ভালবাসা নিম্নগামী সার্ক ফোয়ারা
সফিকুল ইসলাম কোহিনূর
কবিতা
অপূর্ব সুন্দর সাজানো
মনোরম চারিপাশ রঙ্গিন আলোয়
উদ্ভাসিত সার্ক ফোয়ারার মোড়
জলের ঝর্না ধারা ঝরছে
দেখে চোখ জুড়ায়।
সুন্দর মনোহরা নাম
সোনার গাঁ পাঁচ তাঁরা হোটেল
সুন্দরবন আমার গর্ভের ধন
একুশ টেলিভিশন চ্যানেল
মুহূর্তে খবর ছড়ায়।
একটু দূরে দাঁড়িয়ে
সবচেয়ে অভিজাত শপিং মল
বসুন্ধরা সিটি দেশী বিদেশী
বিশাল পন্যের সমাহার
সব এক জায়গায়।
সার্ক ফোয়ারার মোড়
অনেকগুলো রাস্তার মিলনক্ষেত্র
পরিকল্পনাহীন তবুও ছুটছে
মানুষ চলে গাড়ি রিক্সা
তিন-চার চাকায়।
কর্মচারী কোটিপতি
চ্যানেলের সাংবাদিক ও বিক্রেতা
পথচারী সন্ত্রাসী পার হচ্ছে
সিগনালের বাতি কখন
জানি নিভে যায়।
খবরের কাগজ বিক্রী
করে শিশু অমানবিক কষ্টের তবুও
কি করবে ফেরিওয়ালা ভবঘুরে
বৃদ্ধ ভিক্ষুক ফুল হাতে
কিশোরী ও দাঁড়ায়।
কিশোরীটা প্রতিদিন
আসে ফুল নিয়ে ঝোপিতে ভরে
কত বয়স তের চৌদ্দ পনের
মিষ্টি হাসি লাল গোলাপ
বেঁচে দশ টাকায়।
কিশোরী বলে স্যার
দশটা ট্যাকা দেন দুইগা ভাত খাব
শুধু ভাতই খাবি আর কিছু
খাবি না বলছে সাহেব
অন্য ভঙ্গিমায়।
গাড়ীতে বসে সাহেব
ভাবছে লাল গোলাপ আর কিশোরীর
সেলোয়ারে ঢাকা আপাদমস্তক
অপলক দৃষ্টিতে বারে বারে
ভাঝে ভাঝে তাকায়।
কিশোরীটা আর ফুল
বিক্রী করে না সার্ক ফোয়ারার মোড়ে
কারণ নিজেই সন্ধ্যা মালতি
ফুলের মত সেজে রাতে
রাস্তায় দাঁড়ায়।
চঞ্চল চোখে ছুটাছুটি
পার্ক থেকে হোটেলে মাতামাতি
রাতভর কিশোরী মরে রোজ
রাতে হোটেলে অথবা
পার্কের কোনায়।
খুব ভোরে বৃদ্ধাটা
ফোয়ারার মোড়ে এসে বসে কোনায়
কখন সিগনালের বাতি জ্বলে
কাঁপতে কাঁপতে খুব কষ্টে
গাড়ীর পাশে দাঁড়ায়।
কাতর কণ্ঠে বলে
দুইদিন খাই নাই ক্ষিধা লাগছে
বাবা দুইটা ট্যাকা ভিক্ষা দেন
আবার সিগনালের বাতির
দিকে তাকায়।
বৃদ্ধাকে দেখিনা আর
সার্ক ফোয়ারার মোড়ে বা রাস্তায়
সিগনালের বাতি দেখে নাই
গাড়ীর চাকায় পিষ্ট হয়ে
গেছে শেষ সিমানায়।
ভাষাহীন আমার একুশ
বদলে গেছে সোনারগাঁর আশ-পাশ
সুন্দরবন ভরেছে কুমিরে শকুনে
কুকুরে বাঘে মারছে মানুষ
সাপে ও চিতায়।
বসে আছি আমি
বসুন্ধরা সিটির সিড়িতে গাড়ী বারান্দায়
দেখতে চাই না লাল হলুদ সবুজ
সবাই বসে জীবনের শেষ
সিগনালের অপেক্ষায়।
বসুন্ধরা ওগো বসুন্ধরা
আমি একা কেউ নেই কোথাও আজ
দেখচ্ছি বাস ট্রাক স্কুটার রিক্সা
মারসিডিস লেক্সাস প্রাডো
যাচ্ছে কোন অজানায়।
আমার প্রিয় বাংলাদেশ
তোমাকে দ্বিখণ্ডিত করে ফেলেছে
মানুষ গাছ গাছালি পশু পাখী
নদী নালা আর জননীকে
ভাগ করতে চায়।
এখন অনেক রাত
দারোয়ান আসচ্ছে দেখচ্ছে চলে যাচ্ছে
বাসায় অপেক্ষায় আছে সকলে
ফোনে স্ত্রী ডাকছে আমি
ফিরলাম বাসায়।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।