বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট বিএনএফ এর কো-চেয়ারম্যান অধ্যাপিকা জাহানারা বেগম বলেছেন, ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা বিএনএফ থেকে বহিস্কৃত হয়েছেন। তিনি দল বিলুপ্তি ঘোষণার কোনো যোগ্যতা রাখেন না। আর নির্বাচন কমিশনেও দলের নিবন্ধনের আবেদনে তার নাম উল্লেখ করা হয়নি। সেখানে দলের আহবায়ক হিসাবে আবুল কালাম আজাদ ও কো-কনভেনার হিসাবে আমার নাম উল্লেখ করা হয়েছে। সুতরাং এ নিয়ে তার বক্তব্যে কিছু আসে যায় না।
বিএনএফ বিলুপ্ত ঘোষণা নিয়ে বিকালে নাজমুল হুদার সংবাদ সম্মেলনের পর বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন অধ্যাপিকা জাহানারা। বিএনপিতে তিনি সর্বশেষ ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন। দুবার সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী এবং তত্কালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার প্রাথমিক শিক্ষা ও গণশিক্ষা বিষয়ক উপদেষ্টা ছিলেন। রাজবাড়ী-১ আসন থেকে তিনি দুইবার সংসদ সদস্যও নির্বাচিত হন। বিএনপির রাজনীতি ছেড়ে এলডিপিতে মহাসচিবের দায়িত্বেও ছিলেন বেশ কিছুদিন।
এরপর বিএনপির সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার নাজমুল হুদার সঙ্গে বিএনএফ-এ যোগ দেন। অবশ্য তিনি বলছেন, নাজমুল হুদা নয়, আরিফ মঈনুদ্দিনের ডাকেই তার বিএনএফএ যোগদান করা। সাবেক এই প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেছি। নিবন্ধন বিধিমালার সব শর্ত পূরণ করা হয়েছে। আশা করি শীঘ্রই আমরা নিবন্ধন পাবো।
এরপর আমরা প্রতীকের জন্য আবেদন করবো। তবে আমাদের প্রতীকের প্রাথমিক পছন্দ গমের শীষ। এ নিয়ে বিএনপি যে বিতর্ক সৃষ্টি করছে তার কোনো যৌক্তিকতাও নেই।
নাজমুল হুদার সমালোচনা করে তিনি বলেন, এই ব্যক্তিটি একেক সময় একেক রকমের কথাবার্তা বলে নিজেই বিপদে পড়েছেন। বিএনপি থেকে বিএনএফ এ এসে আবার বিএনপিতে ফিরে গেছেন।
তাকে বিএনএফ থেকে বহিস্কারও করা হয়েছে। সুতরাং এখন তিনি বিএনএফ নিয়ে কথা বলার কোনো যোগ্যতা রাখেন না।
দল নিবন্ধিত হওয়ার পরপরই বিএনপির বর্তমান ও সাবেক অনেক নেতাই বিএনএফ এ যোগ দেবেন এমন প্রত্যাশার কথা জানান জাহানারা বেগম। তার ভাষায়, বিএনপির অনেক নেতাই তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। নিবন্ধন হলেই বর্তমান ও সাবেক অনেক মন্ত্রী এমপি বিএনএফ এ যোগ দেবে।
এছাড়া আওয়ামী লীগসহ অন্যান্য দল থেকেও নেতারা বিএনএফ এ যোগদান করবে বলে জানান তিনি।
জাহানারা বেগম বলেন, আমরা আগামীতে ৩শ’ আসনে না দিলেও অধিকাংশ আসনেই প্রার্থী দেবো। আশা করি, আমরা জনগণের সহযোগিতা পাবো। প্রার্থী নির্বাচনের ক্ষেত্রে আমরা ক্লীন ইমেজের যোগ্য ও দক্ষ ব্যক্তিকেই গুরুত্ব দেবো। বর্তমান রাজনীতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, রাজনীতি এক ঘোলাটে অবস্থানে রয়েছে।
সবার মধ্যেই এক অজানা আশঙ্কা বিরাজ করছে, আগামীদিনে কী হবে। দুই নেত্রী একসঙ্গে বসলেই কেবল একটি ভালো দিক নির্দেশনা পাওয়া যেতে পারে। কিন্তু এখন প্রতিহিংসার রাজনীতি চলছে। দুই নেত্রী একে অপরের মুখ দেখাও বন্ধ করে দিয়েছেন। এটা গণতন্ত্রের জন্য শুভ লক্ষণ নয়।
১৭ বছর বয়সে ইডেন কলেজে ভর্তি হয়ে ছাত্ররাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন অধ্যাপিকা জাহানারা। ১৯৫৯ সালে তত্কালীন ছাত্র ইউনিয়ন মতিয়া (গ্রুপ)-এর সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন তিনি। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতাধীন গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজে ভর্তি হন। সেখান থেকে এমএসসি পাস করেন। এর মধ্যে বিয়ে করে স্বামীর সঙ্গে সংসার জীবনও শুরু করেন।
‘৭১-এ মুক্তিযুদ্ধের সময় চাকরির সুবাদে স্বামীর সঙ্গে আশুগঞ্জের বিদ্যুেকন্দ্রে ছিলেন তিনি। যুদ্ধ চলাকালীন তিনি পাকিস্তানি হানাদারদের ভয়ে ঢাকায় মালিবাগের বাসায় চলে আসেন।
অধ্যাপিকা জাহানারা বলেন, আশুগঞ্জের বিদ্যুেকন্দ্রে থাকাকালে তিনি অনেক মুক্তিযোদ্ধাকে সাহায্য করেছেন। তার চার ভাই ক্যাপ্টেন ছিলেন। সবাই মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হন।
আজও তাদের লাশ খুঁজে পাওয়া যায়নি। এ জন্য আজও তার বুকে ক্ষত রয়ে গেছে বলে জানান। সেই তাগিদেই তিনি যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তি কামনা করেন।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।