বিক্ষিপ্ত জীবন. . . কখনো হাসায় . . . কখনো কাদাঁয় . . . আবার কখনো নির্ভেজাল অন্ধকার ঘিরে ফেলে চারদিক থেকে . . .
ওয়েব লগ বা ব্লগ হলো এক ধরনের ওয়েবসাইট। এই ওয়েবসাইটে ইচ্ছে মতো বিষয়ের উপর গল্প, প্রবন্ধ, গান, কবিতা কাস্ট্ করা যায়। তারিখ অনুযায়ী পরপর সাজানো থাকে এই এন্ট্রিগুলো। যিনি ব্লগ মেনটেন করেন তাকে ব্লগার বলা হয়। ব্লগ মেনটেন করা বা কোনো ব্লগে লেখালেখি - এই সমস্ত কর্মকান্ডকে ব্লগিং বলা হয়।
যত দূর জানা যায় 1997 সালে জর্ন বার্জার প্রথম 'ওয়েবলগ' শব্দটি ব্যবহার করেন। পরে পিটার মাহরহোলজ তার ব্লগে ওয়েবলগ শব্দবন্ধটি ভেঙে 'ব্লগ' শব্দটি ব্যবহার করতে শুরু করেন।
নিজের ব্লগ নিজে বানান
সামহয়্যার ইন ব্লগ ডট কম, ব্লগার ডট কম, পাইপপ্যাড ডট কম এই ধরনের বিভিন্ন ওয়েবসাইটে গিয়ে খুব সহজেই তৈরি করে ফেলতে পারেন নিজস্ব ব্লগ। এই ওয়েবসাইটগুলোর নির্দেশ পরপর অনুসরণ করলেই ব্লগ তৈরি। সেই ব্লগে আপনি যা লিখবেন সেগুলো তারিখ অনুযায়ী সাজানো থাকবে পরপর।
ব্লগ এন্ট্রিগুলো পড়ে পাঠক_ পাঠিকারা তাদের মতামতও জানাতে পারবেন। বা চাইলে তারা ই_মেলেও যোগাযোগ করতে পারেন আপনার সঙ্গে। আর ব্ল্লগওয়াইজ ডট কম, ব্ল্লগহাব ডট কম এই ধরনের ব্লগ ডিরেক্টরি আপনাকে সাহায্য করবে লাখ লাখ ব্ল্লগের মধ্যে থেকে আপনার পছন্দসই ব্লগ খুঁজে বের করতে।
শুধু তাই_ই নয়। থাকলে এক ঢিলে দুই পাখিও মারা যেতে পারে।
গুগল আপনাকে দেবে সেই সুযোগ। ব্লগের বিষয়বস্তুর সঙ্গে সঙ্গতি রেখে বিজ্ঞাপন দেয়া থাকবে আপনার ব্লগে। পাঠক_পাঠিকারা সেই বিজ্ঞাপনে ক্লিক করলেই আপনি পাবেন টাকা। অর্থাৎ লেখালেখিও হলো আর তার সঙ্গে সঙ্গে রোজগারও।
কেন এই ব্লগ_ম্যানিয়া?
প্রথমে অতটা জনপ্রিয়তা না পেলেও এখন ক্রমশই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে ব্লগ।
বিশেষ করে টিন_এজার বা অল্পবয়সি ছেলেমেয়েদের মধ্যে ব্লগ লিখার প্রবণতা বেশি। আসলে ব্লগে তো আপনার আমার মতো সাধারণ মানুষই লেখক বা লেখিকা হয়ে ওঠার সুযোগ পাচ্ছেন। ধরুন আপনি খুব কবিতা লেখেন। তো ছোট্টবেলা থেকে দিস্তার পর দিস্তা কাগজ ভরিয়ে তুলেছেন কবিতায়। আপনি চান সেই কবিতাগুলোকে বই আকারে প্রকাশ করতে।
তার জন্য আপনাকে প্রকাশকের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে হবে। প্রথমত, প্রকাশক জোগাড় করা এক সমস্যা। প্রকাশক যা_ও বা পেলেন তার পরে চিন্তা বইয়ের কাটতি কেমন হবে? আর বই যদি না বিকোয় তা হলে প্রকাশক আপনার বই ছাপতে দ্বিতীয়বার রাজি হবেন কিনা সন্দেহ। কিন্তু যদি আপনার নিজস্ব কোনো ব্লগ থাকে তাহলে কুছ পরোয়া নেহি। একবার আপনার কবিতাগুলো ব্লগে পোস্ট করে দিলে নিমেষের মধ্যেই এই ভুবন জোড়া জালে ধরা দেবেন লাখ লাখ পাঠক।
''এছাড়া একটা সাধারণ ওয়েবসাইট লঞ্চ করার তুলনায় একটা ব্লগ ক্রিয়েট করা অনেক সোজা। সেই জন্যও বহু মানুষ ব্লগের প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছে,'' জানান জনপ্রিয় ব্লগ 'সামহয়্যার ইন ব্লগ'_এর সোহেইল মোতাহির চৌধুরী।
ব্লগের জনপ্রিয়তা এতটাই যে, অনেকে আবার ব্লগের লেখাগুলো সংকলন করে বইও ছাপাচ্ছেন। এ ধরনের বইগুলোকে বলা হচ্ছে 'ব্লুক্স। ' এই তো সম্প্রতি জুলি পাওয়েল তার ব্লুকস 'জলি অ্যান্ড জুলিয়া'র জন্যে জিতে নিলেন প্রথম 'ব্লুকার' পুরস্কার।
না, না 'বুকার নয়, 'ব্লুকার'। ব্লুকারের স্বীকৃতি জানাতে আমেরিকায় সম্প্রতি চালু হয়েছে এই পুরস্কার।
মেনস্ট্রিম মিডিয়ায় যারা লেখেন তাদের সবাইকেই কিন্তু একটা সম্পাদকীয় নীতি (এডিটোরিয়াল পলিসি) মেনে চলতে হয়। আবার অনেক সময় রাজনৈতিক চাপের কাছেও মাথা নোয়াতে হয় তাদের। ব্লগে কিন্তু এই ধরনের কোনো প্রতিবন্ধকতা এখনো নেই।
তাই যে সব বিষয় নানা মেনস্ট্রিম মিডিয়ার (অর্থাৎ রেডিও, টিভি বা প্রিন্ট মিডিয়ায়) কোনো জায়গাই পায় না, ব্লগে অনায়াসে লেখা যায় সেই সব বিষয় নিয়েও। আপনার পাড়ার মেলা বা কারো জন্মদিনের উৎসব -এ রকম যে কোনো বিষয় খুব সহজেই চর্চিত হতে পারে ব্লগে। যেহেতু জনপ্রিয় হওয়ার কোনো দায় নেই ব্লগারদের তাই মেনস্ট্রিম মিডিয়া থেকে আলদা দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে লেখার সুযোগ পাওয়া যায় ব্লগে। ''ব্লগে একটা পার্সোনাল টাচ্ থাকে, একটা আনত্দরিকতার ছোঁয়া...। মেনস্ট্রিম মিডিয়ায় যেটা থাকে না বললেই চলে,'' বললেন বেসরকারি ব্যাঙ্কের পদস্থ কর্মচারী পলাশ।
অনেকে অবশ্য মনে করেন যে, বিভিন্ন ব্লগে পরিবেশিত তথ্যের উপর খুব একটা ভরসা করা যায় না। কারণ, বেশির ভাগ ব্লগই ব্যক্তিগত মতামতের প্রতিফলন, মেনস্ট্রিম মিডিয়ার মতো বিশ্বাসযোগ্যতা এখনো অর্জন করতে পারেনি ব্লগ।
সুত্র: একাত্তর 14 তম সংখ্যার প্রচ্ছদ প্রতিবেদন 'অন্তর্জালে অন্তরযোগ' এর একাংশ। সম্পুর্ন প্রতিবেদনটি পাওয়া যাবে এই লিংকে : http://www.ekattor.com/cyber-affair.pdf
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।