বিচারকের এজলাস। শূন্য কাঠগড়া। বিচারকক্ষে উপচে পড়া ভিড়। কেউ একজন হাঁক দিলেন—‘আসামি লিওনেল মেসি হাজির!’ গুটি গুটি পায়ে কাঠগড়ায় গিয়ে উঠলেন এই গ্রহের সবচেয়ে প্রতিভাবান ফুটবলারটি!
না, এতটা নাটকীয়তা হয়তো হয়নি। তবে একদিন আদালতের চৌহদ্দিতে পা দেবেন, এটাও নিশ্চয়ই মেসির জন্য অভাবিত ছিল।
সে কাজটিই করতে হলো বার্সেলোনার তারকাকে। কর ফাঁকির অভিযোগের জবাব দিতে আজ স্পেনের একটি আদালতে হাজিরা দিতে হয়েছে তাঁকে। হাজিরা দিয়েছেন মেসির বাবা হোর্হে মেসিও। দুজনই জেনে-বুঝে কোনো ভুল করার কথা অস্বীকার করেছেন।
বিশ্বের বাঘা বাঘা সব ডিফেন্ডারকে ফাঁকি দিতে পারলেও দুঁদে কর কর্মকর্তাদের ফাঁকি দেওয়া মেসির জন্য সত্যিই ছিল কঠিন।
স্পেনের সেই দুর্ধর্ষ কর বিভাগ খুঁজে বের করে ফেলে, ২০০৬ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত আয়কর রিটার্নে অসম্পূর্ণ তথ্য দিয়ে কর ফাঁকি দিয়েছেন মেসি এবং তাঁর বাবা। যে করের পরিমাণ ৪০ লাখ ইউরো!
মেসি অবশ্য দাবি করেন, করের হিসাব-নিকাশ তিনি কিছুই বোঝেন না। যা হিসাব করার তাঁর আইনজীবীরাই করে দেন। গত জুলাইয়ে মেসি বলেছিলেন, ‘এই বিষয়গুলোর দেখভাল তো আর আমি করি না, আমার বাবাও করেন না। এ জন্য আমাদের আইনজীবীরা আছেন, টাকা-পয়সার হিসাব রাখার জন্য কর্মকর্তারা আছেন।
তারাই সব দেখেন। আমরা তাঁদের বিশ্বাস করি। আশা করি, এর সমাধান হয়ে যাবে। সত্যিটা হলো, এ সম্পর্কে সামান্যতম ধারণাও আমার ছিল না। ’
বকেয়া এই করের ‘সংশোধিত পরিশোধ’ হিসেবে ৫০ লাখ ইউরোও জমা দিয়ে দেন তিনি।
বকেয়া করের সুদ হিসাবে দিতে হয় এই বাড়তি ১০ লাখ ইউরো।
তবে তাতেও রেহাই মেলেনি। আজ বার্সেলোনার যে শহরে মেসি থাকেন, সেই গাভার একটি আদালতে মেসিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। বিচার কাজটি রুদ্ধদ্বার ছিল বলে সেখানে কী হয়েছে, সে সম্পর্কে সাংবাদিকেরা বিস্তারিত কিছু জানতে পারেননি। তবে আদালতে ঢোকার সময় মেসি ছিলেন হাস্যোজ্জ্বল।
নির্ভার দেখাচ্ছিল তাঁকে। যেহেতু বকেয়া কর সব পরিশোধ করেছেন, তাই মামলা চলবে, নাকি এখানেই এর মীমাংসা হবে, সেটাই সিদ্ধান্ত নেবেন আদালত।
কাতালুনিয়ার কর অপরাধ দপ্তরের আইনজীবীদের দাবি, কর ফাঁকি দিতে মেসির আইনজীবীরা আইনের ফাঁকফোকর ব্যবহার করেছেন। উরুগুয়ে, বেলিজ, সুইজারল্যান্ড এবং যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ঢাল ব্যবহার করে ছবি স্বত্বের বিনিময়ে পাওয়া বিরাট অঙ্কের টাকা থেকে কর পরিশোধ তাঁরা করেননি স্পেনের কর বিভাগের কাছে। এই আয় এসেছে বাঙ্কো সাবাদেল, ডানোন, অ্যাডিডাস, পেপসি-কোলা, প্রোক্টর অ্যান্ড গ্যাম্বল এবং কুয়েত ফুড কোম্পানির সঙ্গে চুক্তির মাধ্যমে।
বার্সেলোনার হয়ে খেলার বিনিময়ে মেসি বার্ষিক বেতন হিসেবে পান ১ কোটি ৩৫ লাখ পাউন্ড। এ ছাড়াও বিশাল অঙ্কের টাকা তিনি আয় করে থাকেন বিভিন্ন পণ্যের দূত হিসেবে কাজ করে।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।