এ-মন একবারই ছুঁয়ে যেতে পারে কেউ... বাংলাদেশের চলমান সাংবাদিক আন্দোলনের সাথে নারী এশিয়ান ম্যাগাজিনের সংহতি প্রকাশ করে সভা
সাগর-রুনির হত্যাকারীদের অবিলম্বে সনাক্ত করে শাস্তি বিধানের দাবী
লন্ডন, ১৫ জানুয়ারী . নারী এশিয়ান ম্যাগাজিনের উদ্যোগে সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনির হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত প্রকৃত খুনিদের অবিলম্বে সনাক্ত করে শাস্তি বিধানের দাবীতে আয়োজিত সভায় বক্তারা বলেছেন ¬Ñ প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারের উচ্চপদস্থ কর্তাব্যক্তিরা নানা আশ্বাস বাণী শোনালেও দীর্ঘ প্রায় একটি বছর অতিবাহিত হবার পরও সঠিক তদন্তের মাধ্যমে নৃশংস এই হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন এবং এর সাথে জড়িতদের খুঁজে বের করে শাস্তি বিধানে সরকার চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে। মর্মান্তিক এই হত্যাকান্ড সংঘটিত হওয়ার পর সরকারের উদাসিনতা ও নানা টালবাহানার উদাহরণ তুলে ধরে বক্তারা বলেন, তখনকার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ৪৮ ঘন্টার মধ্যে খুনীদের খুঁজে বের করার ঘোষণা দিলেও সে অনুযায়ী এখন পর্যন্ত সরকারের কোনো জোরালো পদক্ষেপই চোখে পড়েনি। নিহত সাংবাদিক দম্পতির একমাত্র শিশু সন্তান মেঘ‘র ভরণ-পোষনের দায়ভার স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নেয়ার ঘোষণা দিলেও অসহায় মেঘ‘র কখনো কোনো খুঁজ-খবরই না নেয়ার সংবাদে বিস্ময় প্রকাশ করেন তারা। এরকম পৈচাশিক ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের নির্দেশের পরিবর্তে প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক ‘কারো বেডরুম পাহারা দেয়া যাবে না’ উক্তির কঠোর সমালোচনা করে বক্তারা অভিযোগ করেন, এর ফলেই খুনিরা আজও ধরা ছোঁয়ার বাইরে রয়েছে এবং তদন্তকারী সংস্থাগুলো কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। র্যা ব, পুলিশসহ সরকারের অনেকগুলো গোয়েন্দা সংস্থা থাকা সত্ত্বেও চাঞ্চল্যকর সাগর-রুনি হত্যাকান্ডসহ আলোচিত অসংখ্য খুন ও গুমের কোনো রহস্য উন্মোচিত নানা হওয়ায় উপস্থিত সবাই চরম বিস্ময় ও হতাশা প্রকাশ করেন।
সভায় বক্তারা সাগর-রুনিসহ বিগত দিনসমূহে সংঘটিত সাংবাদিক খুন এবং বিভিন্ন সময়ে ঘটে যাওয়া সাংবাদিক নির্যাতনের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের দাবী পূণর্ব্যক্ত করেন।
বহুল আলোচিত সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যাকান্ডসহ বিগত দিনসমূহে সংঘটিত সকল সাংবাদিক হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত খুনীদের খুঁজে বের করে বিচার সম্পন্ন এবং সাংবাদিকদের উপর নির্যাতন বন্ধের দাবীতে বাংলাদেশের চলমান সাংবাদিক আন্দোলনের সাথে সংহতি প্রকাশ করে এই সভার আয়োজন করে লন্ডন থেকে প্রকাশিত নারী এশিয়ান ম্যাগাজিন পরিবার। ১৪ জানুয়ারী, সোমবার বিকেলে পূর্বলন্ডনের মন্টিফিউরি সেন্টারে ম্যাগাজিনের সম্পাদক কবি শাহনাজ সুলতানার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ড. হাসনাত হোসাইন এমবিই। ড. হাসনাত তার বক্তব্যে বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক ও সামাজিক অবক্ষয়সহ নানা অসঙ্গতি তুলে ধরে বলেন, সমাজের অগ্রসর অংশ হিসেবে নিজেদের ক্ষুরধার লিখনীর মাধ্যমে এসব অবক্ষয় ও অসঙ্গিতর বিরুদ্ধে সাংবাদিক সমাজকেই সোচ্চার ভূমিকা পালন করতে হবে, রুখে দাঁড়াতে হবে। সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যাকান্ডসহ এ যাবত সংঘটিত খুন, গুমের সঠিক তদন্ত এবং সুবিচার নিশ্চিত করতে সবধরনের মতানৈক্যের উর্দ্ধে থেকে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকারও আহবান জানান তিনি।
নারী এশিয়ান ম্যাগাজিনের সম্পাদক কবি শাহনাজ সুলতানা তাদের আহবানে সাড়া দিয়ে উপস্থিত হওয়ার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, সাংবাদিক খুন ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের সাংবাদিকদের চলমান আন্দোলনের কার্যক্রম ও গতিবিধির আলোকে পরবর্তী কর্মসূচী ঠিক করা হবে। আগামী দিনের সব কর্মসূচীতেও সবার স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের অনুরোধ জানান তিনি।
অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন Ñ সাংবাদিক নজরুল ইসলাম বাসন, সাপ্তাহিক সুরমা সম্পাদক সৈয়দ মনসুর উদ্দিন, সাপ্তাহিক নতুন দিনের নির্বাহী সম্পাদক তাইছির মাহমুদ, সাপ্তাহিক সুরমার সাহিত্য সম্পাদক কবি আহমদ ময়েজ, সাংবাদিক হামিদ মোহাম্মদ, সাংবাদিক শাহ ইউসুফ, ইউকে বিডি নিউজ সম্পাদক সোয়েব কবির, রাজিব হাসান, সমাজসেবী আরশ আলী, কবি শাহ সুহেল, লতিফা চৌধুরী, ফারজানা কায়সার সোমা, আফরোজা শফিক, সাংবাদিক রাজীব হাসান, আবদুল কাইয়ূম প্রমুখ।
ঊল্লেখ্য, গত বছরের ১০ ফেব্রুয়ারী রাতে এই সাংবাদিক দম্পতি মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক সাগর সরওয়ার ও এটিএন বাংলার সিনিয়র রিপোর্টার মেহেরুন রুনি রাজধানী ঢাকার পশ্চিম রাজারবাজারে অবস্থিত তাদের ভাড়া বাসায় নির্মমভাবে খুন হন। চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকান্ডে দেশে-বিদেশে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে।
নিহতদের পরিবার ও সাংবাদিক সংগঠনগুলো সরকারের কাছে প্রকৃত হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবী জানিয়ে আসলেও আজ পর্যন্ত সরকার এর কোনো রহস্যই উদঘাটন করতে সক্ষম হয়নি।
সংবাদ প্রেরক
আবদুল কাইয়ূম
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।