ক্রীড়া প্রতিবেদক
মাশরাফি বিন মর্তুজা নেই। নেই দিলশান তিলকরত্নে, মুহাম্মদ নবী। তাদের অভাব পূরণ করতে শ্রীলঙ্কা থেকে অজন্থা মেন্ডিস, আশেলা গুণারত্নেকে উড়িয়ে আনে মোহামেডান। কিন্তু তিন তারকা ক্রিকেটারের অভাব পূরণ করতে পারেননি 'রহস্যময়' স্পিনার মেন্ডিস ও গুণারত্নে। উল্টা লজ্জা পেয়েছেন।
গতকাল মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে ঐতিহ্যবাহী দলটিকে লজ্জা দিয়েছে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব ২৩৯ রানের আকাশসম ব্যবধানে হারিয়ে। প্রথম তিন ম্যাচে টানা জয় পাওয়া মতিঝিলপাড়ার দলটিকে গতকাল চমকে দিয়েছেন আরেক আফগান, গুলবাদিন নাইব। তার ঝড়ো গতির ব্যাটিংয়েই এলোমেলো হয়ে পড়ে মোহামেডানের সব রণকৌশল। চার ম্যাচে মোহামেডানের এটা প্রথম হার এবং শেখ জামালের সমান ম্যাচে তৃতীয় জয়।
কখনো আফগানিস্তানের নবীর টর্নেডো ব্যাটিং, কখনো দিলশানের অলরাউন্ডিং পারফরম্যান্স, কখনো মাশরাফির দুর্দান্ত বোলিংয়ে প্রথম তিন ম্যাচে প্রতিপক্ষকে দাঁড়াতেই দেয়নি মোহামেডান।
কিন্তু মিরপুরে শেখ জামালের কৌশলের কাছে গতকাল দাঁড়াতেই পারেনি মোহামেডান। বিশেষ করে গুলবাদিন নাইবের কাছে এমনভাবে হেনস্তা হয়েছে মোহামেডান, যা দূর অতীতে দেখা যায়নি। টস হেরে শেখ জামালকে ব্যাটিংয়ে আমন্ত্রণ জানায় মতিঝিলপাড়ার দলটি। দুই ওপেনার জহুরুল ইসলাম অমি ও জুনায়েদ সিদ্দিকী ৬৭ রানের শক্ত ভিত দেন। এর ওপর দাঁড়িয়েই ৫০ ওভারে ৬ উইকেটে ৩০৬ রান করে শেখ জামাল।
৫ নম্বরে ব্যাট করতে নেমে গুলবাদিন নান্দনিক ব্যাটিং উপহার দেন। মাত্র ৫৪ বলে ৯৩ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন, যাতে ছিল ৬টি চার ও ৭টি বিশাল ছক্কা। এর আগে আফগানিস্তানের হয়ে ঢাকার মাঠ কাঁপিয়েছেন মুহাম্মদ নবী ও মুহাম্মদ শেহজাদ। প্রাইম দোলেশ্বরের বিপক্ষে নবী ৯০ বলে খেলেছিলেন ১৪৬ রানের ঝড়ো ইনিংস। জাতীয় দলের খেলা থাকায় নবী আফগানিস্তান চলে গেছেন।
শেহজাদ সিসিএসের বিপক্ষে ৮৩ রানের ইনিংস খেলে জয় উপহার দিয়েছিলেন শেখ জামালকে। তিনিও চলে গেছেন আফগানিস্তানে। এবার মাঠ মাতালেন গুলবাদিন। গতকাল যে ৭টি ছক্কা মারেন, এর ৪টি ছিল অজন্থার বলে। এর মধ্যে ইনিংসের ৪৭ এবং অজন্থার নবম ওভারে গুলবাদিন ২ ছক্কায় তুলে নেন ২০ রান।
মুশফিকও আক্রমণাত্দক ব্যাটিং করেন। ৩৬ বলে করেন ৫০ রান। মুশফিক ও গুলবাদিন চতুর্থ উইকেট জুটিতে ৬.৪ ওভারে যোগ করেন ৬২ রান। নামের প্রতি সুবিচার না করলেও ৩ উইকেট নেন অজন্থা মেন্ডিস।
ওভারপ্রতি ৬ রানের ওপর স্ট্রাইক রেটে খেলতে নেমেই বিপর্যয়ে পড়ে মোহামেডান।
প্রথম ওভারে লঙ্কান ওপেনার ওপর থারাঙ্গাকে হারিয়ে সেই বিপর্যয়ে পড়ে মোহামেডান, তা শেষ হয় ২২.৪ ওভারে মুরাদ খানের সাজঘরে ফেরার পর। এ সময়ের মধ্যে স্কোর বোর্ডে জমা হয় মাত্র ৬৭ রান। এবারের আসরের দ্বিতীয় সর্বনিম্ন স্কোর। এর আগে আবাহনীর বিপক্ষে সিসিএস মাত্র ৩৫ রানে গুটিয়ে গিয়েছিল। ওই ম্যাচ আবাহনী জিতেছিল ২১২ রানে।
গত সিসিএসের রেকর্ড অক্ষত থাকলেও ভেঙে যায় সর্বোচ্চ ব্যবধানের হার। মোহামেডানের পক্ষে সর্বোচ্চ তিনজন বাটসম্যান দুই অঙ্কের রান করেন। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ২২ রান করেন আবাহনী ম্যাচের নায়ক শামসুর রহমান শুভ। এ ছাড়া আশেলা গুণারত্নে ১৪ ও দেলোয়ার হোসেন ১২ রান করেন। শেখ জামালের পক্ষে এল্টন চিগুম্বুরা ১৩ রানে নেন ৪ উইকেট।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
শেখ জামাল ধানমন্ডি : ৩০৬/৭, ৫০ ওভার (জহুরুল ইসলাম অমি ৩৭, জুনায়েদ সিদ্দিকী ৪৭, দিলশান মুনাভিরা ৫১, মুশফিকুর রহিম ৫০, গুলবাদিন নাইব ৯৩*। অজন্থা মেন্ডিস ৩/৫৫)।
মোহামেডান : ৬৭/১০, ২২.৪ ওভার (শামসুর রহমান শুভ ২২, আশেলা গুণারত্নে ১৪, দেলোয়ার হোসেন ১২*। এল্টন চিগুম্বুরা ৪/১৩, ইলিয়াস সানি ২/৪)।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।