প্যাঁচালাম কই, কাউকে কোন জিনিষ দিলে সেটা আর তার থাকে না, যাকে দেয়া হলো তার হয়ে যায়...
: আচ্ছা, তোমার দেয়া আমার শাড়ি, হলো এবার প্যাঁচানো মহারাজ?
: হুমমম
: জানো, প্যাকেটটা এখনো রেখে দিয়েছি। .... ... সবুজ প্যাকেটে মোড়া নীল আকাশ!
: ... ... ... সর্দি লাগিয়েছেন কী করে! মনেতো হচ্ছে কথা বলতে অসুবিধা হচ্ছে, রেখে দেই?
: রেখে দিলে দিতে পারো তোমার ঘুমের ডিস্টার্ব হলে, আমার নাক বন্ধ হলেও অতোটা খারাপ লাগছে না!
: খারাপ লাগলে বলো....
: হাহাহা... বললে কী করবা?
: রেখে দিবো, আবার কী করবো?
: প্রথম দিকে তুমি যখন হঠাৎ নাই হয়ে গেলা, প্রথমদিন সারাটা বিকেল তোমার জন্য অপেক্ষা করলাম তুমি এলে না। পরদিন ভাবলাম আজতো অবশ্যই কথা হবে, কিন্ত হলো না। তুমি আসলে না....।
: কেনো আমি তো মাইক কে বলেছিলাম যেনো তোমাকে জানিয়ে দেয়...
: ও জানিয়েছে।
কিন্ত ও জানানোর আগেই আমি জেনে গিয়েছিলাম। কী করে সেটা জিজ্ঞেস করো না, ওটা তোমার এম্পটি হেডে ধরবে না!
: হাহাহা: আমার অবাকই লাগে তুমি কতো বড় হয়ে গেছো। খুবই স্বভাবিক কিন্ত ভাবতে কেমন যেন লাগে। ঈশ কতো গুলো দিন... ... ...
: হুমমম, আসলেই অনেক গুলো দিন....
অন্ধকার ঘরে বসে সেই অনেক গুলো দিন আগে বাঙলা একাডেমির সামনের চুড়িওয়ালার ঝাঁপি থেকে কেনা নীল রঙের চুড়ি গুলো হাতে নিয়ে, শিপলুর সাথে হওয়া শেষবারের কথোপকথনটার অস্তিত্ব মাথার ভেতর টের পাচ্ছিলো শুভ্রা। মাথার ঠিক ভেতরে যেন কুট কুট করে শিপলু কথা বলে যাচ্ছে, এখনো জীবন্ত... মনে হচ্ছে যেন সামনে বসেই কথা বলছে, নি:শ্বাসের শব্দও শুনতে পাচ্ছে সে, কিন্ত ঘর অন্ধকার বলে শিপলু কে সে দেখতে পাচ্ছে না...।
: নাজমা, এখানে একটা মোমবাতি দিয়ে যেও তো!
এতোক্ষণে শুভ্রা খুব হালকা স্বরে নাজমাকে ডাকলো। আগেই বলেছি অন্য সময় হলে চেঁচিয়ে সারা বাড়ি মাথায় তুলতো মোমবাতির জন্য। কিন্ত আজ, আজকের এই বৃষ্টিস্নাত সন্ধ্যা, ভিজে যাওয়া পৃথিবী, উড়ে চলা সিফনের আঁচল, বেপরোয়া এলোচুল- সব কেমন যেন এলোমেলো করে দিয়েছে তাকে। এতোদিনের বন্ধ থাকা দরজার কপাট গুলো সশব্দে খুলে যাচ্ছে একের পর এক। সযত্নে আগলে রাখা দরজার খিলগুলো ধরে রাখার কোন চেষ্টাই আজ করছে না শুভ্রা।
একটা দমকা হাওয়া এসে সব উড়িয়ে নিয়ে যাচ্ছে...। সময়ের সাথে দৌড়ে সে ক্লান্ত আজ! প্রশান্তি চাই আজ তার, পরম শান্তি। বকুল তলার সেইদিন গুলো, ডাসের আইল্যান্ডে ঘন্টার পর ঘন্টা কাটানো সময় গুলো, শিপলুর সাথে খিটমিটানো সেই সময়ের শান্তি গুলো চাই তার...!
-:পথচলা হয়নিকো শেষ এখনো :-
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।