কেবল সমুদ্র পারে শুষে নিতে সব, যা কিছু বিপ্রতীপ, ভেসে আসে নিদারুণ কষ্টের নীলজলে..
সামহয়্যার-ইন-ব্লগ রাজ্যে শুরু হয়েছে- অপেক্ষার পালা। 23শে জুন-এর এক অপরূপ সন্ধ্যার আহ্বানের দিকে তাকিয়ে আছে- বাঁধ ভাঙ্গার রাজ্যের প্রত্যয়ী ব্লগাররা। কি ঘটবে সেদিন? কি ঘটতে যাচ্ছে- কালপুরুষের বনানীর বাসায়?
জিজ্ঞাসা, অপেক্ষা আর প্রিয়-লেখার মানুষদের মুখোমুখী হবার অজানা-শিহরণে উদ্বেলিত... আনন্দিত হয়ে আছে ...অসংখ্য হৃদয়। এ আনন্দ ভাষায় প্রকাশের নয়। এ উপলব্ধি শুধুই হৃদয় দিয়ে অনুভবের ।
এ আনন্দ-অনুভব ব্যক্তি, সমাজ, দেশ-দেশান্তর ছাড়িয়ে পৌছে যায় অনন্ত এক স্বপ্নময় নক্ষত্র-লোকে। যেখানে মানুষের জন্য অবলীলায় হাত বাড়িয়ে দেয় মানুষ, যেখানে 'প্রাপ্তি' র মতো প্রস্ফুটিত পুষ্পের নিষ্পাপ প্রাণ প্রার্থনায় স্রষ্টার কাছে নিঃসংকোচে নতজানু হয়ে পড়ে মমতাবান মানুষ। ..
কবে শুরু এর? কবে প্রারম্ভ এই 'ইতিহাস হয়ে যাওয়া' অসাধারণ ঐক্যের? জানার জন্য কয়েকদিন ভ্রমণ করলাম পেছনের পোষ্টগুলোতে। প্রথম বোধহয় এসেছিল অমি রহমান পিয়াল-এর পোষ্টে। কিন্তু সেটি অনেকের চোখ এড়িয়ে যাওয়ায় পুনর্বার তুলে ধরলেন সাদিক।
'সমবেত এই আমরা একটু কি থামতে পারি?'--সাদিক মোহাম্মদ আলম তার অসামান্য অসাধারণ হৃদয়-ছুঁয়ে যাওয়া এক পোষ্টে আমাদের জানালেন সেই ভয়াবহ বিষাদময় খবর। ঝরে যাচ্ছে 'প্রাপ্তি'...। বড়ো অসময়ে ঝরে যাচ্ছে নিষ্পাপ এক শিশু । ঝরে যাচেছ এক মমতাময়ী মায়ের অসীম আদরের 'অসামান্য এক পাওয়া'। ...
মাত্র 2 বছর বয়সে তার শরীরে বাসা বেধেছে কঠিন-ক্যান্সার।
তাকে বাঁচানো কঠিন হয়ে যাবে, যদি প্রত্যয়ী মানুষেরা তার পাশে এসে না দাঁড়ায় । তার মুখের অপরূপ হাসিটি ধরে রাখা কঠিন হয়ে যাবে, যদি পরম প্রার্থনায় এক পতাকাতলে এসে না দাড়ায় সংকটে-সমব্যথী উদ্বেলিত মানুষ। যদি তারা যুক্ত না হয় স্বেচ্ছায় সানন্দ-সাহায্যের সুনিশ্চিত আশ্বাসে। অতঃপর...সাদিক যেন বলতে চাইলেন---"থামো হে চিত্ত হরণকারী অনিন্দ্য-সুন্দর ব্লগ-লিখিয়েরা। একটিবার থামো।
একটি মিনিট দাড়াও 'প্রাপ্তি'র পাশে। .. স্বেচ্ছায় শেয়ার করো এই সংকট... বুকে নাও বিপুল এই বিষাদের এতোটুকু ভাগ.... তোমাদের যুক্তিবাদী হৃদয়, বিবেক যদি টানে...। "
সাদিক যেন বলতে চাইলেন--যদি মানবতা বিপন্ন হয়, যদি প্রষ্ফুটিত 'প্রাপ্তি'র পাপড়িগুলো এতো অবেলায় ঝরে যায় আমাদের অপরিনামদশর্ী অবহেলায়, তবে--- "বলো হে বিবেকবান ব্লগার--তবে আর কার জন্য তুমি লিখবে কবিতা ?.. আর কার জন্য তুমি সাজাবে এই সৌকর্য্যময় শব্দের অনন্য-ভান্ডার? আর কার জন্য ছড়াবে শব্দের জ্যোতি, অনুভবের আলোক বিচ্ছুরণ, সামহয়্যার ইন ব্লগের পৃষ্টার পর পৃষ্ঠায়? ...কার জন্য তোমাদের এই এতো আয়োজন, এই এতো বাঁধ ভাঙার আওয়াজ মাখা অনন্য উৎসব....?"
সাদিক, আপনাকে আজ মানতেই হবে, আপনার আহবানে সাড়া দিয়ে সমবেত এই আমরা সবাই কিছুক্ষণ থেমেছিলাম। আমাদের কলম বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু পরক্ষণেই এক পলকে উন্মুক্ত হয়ে গিয়েছিল সহস্র হৃদয়ের দ্বার।
আমরা একটুক্ষণ থেমেছিলাম। কিন্তু তারপরেই সহস্র আবেগ নিয়ে ছুটে গিয়েছিলাম প্রাপ্তির পাশে। প্রাপ্তি যে একা নয়, প্রমাণ হয়ে গেছে আজ। প্রাপ্তিকে ঘিরে এক ছাতার তলে সমবেত হয়েছে কিছু আবেগী মানুষ। গত 5 ই জুন তাদের আদর মাখা হাত প্রথম স্পর্শ করেছে প্রাপ্তিকে।
মানুষের প্রতি মানুষের এই অসীম ভালবাসায় সেদিনের সন্ধ্যার আকাশ কেঁপে উঠেছিলো। কেঁপে উঠেছিলো নিঃশব্দে বহমান শীতলক্ষ্যার যতো জল। অবাক হয়ে মানুষের সেই অনিন্দ্য মিলন-উৎসব প্রত্যক্ষ করেছে সন্ধ্যার আকাশের সহস্র তারকালোক। ...
অতঃপর ... আবার আয়োজন। আবার প্রাপ্তির পরশ প্রার্থনায় প্রত্যয়ী পতাকাতলে একত্রিত হতে যাচ্ছে ব্লগার বন্ধুরা।
23 শে জুন সন্ধ্যায়, বনানীর সি-বস্নকের 17 নং রোডের 5 নং বাসার 602 নং ফ্ল্যাটে সামহয়্যার ইন ব্লগের হৃদয়বান ব্লগার 'কালপুরুষ' এর স্বপ্নময় বাসায় বসবে সে অসাধারন আসর। প্রচন্ড পরিশ্রমী ও সকল কাজে পারদশর্ী কৌশিক তার চমৎকার সাক্ষাৎকার পর্বের অমন ব্যাপক ব্যস্ততার মাঝেও গতকাল এক পোষ্টের মধ্য দিয়ে আবার আমাদের স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন সেই সম্মিলনে যোগদানের বিষয়টি।
কৌশিককে বলতে ইচ্ছে করে, আহ্বান না শুনেও আসতে পারে অনেকেই। শুধু দরজা খোলা রাখুন। আসবে অনেকেই।
সামহয়্যার রাজ্যে 'মোস্ট ওয়ান্টেড ডে' এখন 23 শে জুন। আমাদের হৃদয় জুড়ে শুরু হয়ে গেছে আবেগময় এক কাউন্ট-ডাউন। আর মাত্র 36 ঘন্টা। প্রাপ্তি, আমরা আসছি। ... আর মাত্র 35 ঘন্টা।
প্রাপ্তি, আমরা আসছি। ... আর মাত্র 34 ঘন্টা । প্রাপ্তি, আমরা আসছি। ... এতো মানুষের অসীম ভালবাসা তোমাকে অবেলায় হারিয়ে যেতে দিতে পারেনা। এতো মানুষের হৃদয় নিংড়ানো ভালবাসা- উপেক্ষায় ফেলে রেখে-- তুমি হারিয়ে যেতে পারোনা।
...আর মাত্র 30..29...28...ঘন্টা .... আসছি, প্রাপ্তি আসছি।
যারা প্রবাসে অবস্থানের জন্য সশরীরে আসতে পারবে না, তারাও তোমার জন্য অশেষ ভালবাসায় ভাচর্ু্যয়্যালী আসার ঘোষনা দিয়ে যাচ্ছে অবিরাম। এখানে যখন সন্ধ্যা 6, ওখানে তখন অনেক ভোর, তবুও ফোন করবেন শোহেইল মতাহির চৌধুরী, রিফাত ওয়েবক্যাম আর মাইক্রোফোনের মাধ্যমে সরাসরি প্রত্যক্ষ করতে চায় অনন্য সেই সন্ধ্যা, হাসান অশরীরী হাজিরা দিয়ে খেতে চেয়েছেন সাদা ভাত আর ইলিশ মাছ..... রাসেল, আস্ত মেয়ে, রেজওয়ান, এস এম মাহবুব মুর্শেদ, সাদিক মোহাম্মদ আলম, সবাই খুব আগ্রহে তাকিয়ে আছেন এদিনটির দিকেই। এদের অনেকেই ফোন করবেন সেদিন। দূর থেকে কিছু শব্দের মাধ্যমেও এরা তোমাকে আদর জানাতে চান।
প্রাপ্তির পরিপূর্ণ প্রাণোচ্ছলতা প্রত্যক্ষের প্রয়োজনে কী প্রচন্ড প্রাণান্তকর প্রচেষ্টাই না প্রবাহমান এদের হৃদয়ে।
তাই কৌশিককে বলছিলাম, আসবে অনেকেই। বারবার আপডেট আর দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর করতে থাকুন আপনার লোকসংখ্যার লিষ্ট। যে কথা গোলাপ গন্ধ্যে মিশে ভেসে বেড়ায় বাতাসের বেগে, যে খবর পৌছে যায় মেঘেদের সীমান্ত ছাড়িয়ে নক্ষত্রের পর অসংখ্য নক্ষত্রলোকে, মানুষের প্রতি মানুষের মমত্ববোধের যে নজির ইতিহাস হয়ে দেশ-কাল-সীমান্ত অতিক্রম করে পৌছে যায় মানবতাকামী সব আবেগী মানুষের কাছে... সে বিষয়ে কাউকে জোর করে কিছু বলতে হয়না। মানুষের নিষ্ঠাবান ভালবাসা আর মূল্যবান আবেগের কথা আগে থেকেই জেনে যায় অনেকেই ।
আর কেউ না জানুক, অনন্তআকাশ, সীমাহীন নক্ষত্ররাজী, আর অন্ততঃ 'সুনীল সমুদ্র' সে-কথা সুনিশ্চিত জানে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।