আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বিশ্বজিতের হত্যাকারী ৫ ঘাতকের পরিচয়, গ্রেফতার ২০,স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বললেনঃ ওরা ছাত্রলীগ থেকে বহিস্কৃত

পৃথিবীতে এসেছি, চিহ্ন রেখে যেতে চাই ...... নিরীহ পথচারী বিশ্বজিৎ দাসকে নৃশংসভাবে হত্যা করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কর্মীরাই। মূল হামলাকারী পাঁচজনের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। তাঁরা হলেন—মো. রফিকুল ইসলাম ওরফে শাকিল, মীর মো. নূরে আলম ওরফে লিমন, মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান ওরফে নাহিদ, মো. ইমদাদুল হক ও মো. ওবাইদুল কাদের। এর মধ্যে চাপাতি দিয়ে প্রথমে কুপিয়েছেন শাকিল। বাকিরা রড আর লাঠি দিয়ে পিটিয়েছেন বিশ্বজিৎকে।

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি এফ এম শরিফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেছেন, ঘটনার সঙ্গে জড়িতরা ছাত্রলীগের মিছিল-মিটিংয়ে আসেন, তবে তাঁরা ছাত্রলীগের কর্মী নন। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিশ্বজিতের ওপর হামলাকারী ছাত্রলীগের ওই কর্মীরা দীর্ঘদিন ধরে ক্যাম্পাসে ছিনতাই, মাদক সেবন, টেন্ডারবাজিসহ বিভিন্ন ধরনের অপকর্মের সঙ্গে যুক্ত। এঁদের মধ্যে একাধিক ব্যক্তির বিরুদ্ধে থানায় মামলা আছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও সাময়িক বহিষ্কার করেছিল দুজনকে। আবার দুজনকে ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কার করা হলেও তাঁরা নিয়মিত ছাত্রলীগের মিছিল-মিটিংয়ে অংশ নিতেন।

পাঁচ ঘাতকের পরিচয়: মো. রফিকুল ইসলাম ওরফে শাকিল জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০০৮-০৯ শিক্ষাবর্ষের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ছাত্র। বর্তমানে তিনি ষষ্ঠ সেমিস্টারে অধ্যয়নরত। তাঁর বাবার নাম আনসার আলী। পটুয়াখালী জেলার সদর উপজেলায় তাঁর বাড়ি। ইমদাদুল দর্শন বিভাগ থেকে মাস্টার্স পরীক্ষা দিয়েছেন।

তাঁর বাবার নাম মো. আকরাম আলী। গ্রামের বাড়ি যশোরের শার্শা উপজেলার পাঁচ কায়রায়। ওবাইদুল কাদের মনোবিজ্ঞান বিভাগের ২০০৬-০৭ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র। বর্তমানে তিনি মাস্টার্সের ছাত্র। তাঁর বাবার নাম মো. মহিউদ্দিন।

গ্রামের বাড়ি নোয়াখালীর হাতিয়ার চর কৈলাশে। মীর মো. নূরে আলম ওরফে লিমন ২০০৫-০৬ শিক্ষাবর্ষের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র। বর্তমানে তিনি মাস্টার্সে অধ্যয়নরত। তাঁর বাবার নাম মীর মো. নূরুল ইসলাম। তাঁর গ্রামের বাড়ি রংপুরের পীরগাছার শুলিপাড়ায়।

মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান ওরফে নাহিদ বাংলা বিভাগের ছাত্র। গত বছর মাস্টার্স পরীক্ষা দিয়েছেন। তাঁর বাবার নাম আবদুর রহমান। ভোলার দৌলতখানের দক্ষিণ জয়নগরে তাঁর গ্রামের বাড়ি। সূত্র জানায়, ঢাকার বিভিন্ন এলাকার মেসে তাঁরা থাকেন।

ঘাতকদের যত অপকর্ম: ২০০৯ সালের ৩০ আগস্ট এক ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করার অভিযোগে শাকিলসহ ছাত্রলীগের চার কর্মীকে গ্রেপ্তার করে দ্রুত বিচার আইনে কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা করা হয়। এর আগে ওই বছরের মে মাসে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে উভয় পক্ষের চারজন আহত হন। এই ঘটনায় শাকিলসহ ছাত্রলীগের তিন কর্মীকে আসামি করে কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা হয়েছিল। একই বছরের ৯ এপ্রিল ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় শাকিল, ইমদাদুলসহ ছাত্রলীগের ৩৮ কর্মীকে বহিষ্কার করেন ছাত্রসংগঠনটির সাবেক সভাপতি কামরুল হাসান।

এসব সংবাদ প্রথম আলোতে ছাপা হয়েছিল। এ ছাড়া ২০০৯ সালের মে মাসে পরীক্ষা চলাকালে এক শিক্ষককে লাঞ্ছিত করার অভিযোগে লিমনকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আর চলতি বছরের ১৬ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলের সামনে প্রতিপক্ষের এক কর্মীকে ছুরিকাঘাত করেন নাহিদসহ ছাত্রলীগের বেশ কয়েকজন কর্মী। এ ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় তাঁর বিরুদ্ধে মামলা হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা যা বললেন: বিশ্বজিৎ হত্যার প্রত্যক্ষদর্শী অনেকেই।

এর মধ্যে গতকাল সোমবার কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আগের দিন অবরোধের সময় সকাল নয়টার ঠিক আগে ঢাকা জজকোর্ট এলাকা থেকে বিএনপি-জামায়াত-সমর্থিত আইনজীবীরা একটি মিছিল বের করলে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা ধাওয়া করেন। এর কয়েক মিনিট পর ভিক্টোরিয়া পার্কসংলগ্ন একটি তেলের পাম্পের কাছে দুটি ও শাঁখারীবাজারের দিকে একটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটে। একই সময় ঋষিকেশ দাস লেনের বাসা থেকে বিশ্বজিৎ দাস শাঁখারীবাজারে নিজের টেইলারিংয়ের দোকানে যাচ্ছিলেন। ককটেল বিস্ফোরণের সময় আরও অনেকের সঙ্গে তিনি ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পেট্রলপাম্প-সংলগ্ন একটি ভবনের দোতলায় ইনটেনসিভ ডেন্টাল কেয়ার নামের বেসরকারি ক্লিনিকে আশ্রয় নেন। পিছু পিছু ছাত্রলীগের কয়েকজন কর্মীও যান সেখানে।

ওপরে উঠেই বিশ্বজিৎকে চাপাতি দিয়ে কোপাতে থাকেন শাকিল। তাঁর সঙ্গে ছিলেন ওবাইদুল কাদের। প্রাণ বাঁচাতে দৌড়ে নিচে চলে এলে সেখানে বিশ্বজিৎকে ছাত্রলীগের কর্মী নূরে আলম, মাহফুজুর রহমান, ইমদাদুল হকসহ ১০-১২ জন রড-লাঠি দিয়ে বেধড়ক পেটান। পথচারীদের কেউ কেউ বিশ্বজিৎকে পাশের ন্যাশনাল হাসপাতালে নেওয়ার চেষ্টা করলে তাতেও বাধা দেন ছাত্রলীগের কর্মীরা। এরপর প্রাণ বাঁচাতে আবার দৌড়ে বিশ্বজিৎ শাঁখারীবাজারের একটি গলিতে গিয়েই ঢলে পড়ে যান।

সেখান থেকে বিশ্বজিৎকে মিটফোর্ড হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কিছুক্ষণ পর মারা যান বিশ্বজিৎ। প্রত্যক্ষদর্শী ও বিশ্বজিতের পরিবারের অভিযোগ, হাসপাতালের চিকিৎসকেরা সময়মতো রক্তক্ষরণ কমিয়ে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেননি। ইনটেনসিভ ডেন্টালের কর্মচারী ১৩ বছর বয়সী সাইফুল ইসলাম। গত রোববার সে সকালে এসে দরজা-জানালা খুলে ক্লিনিকের দুটি কক্ষ পরিষ্কার করে।

সাইফুল প্রথম আলোকে বলে, ‘হঠাৎ দেখি গন্ডগোল। আমি ভয় পেয়ে দ্রুত জানালা বন্ধ করে দৌড়ে ভেতরের কক্ষে চলে যাই। তারপর চিৎকার শুনি। ’ সাইফুল জানায়, ভেতরের কক্ষের দরজার ফাঁক দিয়ে দেখতে চাইলে এক যুবক তাকে বাধা দিয়ে বলে, ‘তোমার দেখার দরকার নাই। ভেতরে যাও।

’ গতকাল বিকেলে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, সিঁড়িতে ছোপ ছোপ রক্তের দাগ লেগে আছে। তবে ঘটনার পর পরই ক্লিনিকের ভেতরে ও বাইরের রক্ত পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলা হয়। এমনটাই জানালেন ক্লিনিকটির অন্য দুই কর্মচারী মো. হাবিব ও আবদুল হক। একাধিক সূত্র জানায়, রোববার সকাল থেকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ অবরোধের বিরুদ্ধে একাধিকবার মিছিল করে। ছাত্রলীগের এই পাঁচ ঘাতক ওই সব মিছিলে অংশ নেন।

এর মধ্যে মাহফুজুর রহমান মিছিলে সামনের সারি থেকে নেতৃত্ব দেন। এ ছাড়া বিশ্বজিতের ওপর হামলার পর ক্যাম্পাসের ভাস্কর্য চত্বরের সামনে কেক কেটে ছাত্রলীগের সভাপতির জন্মদিন উদ্যাপন করা হয়। সেই অনুষ্ঠানের পেছনে সারিতে ছিলেন ওই মাহফুজুর। এসব তথ্যপ্রমাণ প্রথম আলোর কাছে আছে। ক্যাম্পাস থমথমে: গতকাল সকাল থেকেই ক্যাম্পাসে থমথমে পরিবেশ ছিল।

ছাত্র-শিক্ষক থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এ ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তবে তখন ক্যাম্পাস ছাত্রলীগশূন্য ছিল। দুপুরের পর থেকে ছাত্রলীগের সভাপতিসহ বেশ কয়েকজন কর্মীকে শহীদ মিনার চত্বরে আড্ডা দিতে দেখা যায়। তবে বিশ্বজিতের মূল ঘাতকদের কাউকেই গতকাল সারা দিন ক্যাম্পাসে দেখা যায়নি। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে গত রোববারের ঘটনায় কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না, জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অশোক কুমার সাহা জানান, প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।

এ বিষয়ে কোনো আলোচনা বা বৈঠকও হয়নি। তবে কেউ অভিযোগ করলে তখন ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের প্রতিবাদ: গতকাল প্রথম আলোতে প্রকাশিত ‘ছাত্রলীগের রোষে প্রাণ গেল পথচারী বিশ্বজিতের’ সংবাদের প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটি। কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি এইচ এম বদিউজ্জামান ও সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকী নাজমুল আলমের পক্ষে দপ্তর সম্পাদক শেখ রাসেল এক প্রতিবাদলিপি পাঠান। এতে বলা হয়, প্রথম আলোতে প্রকাশিত সংবাদটি সঠিক ও তথ্যনির্ভর নয়।

প্রতিবাদলিপিতে দাবি করা হয়, গত রোববার বিশ্বজিৎ নামের এক পথচারীকে নির্মম আঘাতের মাধ্যমে হত্যা করে জামায়াত-শিবির চক্র। অথচ এই হত্যার দায় বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ঘাড়ে চাপানোর অপচেষ্টা চালানো হয়েছে। এতে আরও বলা হয়, যাঁদের ছবি প্রথম আলোতে ছাপা হয়েছে, তাঁরা ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত নন। এমনকি তাঁরা ছাত্রলীগের কর্মীও নন। একই সঙ্গে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির পক্ষ থেকে প্রতিবাদলিপিতে যাঁদের ছবিতে দেখা গেছে তাঁদের সঠিকভাবে চিহ্নিত করে বিশ্বজিতের হত্যার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করার আহ্বান জানানো হয়েছে।

নিন্দা ও শোক: ছাত্রলীগের কর্মীদের হাতে বিশ্বজিৎ হত্যার ঘটনায় আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) তীব্র নিন্দা ও শোক জানিয়েছে। আসকের ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী পরিচালক মো. নূর খান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে হামলাকারীদের দ্রুত দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করা হয়। একই দাবি জানিয়েছে বৃহত্তর ময়মনসিংহ ছাত্রছাত্রী সংঘ ও শরীয়তপুর জেলা কল্যাণ সোসাইটি। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী বললেন, ওরা তাঁরা ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কৃত, পুলিশ গ্রেফতার করেছে ২০ জনকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর বলেছেন, বিশ্বজিত্ দাস হত্যার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত আটজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ছাড়া এই হত্যার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করা হয়েছে।

তবে গ্রেপ্তার হওয়া ও চিহ্নিত ব্যক্তিদের নাম-পরিচয় প্রকাশ করেননি মন্ত্রী। মঙ্গলবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ডিজিটাল বাংলাদেশ ফোরাম আয়োজিত এক আলোচনা সভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ তথ্য জানান। তবে ডিএমপির সহকারী কমিশনার (মিডিয়া) রবিউল ইসলাম প্রথম আলো ডটকমকে বলেন, বিশ্বজিত্ দাস হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে এখন পর্যন্ত ২০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের পরিচয় জানাননি তিনি। মহীউদ্দীন খান আলমগীর বলেন, বিশ্বজিত্ হত্যার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের বাইরে বাকিদেরও গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের সম্পর্কে তথ্য পাওয়া গেছে। মন্ত্রী দাবি করেন, বিশ্বজিত্ হত্যায় জড়িত ব্যক্তিদের কেউই ছাত্রলীগের সঙ্গে যুক্ত নন। যাঁরা আছেন, তাঁরা ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কৃত। মহীউদ্দীন খান আলমগীর দাবি করেন, বিশ্বজিত্ ছাত্রলীগের তথাকথিত কর্মী। গত রোববার ১৮ দলীয় জোটের ডাকা অবরোধের সময় সকাল নয়টার ঠিক আগে ঢাকা জজকোর্ট এলাকা থেকে বিএনপি-জামায়াত-সমর্থিত আইনজীবীরা একটি মিছিল বের করলে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা ধাওয়া করেন।

এর কয়েক মিনিট পর ভিক্টোরিয়া পার্কসংলগ্ন একটি তেলের পাম্পের কাছে দুটি ও শাঁখারীবাজারের দিকে একটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটে। একই সময় ঋষিকেশ দাস লেনের বাসা থেকে বিশ্বজিত্ দাস শাঁখারীবাজারে নিজের দরজির দোকানে যাচ্ছিলেন। ককটেল বিস্ফোরণের সময় আরও অনেকের সঙ্গে তিনি ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পেট্রলপাম্প-সংলগ্ন একটি ভবনের দোতলায় ইনটেনসিভ ডেন্টাল কেয়ার নামের বেসরকারি ক্লিনিকে আশ্রয় নেন। পিছু পিছু ছাত্রলীগের কয়েকজন কর্মীও যান সেখানে। ওপরে উঠেই বিশ্বজিেক চাপাতি দিয়ে কোপাতে থাকেন ছাত্রলীগকর্মী শাকিল।

তাঁর সঙ্গে ছিলেন ওবাইদুল কাদের। প্রাণ বাঁচাতে দৌড়ে নিচে চলে এলে সেখানে বিশ্বজিেক ছাত্রলীগের কর্মী নূরে আলম, মাহফুজুর রহমান, ইমদাদুল হকসহ ১০-১২ জন রড-লাঠি দিয়ে বেধড়ক পেটান। পথচারীদের কেউ কেউ বিশ্বজিেক পাশের ন্যাশনাল হাসপাতালে নেওয়ার চেষ্টা করলে এতেও বাধা দেন ছাত্রলীগের কর্মীরা। এরপর প্রাণ বাঁচাতে আবার দৌড়ে বিশ্বজিত্ শাঁখারীবাজারের একটি গলিতে গিয়েই ঢলে পড়ে যান। পরে বিশ্বজিতকে মিটফোর্ড হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

সেখানে কিছুক্ষণ পর মারা যান বিশ্বজিত্। রিপোর্টার্স ইউনিটির অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, গতকাল জার্মান নাগরিক এক স্থপতির গাড়িতে বিএনপি ও জামায়াতের লোকজন হামলা করেছে। জার্মান রাষ্ট্রদূত খালেদা জিয়ার কাছে এ বিষয়ে অভিযোগ করেছেন। কোনো হামলাকারীকেই ছাড় দেওয়া হবে না। বিদেশে পালিয়ে গেলেও তাদের বিচারের আওতায় আনা হবে লিঙ্কঃ এখানে।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১২ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।