নেট দক্ষিণ এশিয়ার আট জাতির শীর্ষ নেতারা আগামী ১০ ও ১১ নভেম্বর মালদ্বীপের পর্যটন নগরী আদ্দু সিটিতে ১৭তম সার্ক শীর্ষ সম্মেলনে মিলিত হচ্ছেন। এ সম্মেলনে তিনটি চুক্তি সই করার প্রস্তুতি চূড়ান্ত হয়েছে। চুক্তিগুলো হল : ১. প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় দ্রুত সাড়া, ২. সার্ক বীজ ব্যাংক গঠন এবং ৩. পণ্যের মান সমতাকরণ ও নিশ্চিতকরণ পর্যালোচনা সংক্রান্ত চুক্তি। এ তিনটি বিষয়ে পৃথক চুক্তি সই করে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো এ খাতে পারস্পরিক সহযোগিতা করবে। এ তিন চুক্তির মধ্যে সার্ক বীজ ব্যাংক গঠনের চুক্তির প্রস্তাব করেছে বাংলাদেশ।
তবে এবারের সম্মেলনের মূল প্রতিপাদ্য বিষয় হল ‘বিল্ডিং ব্রিজেস’ অর্থাত্ কানেকটিভিটির উন্নয়ন সাধন।
বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, আফগানিস্তান, নেপাল, ভুটান ও স্বাগতিক মালদ্বীপের সরকারপ্রধানরা এ সম্মেলনে যোগ দেবেন। দক্ষিণ এশিয়া আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থা (সার্ক) শীর্ষ সম্মেলনের আগে জোটের সদস্য দেশগুলোর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে গঠিত সার্ক কর্মসূচি কমিটির বৈঠক হবে। এতে বিগত এক বছরে সার্কের কর্মকাণ্ড পর্যালোচনা এবং আগামী এক বছরের জন্য কর্মসূচি প্রণয়ন করা হবে। আগামী ৭ ও ৮ নভেম্বর সদস্য দেশগুলোর পররাষ্ট্র সচিবদের সমন্বয়ে গঠিত সার্ক স্ট্যান্ডিং কমিটির বৈঠক হবে।
এ বৈঠকে সার্ক সম্মেলনে সই করার জন্য প্রস্তুত করা চুক্তিগুলো শেষবারের মতো দেখা হবে। আগামী ৯ নভেম্বর সার্ক দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সমন্বয়ে গঠিত ‘কাউন্সিল অব মিনিস্টার্স’ বৈঠক হবে। তারপর অনুষ্ঠিত হবে সার্ক শীর্ষ নেতাদের অংশগ্রহণে সম্মেলন।
‘বিল্ডিং ব্রিজেস’ আসন্ন ১৭তম সার্ক সম্মেলনের প্রতিপাদ্য হওয়ার কারণে কানেকটিভিটিকে এ সম্মেলনে বিশেষভাবে গুরুত্ব আরোপ করা হবে। এ ক্ষেত্রে দক্ষিণ এশিয়ায় সড়ক, নৌ ও আকাশপথে যোগাযোগ জোরদারের পাশাপাশি সামগ্রিক যোগাযোগের বিষয়েও সার্ক নেতারা দিকনির্দেশনা দেবেন।
এ ক্ষেত্রে সার্ক দেশগুলোতে সাংস্কৃতিক এবং জনগণের পর্যায়ে যোগাযোগকেও বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে। কানেকটিভিটির পাশাপাশি আসন্ন সার্ক সম্মেলনে জলবায়ু পরিবর্তন এবং সার্ক উন্নয়ন লক্ষ্য বিশেষ করে দারিদ্র্যবিমোচন বিশেষভাবে গুরুত্ব আরোপ করা হবে। সন্ত্রাস দমন এবং মানবপাচার প্রতিরোধের মতো ইস্যু মালদ্বীপ শীর্ষ সম্মেলনে বিশেষ গুরুত্ব পাবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল মালদ্বীপে আসন্ন সার্ক শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেবে। বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় সার্কের ভূমিকা নিয়ে বিশেষভাবে গুরুত্ব আরোপ করবে।
দক্ষিণ এশিয়ায় মুক্ত বাণিজ্য অঞ্চল সাফটার আওতায় এ অঞ্চলের দেশগুলোর নিজেদের মধ্যে বাণিজ্য বাড়ানোর বিষয়েও বাংলাদেশের পক্ষ থেকে জোর দেওয়া হবে।
সার্ক সম্মেলনের ক্ষণগণনা আগেই শুরু হয়েছে। সম্মেলনের দিনক্ষণ এগিয়ে আসার কারণে আদ্দু সিটিতে প্রস্তুতিও চলছে পুরোদমে। ইতোমধ্যেই ভারত ও পাকিস্তান থেকে নিরাপত্তা এবং রাষ্ট্রাচার সংক্রান্ত অগ্রবর্তী দল মালদ্বীপে গিয়ে আয়োজনের বিভিন্ন দিক খতিয়ে দেখছে। মালদ্বীপকে সার্ক সম্মেলনের আয়োজনে সহায়তার লক্ষ্যে পাকিস্তান ৪ লাখ ডলারের বেশি অনুদান দিয়েছে।
চীন সার্ক সম্মেলন আয়োজনে মালদ্বীপকে ১২ মিলিয়ন আরএমবি অনুদান দেবে। সার্ক সম্মেলন আয়োজনে মালদ্বীপকে তিন টন ধারণক্ষমতাসম্পন্ন সাতটি ট্রাক অনুদান দিয়েছে বাংলাদেশ। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।