পরিদর্শকেরা অনিরাপদ ঘোষণার পর সম্প্রতি রাজধানীর অদূরে সাভারের লিবার্টি ফ্যাশনস ওয়্যার নামের পোশাক কারখানাটি বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু বর্তমানে পাঁচ হাজার শ্রমিকের ওই কর্মস্থলটি নিরাপদ বলে দাবি করছেন এটির মালিক।
গতকাল বৃহস্পতিবার যুক্তরাজ্যের দৈনিক ‘দ্য গার্ডিয়ান’-এর এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রতিষ্ঠানটির মালিক ভবন মেরামতে অসম্মত হওয়ায় ইতিমধ্যেই পশ্চিমা খুচরা পোশাক ক্রেতাপ্রতিষ্ঠান টেসকো, ডেবেনহামস ও প্রাইমার্ক লিবার্টির কাছ থেকে পণ্য নেওয়া স্থায়ীভাবে বন্ধ করেছে। ওই ব্র্যান্ডগুলো বলেছে, চলতি বছরের জুলাইয়ে পরিদর্শকেরা লিবার্টি ফ্যাশনস ওয়্যার কারখানা ভবনটি ধসে যাতে পারে বলে হুঁশিয়ার দিলেও এটি মেরামতে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
তাই তারা লিবার্টিতে শ্রমিকদের অনিরাপদ পরিবেশে কাজ করতে দিতে চায় না।
তবে লিবার্টি ফ্যাশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও কারখানার মালিক মোজাম্মেল হক বলেন, ‘এই ভবনটি মাত্র আট বছর আগে নির্মাণ করা হয়েছে। আমি বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ), বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) ও একটি পেশাদার প্রকৌশল প্রতিষ্ঠানের একটি প্রতিবেদন পেয়েছি। এতে বলা হয়েছে, ভবনটি পুরোপুরি উপযোগী। তাঁরা (সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা) আমাদের উপকরণের (ভবনে ব্যবহূত) মান পরীক্ষা করেছেন।
কাজের জন্য ভবনটি একদমই ঠিক। ’ তিনি আরও বলেন, ‘১৪ বছর ধরে আমাদের পোশাক কারখানাকে সহায়তা করছে টেসকো। ’
চলতি বছরের এপ্রিলে সাভারে রানা প্লাজা ধসে এক হাজারের বেশি মানুষ মারা যান। এরপর পরিদর্শকেরা বাংলাদেশের বিভিন্ন পোশাক কারখানা পরিদর্শন করেন। লিবার্টি অনিরাপদ বিবেচিত হওয়া বাংলাদেশের প্রথম কয়েকটি কারখানার একটি।
ওই লিবার্টি ফ্যাশনস অস্ট্রেলিয়ার কেমার্ট ও টার্গেট এবং যুক্তরাষ্ট্রের কেলভিন ক্লেইনের মতো প্রতিষ্ঠানকে পণ্য সরবরাহ করে। প্রতিষ্ঠানটির নিরাপত্তা মান বাড়ানো না গেলে ৮০টির বেশি ব্র্যান্ডকে সমস্যায় পড়তে হবে। কারণ ওই ব্র্যান্ডগুলো বাংলাদেশের পোশাক কারখানার কর্মপরিবেশ উন্নয়নে সহায়তায় একটি বিধিবদ্ধ চুক্তিতে আবদ্ধ হয়েছে।
বাংলাদেশের ইউনিয়ন (শ্রমিক সংঘ) ও বাংলাদেশ সরকার অগ্নি ও ভবন নিরাপত্তা চুক্তি সমর্থন করেছে। এ চুক্তি অনুযায়ী ওই ব্র্যান্ডগুলো বিভিন্ন পোশাক কারখানা পরিদর্শন ও অগ্নিনিরাপত্তা ব্যবস্থা উন্নয়নে বার্ষিক পাঁচ লাখ ডলার দিতে সম্মত হয়েছে।
চুক্তি অনুযায়ী, যেসব কারখানা অনিরাপদ বিবেচিত হয়েছে, সেগুলোর একটি তালিকা শিগগিরই প্রকাশ করা হবে। কেউ কেউ ধারণা করছেন, বাংলাদেশের পোশাক প্রস্তুতকারক কারখানার দুই-তৃতীয়াংশ ভবনই অনিরাপদ হিসেবে চিহ্নিত হবে।
অগ্নি ও ভবন নিরাপত্তা চুক্তিসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, আর্থিক ও আনুষঙ্গিক সহায়তার নিশ্চয়তা পাওয়ার পরও লিবার্টি ভবনের উন্নয়নকাজ শুরু করেনি। তাঁরা বলেছেন, কাজে ধীরগতির মাধ্যমে বোঝা যাচ্ছে, ভবনের কর্মপরিবেশ উন্নয়নে কোনো পদক্ষেপ কিংবা কোনো পরিকল্পনা পেশের ইচ্ছা লিবার্টির নেই।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।