আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শাবাশ বাংলাদেশ , বাংলার বাঘিনী রিতার সাফল্য

যাক কাদের মোল্লার ফাঁসির রায় হইসে । রায় নিয়ে এত জল ঘোলা না করলে গনজাগরণ মঞ্চ আসতনা , আস্তিক নাস্তিক আসতনা, না আসত হেফাজত । সব ই রাজনীতি , একদল ভোটের আগে আবার পালে বাতাস দিবে আরেকদল একেবারে চুপ রায়ের ব্যাপারে । হায়রে দেশ

বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত রুশ নাগরিক রিতা। পুরো নাম মারগারিতা মামুন।

রাশিয়ার উদীয়মান রিদমিক জিমন্যাস্টদের একজন হলেন এই রিতা। ২০১৩ সালের ওয়ার্ল্ড কাপ ফাইনাল ও কাজানের গ্রীষ্মকালীন ইউনিভার্সিয়াডে অল-অ্যারাউন্ড চ্যাম্পিয়ন হয়ে রিদমিক জিমন্যাস্টিকসে সবার নজরে পড়েন তিনি। ইউক্রেনের কিয়েভে সদ্য শেষ হওয়া ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপেও সাফল্যের ধারাবাহিকতা ধরে রাখেন রিতা। আর রিদমিক জিমন্যাস্টিকসের ওয়ার্ল্ড কাপ ফাইনালে তিন বছর ধরে টানা অল-অ্যারাউন্ড ইভেন্টে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেছেন। ২০১৩ সালে রিতার এমন গৌরবোজ্জ্বল সাফল্যের কারণে তাঁকে নিয়ে রাশিয়ার ক্রীড়াঙ্গনে এখন রীতিমতো হইচই পড়ে গেছে।

রিতাকে নিয়ে ফলাও করে নিয়মিত সংবাদ প্রচার করছে রুশ গণমাধ্যমগুলো। সম্প্রতি ইউরো স্পোর্ট নামের একটি রুশ ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদে উঠে এসেছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত রিতা। স্থানীয় গণমাধ্যমে রিতা এখন ‘বাংলার বাঘিনী’ নামেই বেশি পরিচিত। আর এই খেতাব তাঁকে দিয়েছেন রাশিয়ার জাতীয় রিদমিক জিমন্যাস্টিকস দলের কোচ ইরিনা ভিনের। ১৯৯৫ সালের ১ নভেম্বর মস্কোতে জন্মগ্রহণ করেন রিতা।

বাবা আবদুল্লাহ আল মামুন বাংলাদেশের রাজশাহী থেকে রাশিয়া এসে এখানেই স্থায়ী হন। মা আন্না মামুন। সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের শিক্ষাবৃত্তি নিয়ে ১৯৮৩ সালে মস্কো আসেন রিতার বাবা। মেরিন ইঞ্জিনিয়ার আবদুল্লাহ আল মামুনের দুই সন্তানের মধ্যে রিতা বড়। বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত রিতার বর্তমান নাগরিকত্ব রাশিয়ান।

পেশা রিদমিক জিমন্যাস্ট। সর্বশেষ সাফল্য ২০১৩ সালের ওয়ার্ল্ড কাপ ফাইনাল ও কাজানের গ্রীষ্মকালীন ইউনিভার্সিয়াডে অল-অ্যারাউন্ড চ্যাম্পিয়ন। কিয়েভে অনুষ্ঠিত ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপে বল ও ক্লবসে স্বর্ণ এবং হুপে ব্রোঞ্জ জিতে নেন। ক্লাব গাজপ্রোম। কোচ ইরিনা ভিনে।

জাতীয় দলে ডাক পান ২০১১ সালে। তার অফিশিয়াল সোস্যাল নেটওয়ার্ক: Click This Link রিতার বয়স যখন সাত বছর তখন থেকে তিনি রিদমিক জিমন্যাস্টিকস চর্চা শুরু করেন। স্কুলে ভর্তির পর জিমন্যাস্ট হওয়ার স্বপ্ন দেখতে থাকেন তিনি। জিমন্যাস্টিকসে ক্যারিয়ার গড়ার ইচ্ছা নিয়ে কঠোর অনুশীলন শুরু করেন ১১ বছর বয়স থেকে। জুনিয়র হিসেবে অনেকগুলো আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে অংশ নিয়েছেন।

২০০৫ সালে এস্তোনিয়ায় অনুষ্ঠিত মিস ভ্যালেন্টাইন কাপে রিতা জুটি বেঁধেছিলেন কারোলিনা সিবাস্তিয়ানোভার সঙ্গে। বাংলাদেশের হয়েও রিদমিক জিমন্যাস্টিকস প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিলেন। কিন্তু একটা পর্যায়ে রাশিয়ার হয়েই অংশ নেওয়ার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেন। রিতার ক্রীড়া জীবনে উল্লেখযোগ্য সাফল্য আসে ২০১১ সালে। ওই বছর রাশিয়ার চ্যাম্পিয়নশিপে হুপ ও বলে অল-অ্যারাউন্ড চ্যাম্পিয়ন হওয়ার মধ্য দিয়ে জাতীয় দলে সুযোগ পান।

প্রথম সিনিয়র হিসেবে ২০১১ সালে মন্ট্রিল ওয়ার্ল্ড কাপে অংশ নিয়ে ১০৬.৯২৫ পয়েন্ট অর্জন করে অল-অ্যারাউন্ডে ব্রোঞ্জ পান রিতা। আর বল ফাইনালে ২৭.০২৫ পয়েন্ট নিয়ে স্বর্ণ জিতে প্রথম স্থান অধিকার করেন। ২০১২ সালে মস্কো গ্রাঁ প্রিঁতে রিতা অল-অ্যারাউন্ডে নবম স্থান অর্জন করেন। কিয়েভ ওয়ার্ল্ড কাপে হুপ, বল আর রিবনে ব্রোঞ্জ পান। তাসখন্দ ওয়ার্ল্ড কাপে অল-অ্যারাউন্ডে রিতা চতুর্থ স্থান পান।

২০১২ সালে দারিয়া দিমিত্রিকোভার সঙ্গে জুটি বেঁধে জাপানে এওন কাপে স্বর্ণ জিতে নেন। ২০১৩ সালে রিতা অনেকগুলো আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে অংশ নিয়েছেন। মস্কো গ্রাঁ প্রিঁতে স্বর্ণ জেতার মধ্য দিয়ে মৌমুমের শুভসূচনা করেন। এরপর কাজানে ইউনিভার্সিয়াড, সেন্ট পিটার্সবার্গে ওয়ার্ল্ড কাপ ফাইনাল, ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ এবং ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপের মতো বড় ক্রীড়া ইভেন্টগুলোতে রিতা রিদমিক জিমন্যাস্টিকসে নিজের দক্ষতা আবারও ফুটিয়ে তোলেন। ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে গত আগস্ট মাসে অনুষ্ঠিত ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপে রিতা প্রথমবারের মতো অংশ নেন।

রিতা ফেবারিট হিসেবে নিজেকে শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বীতে পরিণত করেছেন। প্রতিযোগিতার বল ও ক্লবসে স্বর্ণ এবং হুপে ব্রোঞ্জ জিতে নেন। রুশ নাগরিক হলেও রিতার শরীরে বইছে বাঙালি রক্ত। রাশিয়ার একটি গণমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অকপটেই তিনি তা বলেছেন। ছোটবেলায় বাবার সঙ্গে অনেকবার বাংলাদেশে বেড়াতে গিয়েছেন।

একসময় ভাঙা ভাঙা বাংলাও বলতে পারতেন রিতা। মেয়ের ধারাবাহিক ক্রীড়ানৈপুণ্যের কারণে বাবা হিসেবে অত্যন্ত গর্ববোধ করছেন আবদুল্লাহ আল মামুন। তিনি বলেন, ‘যেহেতু আমি একজন বাঙালি, তাই মেয়ের যেকোনো সাফল্যকে শুরুতে একজন বাঙালি হিসেবে অনুভব করি। রিদমিক জিমন্যাস্টিকসে আরও ভালো করার জন্য রিতা অনেক চেষ্টা করছে। আজকের দিন পর্যন্ত যে সাফল্য এসেছে তা শুধু তার নিজের প্রচেষ্টার কারণে সম্ভব হয়েছে।

আমাদের পরিবারের ভালোবাসা, আগ্রহ আর মেয়ের ঐকান্তিক চেষ্টাও ছিল। আর সব মিলিয়ে এ সাফল্য অর্জন করা সম্ভব হয়েছে। ’ প্রসঙ্গত, রাশিয়ার ক্রীড়াঙ্গনে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কোনো রুশ নাগরিকের এটিই প্রথম বড় সাফল্য। কয়েক দিন ধরে বাংলাদেশ কমিউনিটিতে রিতার অর্জন নিয়ে অনেক আলোচনা হচ্ছে। কমিউনিটির নেতা-কর্মীরা রিতার সাফল্যে আনন্দ প্রকাশ করেছেন।

মস্কোতে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের অনেককে রিতার প্রতিযোগিতার ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগের সাইটে প্রকাশ করতে দেখা গেছে। জামিল খান ও নুরুন নাহার নিজামেতদিনোভা মস্কো, রাশিয়া

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।