আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নিউইয়র্কে প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গীরা ব্যস্ত শপিংয়ে

নিউইয়র্কের আকাশে শেষ সেপ্টেম্বরের ঝকঝকে রোদ। হেমন্তের চমৎকার আবহাওয়ায় ঘুরে বেড়াচ্ছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সফররত প্রতিনিধিদল। জাতিসংঘ সদর দপ্তরে শেখ হাসিনা গতকাল বুধবার সকালের দিকে কয়েকটি সভায় যোগ দেন। তবে  দেশ থেকে তাঁর সঙ্গে আসা ১৪০ জনের প্রতিনিধিদলের বেশির ভাগ সদস্যই ব্যস্ততা ছিলেন অন্যত্র। কেউ ছিলেন শপিংয়ে ব্যস্ত, কেউ আত্মীয়-পরিজন বা পরিচিত প্রবাসীদের সঙ্গে ঘুরে বেরিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী আগামীকাল শুক্রবার বিকেলে সাধারণ পরিষদে তাঁর বক্তব্য দেবেন।

জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি এম এ মোমেন জানান, প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের সময় মাত্র আটজন প্রতিনিধি সাধারণ পরিষদে তাঁর সঙ্গে ঢুকতে পারবেন। বাকি সদস্যরা কী করবেন, তা জানা যায়নি। জাতিসংঘ সদর দপ্তরে বিভিন্ন এজেন্ডা নিয়ে বিরামহীন সভা চলছে। প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গীদের মধ্যে মাত্র দু-একজনকে দেখা গেছে গুরুত্বহীনভাবে এসব সভায় যোগ দিতে।

গতকাল বিকেলের বেশির ভাগ সময়ই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গ্রান্ড হায়াত হোটেলেই কাটিয়েছেন। রাত আটটা পর্যন্ত প্রবাসী মুক্তিযোদ্ধাসহ আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের লোকজনের সঙ্গে সাক্ষাত্ করেছেন। আজ বৃহস্পতিবারও দিনের বেশির ভাগ সময়ই প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন লোকজনের সঙ্গে সাক্ষাত্ করবেন বলে জানা গেছে।

প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হয়ে আসা সাংবাদিকেরা একাকী ঘুরে বেড়াচ্ছেন। সংবাদ হওয়ার মতো গুরুত্বপূর্ণ কোনো কর্মসূচি না থাকায় প্রবাসী সহকর্মীদের সঙ্গে সাংবাদিকেরা জ্যাকসন হাইটস বা এস্টোরিয়ায় মধ্যরাত পর্যন্ত আড্ডা দিচ্ছেন।

গত মঙ্গলবার বা গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত গ্রান্ড হায়াত হোটেলে গিয়ে তথ্য সংগ্রহের জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিবকে পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।

প্রধানমন্ত্রীর বহরের সঙ্গে ঢাকা থেকে আসা একজন সংবাদকর্মী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, রাষ্ট্রীয় অর্থে এমন তুঘলকি ভ্রমণে তিনি নিজেই অপরাধবোধে ভুগছেন। কোথাও কোনো কাজ নেই, নানা পর্যায়ের দলীয় নেতা, ব্যবসায়ী, ছাত্রলীগ, শ্রমিক লীগ, কৃষক লীগের নেতা, আমলা, আমলা-পত্নী, মহাজোটের ছোট সব দলের ‘বড় বড়’ সব নেতা এসেছেন। মন্ত্রী না এলেও এসেছেন মন্ত্রী-পত্নী, এসেছেন সাবেক ছাত্রনেত্রী। কী কাজে নিউইয়র্কে এসেছেন, কেউ কিছু বলতে পারছেন না।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ম্যানহাটনের প্রবাসী এক ক্যাবচালক জানান, ‘আমার এলাকার এমপি এসেছেন। যাওয়ার এখনো এক সপ্তাহ বাকি। সুটকেস ইতিমধ্যে ভারী হয়ে গেছে। ’ পাশে থেকে আরেক প্রবাসী আলম জানালেন, ‘খুশি হয়ে সুটকেইসটাও আমি কিনে দিয়েছি, নেতার জন্য। ’

সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দেওয়ার জন্য জাতিসংঘ সদর দপ্তর-সংলগ্ন বড় হোটেলগুলোতে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধানেরা অবস্থান করছেন।

তবে কোনো হোটেলের সামনেই জটলা নেই। শুধু গ্রান্ড হায়াত হোটেল (১৪০ জন প্রতিনিধিদলকে নিয়ে অবস্থান করছেন প্রধানমন্ত্রী) সংলগ্ন ফুটপাতে দিনরাত জটলা লেগেই আছে। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আসা লোকজনের আতিথেয়তার জন্য প্রবাসী আত্মীয়স্বজন, এলাকার লোকজন, পরিচিতজনের নিত্য আনাগোনা। কাজকর্ম রেখেই দলীয় লোকজন ঘণ্টার পর ঘণ্টা ঠায় দাঁড়িয়ে আছেন ফুটপাতে। কিছুক্ষণ পরপরই নিরাপত্তারক্ষীরা তাঁদের জটলা না করার জন্য নির্দেশ  দিচ্ছেন।

কিন্তু কে শোনে কারা কথা।   দেখা গেছে, ৪২ স্ট্রিটের প্রশস্ত সড়কপথে দ্রুতবেগে যাওয়া গাড়ি থেকে উঁকি দিয়ে বিদেশিরা ওই অস্বাভাবিক জটলা দেখছেন। ব্যস্ত ম্যানহাটনের পথচারীরা অনেকেই ওই জটলার কারণ জানতে চাচ্ছেন। তাঁদের কয়েকজনের প্রশ্নের উত্তরে জানাতে হলো, ‘বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বিশাল সফরসঙ্গী নিয়ে এসেছেন তোমাদের এ আলো ঝলমলে নগরীতে। ’



সোর্স: http://www.prothom-alo.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.