আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

গ্রীক মিথলজি ১৮ (ভালোবাসার গল্প- কিউপিড এবং সাইকী- প্রথম পর্ব)

(কিউপিড এবং সাইকীর এই গল্পটিও শুধুমাত্র রোমান মিথলজিতে পাওয়া যায়। তাই চরিত্রগুলো গ্রীক মিথলজির হলেও নামগুলো সব রোমান নামই ব্যবহার করা হয়েছে। )
গ্রীসের পশ্চিম অংশে এক দেশ ছিলো। সে দেশে এক রাজা এবং এক রানী থাকতেন। সেই রাজা এবং রানীর নাম অবশ্য আমরা কেউ জানতে পারিনি।

রাজা-রানীর তিন অনিন্দ্য সুন্দরী কন্যা ছিলো, যাদের মধ্যে একজন ছিলেন আবার অসম্ভব রুপবতী। তার নাম সাইকী, যিনি ছিলেন তিনজনের মধ্যে ছোট। সাইকীর রুপের কাছে অন্য দুই বোন কিছুই নয়। তার সৌন্দর্য্যের খ্যাতি দূর-দূরান্তে ছড়িয়ে পড়েছিলো। বহু দূরদেশ থেকে দলে দলে লোক সমাগম হতে লাগলো শুধুমাত্র সাইকীকে দেখার জন্য।

কত মানুষের যে সাইকীকে পাওয়ার জন্য ঘুম উধাও হয়ে গিয়েছিলো! লোকে বলাবলি করতে লাগলো- সাইকীর সৌন্দর্য্য দেবী ভেনাসের চেয়েও বেশি। ভেনাসের মন্দিরগুলো জনশূন্য হয়ে উঠতে লাগলো, বেদীগুলোতে অযত্নে অবহেলায় শ্যাওলা জন্মাতে লাগলো। সবাই যেনো ভেনাসের পরিবর্তে সাইকীকেই পুজা করতে আসেন! অমর দেবী, সৌন্দর্য্যের দেবী ভেনাস এক মরণশীল বালিকার কাছে কি পরাজিত হতে পারেন! যে পুজা দেওয়ার কথা একমাত্র ভেনাসকে, সেটা কি সাইকীকে দেওয়া উচিত? ভেনাস খুব ক্ষুদ্ধ হলেন, তিনি বলে উঠলেন, “আমার পুজা এক মরণশীল বালিকা পাচ্ছে? যেখানে এক রাজকীয় রাখাল (ট্রয়ের রাজপুত্র প্যারিস) পালাস (এথেনার রোমান নাম) ও জুনোর (হেরার রোমান নাম) চেয়ে আমাকেই পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি সুন্দরী বলে ঘোষনা দিয়েছে, যা স্বয়ং জুপিটারও (জিউসের রোমান নাম) মেনে নিয়েছেন, সেখানে সাইকীকে আমার উপরে স্থান দেওয়া হচ্ছে? এই সৌন্দর্য্যের জন্য সাইকীকে অনুতপ্ত হতে হবে, আমি সেই ব্যবস্থাই করবো!” ঈর্ষায় পাগলপ্রায় ভেনাস হিতাহিত জ্ঞানশূন্য হয়ে তার পুত্র কিউপিডের শরনাপন্ন হলেন।
কিউপিড হলেন আফ্রোদিতি এবং অ্যারিসের সন্তান। গ্রীকরা কিউপিডকে অবশ্য এরোস বলেন।

সে যাই হোক, কিউপিড ছিলেন পাখাওয়ালা এবং তীরধনুকবাহী প্রেমের দেবতা, যার তীব্র তীরের কাছ থেকে মানব বা দেবতা, কারোরই পরিত্রাণ নেই। ভেনাস কিউপিডকে তার নিগ্রহের কথা জানালেন। কিউপিডকে বললেন, “আমার প্রিয় পুত্র, এই অসম্ভব সৌন্দর্য্যের শাস্তি দাও। এমন শাস্তি দাও, যাতে সাইকী পৃথিবীর সবচেয়ে নিকৃষ্টতম ও জঘন্যতম পুরুষের প্রেমে পড়ে”।
কিউপিড ভেনাসের আদেশ মান্য করার জন্য প্রস্তুতি নিতে লাগলেন।

ভেনাসের বাগানে দুটি ঝরনা আছে, একটি মিষ্টি পানির, অন্যটি তেতো পানির। কিউপিড দুইটি পাত্র নিয়ে একটিতে মিষ্টি পানি এবং অন্যটিতে তেতো পানি ভর্তি করে, খুব দ্রুত সাইকীর কাছে গেলেন, সেখানে তিনি সাইকীকে ঘুমন্ত দেখতে পেলেন। তিনি তেতো পানির পাত্র থেকে কিছু পানি নিয়ে সাইকীর ঠোঁটে দিলেন, যদিও সাইকীকে দেখে কিউপিডের মনে ততক্ষনে মাতাল হাওয়া বইতে শুরু করেছিলো। এরপর তার তীর দিয়ে সাইকীর একটি অংশ স্পর্শ করলেন, সেই স্পর্শে সাইকীর ঘুম ভেঙ্গে গেলো। সাইকী চোখ খুলে সোজা কিউপিডের দিকে তাকালেন (যদিও কিউপিড অদৃশ্য ছিলেন), সেই তাকানোতে এমন কিছু ছিলো, কিউপিড চমকে উঠলেন, ভাব-বিহবল হয়ে নিজের তীরে নিজেই বিদ্ধ হলেন! অসর্তকায় তীরে বিদ্ধ হয়ে কিউপিড সাইকীর সাথে যে অন্যায় আচরন করতে যাচ্ছিলেন, সেটি থেকে সরে আসলেন, সাইকীর রেশমের মতো ছোট আংটিতে সুবাসিত মিষ্টি পানির ফোঁটা ঢেলে দিলেন।

সাইকীকে পৃথিবীর নিকৃষ্টতম মানুষের প্রেমে পড়াতে এসে, কিউপিড নিজেই সাইকীর প্রেমে পড়ে গেলেন!
কিউপিড ঘুমন্ত সাইকীকে দেখছেন (শিল্পী- এন্থনি ভ্যান ডাইক, ১৬৩৯-৪০ সাল)
সাইকী কোনো জঘন্য, কুৎসিত মানুষের প্রেমে পড়লেন না, তিনি কারোরই প্রেমে পড়লেন না। মজার কথা, কোনো মানুষও তার প্রেমে পড়লেন না। সবাই তাকে দেখতে আসেন, সৌন্দর্য্যের প্রশংসা করেন, তার পুজা দেন- এরপর চলে গিয়ে অন্য কাউকে বিয়ে করেন। সাইকীর অন্য দুই বোন, যারা সাইকীর তুলনায় কিছুই নয়, তাদের বিয়ে হয়ে গেলো দুজন রাজপুত্রের সাথে, অথচ পরমাসুন্দরী সাইকী রয়ে গেলেন একাকী, বিষন্ন- সবাই তার রুপে মুগ্ধ, কিন্তু কেউ ভালোবাসে না।
সাইকীর বাবা-মা খুব চিন্তায় পড়ে গেলেন।

তারা ডেলফিতে গেলেন এপোলোর কাছে ভবিষ্যতবানী জানতে। এপোলো ভবিষ্যত বললেন, কিন্তু সেটি খুব সুখকর ছিলো না। এপোলো বললেন, “সাইকীর সাথে কোনো মরণশীল মানবের বিয়ে হবে না। তার ভবিষ্যত স্বামী তার জন্য পাহাড়ের চূড়ায় অপেক্ষা করছেন। সেই স্বামী হবেন একজন দানব, আর এই ভবিষ্যত না কোনো দেবতা, না কোনো মানুষ প্রতিরোধ করতে পারবে”।


এই ভয়ংকর ভবিষ্যতবানী শুনে সব মানুষ আতঙ্কিত হয়ে উঠলেন, আর বাবা- মা হতাশায় ভেঙ্গে পড়লেন। কিন্তু সাইকী বললেন, “কেনো তোমরা এখন কান্না কাঁটি করছো? তোমাদের তখন অনুতপ্ত হওয়া উচিত ছিলো যখন মানুষ আমাকে অনাকাঙ্খিত সম্মান দিয়েছিলো, তোমাদের তখন সাবধান হওয়া উচিত ছিলো যখন মানুষ আমাকে ভেনাসের চেয়েও বেশি সুন্দরী বলতে লাগলো। আমি এখন বুঝতে পারছি, আমি ভেনাসের প্রতিহিংসার শিকার। আমি সবকিছু মেনে নিলাম। আমাকে সেই পাহাড় চূড়ায় নিয়ে চলো, যেখানে আমার জন্য আমার দানব স্বামী অপেক্ষা করে আছেন”।


সাইকীকে কালো পোশাকে সাজানো হলো, যেনো সে মৃত্যুপুরীতে যাচ্ছে! শবযাত্রার মতো করে তাকে নিয়ে সবাই পাহাড়ের চূড়ায় গিয়ে সেখানে রেখে, ভগ্ন হৃদয়ে বাড়িতে ফিরে গেলেন। অন্ধকার পাহাড়ের চূড়ায় ভীতগ্রস্থ একাকী সাইকী, কাঁদছেন আর ভয় পাচ্ছেন। ঠিক সেই সময়ে নিরবতার ভিতর দিয়ে যেনো এক পশলা বাতাসের পরস এসে তাকে স্পর্শ করলো, এই বাতাস পবন দেবতা জেফাইয়ারের- সবচেয়ে মধুরতম এবং মৃদু বাতাস। সাইকীর মনে হলো তিনি ঘুমিয়ে পড়ছেন। যখন ঘুম থেকে উঠলেন, সাইকী দেখলেন, এক পুষ্পশোভিত ও সুরভিত নরম ঘাসের বিছানায় শুয়ে আছেন তিনি।

পাশেই এক উজ্জ্বল নদী, সেই নদীর পাড়ে এক মনোরম ও রাজকীয় প্রাসাদ, মনে হয় কোনো দেবতার আবাসস্থল! দ্বিধা নিয়ে সাইকী সেই রাজপ্রাসাদের দরজা খুলে ভিতরে প্রবেশ করলেন। দেখলেন- সোনার থাম আর রুপার দেয়াল, মেঝেতে মহামূল্যবান রত্নরাজি। কোথাও কেউ নেই, নেই কোনো শব্দ- এক চরম নিরবতা। হঠাৎ করেই এই নিরবতার মধ্যে শুনতে পেলেন, কারা যেনো তাকেই বলছেন’ “হে মহামান্য নারী, এখানে যা দেখতে পাচ্ছেন, তার সবই আপনার। আমাদের যাদের কন্ঠ আপনি শুনতে পাচ্ছেন, সেই আমরা আপনার দাস-দাসী এবং আপনার যেকোন আদেশ পালনের জন্য আমরা প্রস্তুত।

গৃহে আপনি নির্ভয়ে প্রবেশ করে গোসল করে বিশ্রাম নিন। আপনার জন্য খাবারের টেবিল সাজানো হয়েছে, যখন ইচ্ছে হবে, তখন খেয়ে নিতে পারবেন”।
সাইকী তার অদৃশ্য দাস-দাসীদের কথা শুনলেন। তিনি গোসল করে বিশ্রাম নিয়ে খাবার খেতে বসলেন। যা যা দরকার সব এসে যাচ্ছে নিমিষে, কিন্তু কাউকেই দেখা যাচ্ছে না! খাবারগুলো ছিলো অতিশয় সুস্বাদু।

সাইকী যখন খাচ্ছিলেন, তখন তার চারপাশে মৃদু নিশ্বাসের মতো বাজছিলো মধুর সঙ্গীত, মনে হচ্ছে এক বিশাল গায়কদল হার্প বাজিয়ে গান গাইছেন।
সাইকী তখনো তার ভবিতব্য স্বামীর দেখা পেলেন না। তিনি আসলেন রাতের অন্ধকারে এবং ভোরের সূর্য উঠার আগেই চলে গেলেন। কিন্তু তার কথায়, কন্ঠস্বরে ছিলো সাইকীর প্রতি ভালোবাসা আর আবেগে পূর্ণ। সাইকী তাকে দেখতে পেলেন না, কিন্তু অনুভব করতে পারলেন, তার পাশে যিনি আছেন, তিনি কোনো দৈত্য-দানব না, বরং একজন প্রেমিক স্বামী- যাকে তিনি চিরজীবন কামনা করেছেন, যার জন্য প্রতীক্ষা করেছেন দীর্ঘদিন।


১৮১৭ সালে শিল্পীর তুলিতে ভোর হওয়ার আগেই সাইকীর স্বামী সাইকীকে রেখে চলে যাচ্ছেন
সাইকী তার স্বামীর সাথে আরো সময় থাকতে চাইলেন, তাকে দেখতে চাইলেন। তার স্বামী অন্ধকারে বলে উঠেন, “কেনো তুমি আমাকে সারাক্ষণ রাখতে চাও? তুমি কি আমার ভালোবাসা নিয়ে সন্দেহে আছো? আমি কি তোমার কোনো ইচ্ছা অপূর্ণ রেখেছি? তুমি যদি আমাকে দেখ, তাহলে তুমি আমাকে ভয় পাবে, হয়তোবা পুজা করবে, কিন্তু আমি তোমার কাছে শুধু ভালোবাসাই চাই”।
সাইকী তাই করতে লাগলেন। তার স্বামীকে না দেখেই তিনি ভালোবাসতে লাগলেন। কিন্তু দিনের সময়টুকু একা একা থাকতে থাকতে সাইকী ক্রমশ বিষন্ন হয়ে পড়লেন।

তার বাবা- মা আর দুই বোনদের কথা খুব মনে পড়লো। তিনি তার বোনদের সাথে দেখা করতে চাইলেন। রাতে স্বামী এলে, সাইকী মনের ইচ্ছার কথা জানালেন। অদৃশ্য স্বামী সব কথা শুনে বললেন, “তোমার বোনেরা এখানে এলে তোমার নিজের ধ্বংসই ডেকে আনবে। কিন্তু আমি তোমার কোনো ইচ্ছা অপূর্ণ রাখবো না, কিন্তু সাবধান, তাদের কোনো প্ররোচনাতেই তুমি আমাকে দেখার চেষ্টা করো না, তাহলে চিরদিনের জন্য বিচ্ছেদ ঘটবে আমাদের”।

সাইকী চিৎকার করে বলে উঠলেন, “না, আমি তা কখনো করবো না। তোমাকে ছাড়া আমি বাঁচতে পারবো না। আমি আমার বোনদের প্ররোচনা শুনবো না, শুধু তাদেরকে দেখে মনের আনন্দ পেতে চাই”। দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে স্বামী বললেন, “বেশ, তাই হবে!”
জেফায়ারের বাতাসে করে পরের দিন সাইকীর দুই বোন এলেন। সাইকী তাদেরকে দেখে আবেগে জড়িয়ে ধরলেন, অনেকক্ষন তারা কথা বলতে পারলেন না।

তিন বোনেরই চোখের কোনা জলে চিক চিক করে উঠলো। এরপর সাইকী দুই বোনকে তার প্রাসাদ দেখাতে লাগলেন। প্রাসাদের ঐশ্বর্য দেখে বোনদের চোখ ছানাবাড়া। যখন তারা খাবার খেলেন এবং মনোহারিনী সঙ্গীত শুনলেন, প্রচন্ড ঈর্ষায় কাতরে উঠলেন। এইসব ঐশ্বর্যের মালিক কে, কেইবা তাদের ছোট বোনের স্বামী- জানার জন্য তারা খুব ব্যাকুল হয়ে উঠলেন।

কিন্তু সাইকীর স্বামীর বলা নিষেধবানীর কথা তখনো মনে ছিলো, তিনি বললেন, “আমার স্বামী একজন যুবক, তিনি এখন শিকারের খোঁজে বাইরে গেছেন”। সাইকী বোনদের প্রচুর সোনা দানা, মনি মুক্তা দিলেন এবং সবশেষে জেফায়ারের বাতাসে করে তারা পাহাড় চূড়ায় ফিরে গেলেন। তারা ফিরে গেলেন বটে, কিন্তু তাদের হৃদয়ে তখন ঈর্ষার আগুন। তাদের নিজেদের ঐশ্বর্য এবং সৌভাগ্যকে সাইকীর ঐশ্বর্য এবং সৌভাগ্যের তুলনায় অনেক তুচ্ছ মনে হতে লাগলো। তারা এতোটাই ঈর্ষান্বিত হয়ে উঠলেন যে অচিরেই তারা সাইকীকে ধ্বংসের ষড়যন্ত্রে মেতে উঠলেন।


সে রাত্রে সাইকীর স্বামী আবার তাকে সতর্ক করলেন। তিনি অনুরোধ করলেন, “তোমার বোনদের এখানে আর আসতে দিও না”। কিন্তু সাইকী স্বামীর কথা মানতে চাইলেন না, “তোমাকে আমি দেখতে পাই না, তাই বলে অন্য সবাইকেও কী আমি দেখতে পাবো না? আমার বোনদেরও দেখার কোনো অধিকার আমার নেই?” স্বামী অগত্যা রাজী হলেন।
সাইকীর দুই বোন আবার এলেন, এসেই স্বামী সম্পর্কে অসংখ্য প্রশ্ন করতে লাগলেন। সাইকীর তোতলানো এবং উল্টা পাল্টা জবাব শুনে বোনেরা আঁচ করলেন, সাইকী তার স্বামীকে আদৌ চোখে দেখেন নি এবং তিনি আদৌ দেখতে কেমন, সেটাও জানেন না।

তারা সুযোগটা গ্রহন করলেন, তিরস্কার করে সাইকীকে বললেন, “শুনেছি, তোমার স্বামী আসলে কোনো মানুষ নয়, বরং এক ভয়াবহ দানব, যেমনটি এপোলো ভবিষ্যতবানী করেছিলেন। তোমার স্বামী এখন পর্যন্ত দয়ালু হলেও, একদিন না একদিন স্বমূর্তি ধারন করবে এবং তোমাকে গিলে খাবে”।
সাইকী এই কথা শুনে প্রচন্ড ভয় পেলেন, ভালোবাসার জায়গায় ভয় গ্রাস করলো তার সরল মনকে। তিনি নিজেও চিন্তা করেছেন, কেনো তার স্বামী তার কাছে দেখা দেয় না, শুধুমাত্র অন্ধকারেই তারা মিলিত হয়েছেন। নিশ্চয়ই ভয়ংকর কোনো ব্যাপার জড়িয়ে আছে এতে! মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়লেন সাইকী।

বোনদের জড়িয়ে ধরে কাঁদতে কাঁদতে বললেন, “নিশ্চয়ই কোথাও বিরাট ভুল হয়ে গেছে। তিনি কেনো সূর্যের আলোকে সবসময় এড়িয়ে চলবেন? তোমরাই বলে দাও, আমি এখন কি করবো?”
বোনেরা তো আগে থেকেই পরামর্শ ঠিক করে এসেছিলেন। তারা বললেন, “আজ রাত্রে বিছানার কাছে তুমি একটি ধারালো ছুরি আর বাতি লুকিয়ে রাখবে। তোমার স্বামী ঘুমিয়ে গেলে চুপিসারে বাতিটি জ্বালিয়ে ছুরিটি হাতে নিবে। বাতির আলোতে সেই ভয়াল দানবকে দেখামাত্রই ছুরিটি শরীরে দ্রুত ঢুকিয়ে দিবে।

আমরা কাছাকাছি কোথাও থাকবো। দানবটা মারা গেলে আমরা এখান থেকে তোমাকে নিয়ে চলে যাবো”।
(প্রফেশনাল ব্যস্ততার জন্য ১৭তম পর্বের পর ১৮তম পর্ব দিতে অনেক দেরী হয়ে গেলো, সেজন্য আন্তরিকভাবে দুঃখিত। কিউপিড এবং সাইকীর এই কাহিনীটি খুব প্রচলিত, অনেকেই বাংলাতে এই কাহিনী লিখেছেন। তাই আমার খুব একটা লেখার ইচ্ছে ছিলো না, কিন্তু সিরিজটির স্বার্থে এই লেখা।

কেমন হলো, বুঝতে পারছি না, বিশেষ করে এই কাহিনী নিয়ে অন্যান্য লেখার তুলনায়। খুব দ্বিধায় আছি। )
এই সিরিজের আগের লেখাগুলোঃ
সৃষ্টিতত্ত্বঃ পর্ব-১: বিশ্ব-ব্রক্ষ্মান্ডের সৃষ্টি এবং ইউরেনাসের পতন পর্ব-২: টাইটান যুগের সূচনা এবং অলিম্পিয়ানদের জন্ম পর্ব-৩: প্রথম টাইটান যুদ্ধ এবং জিউসের উত্থান পর্ব-৪: মানবজাতির সৃষ্টি, প্রমিথিউস এবং পান্ডোরা উপাখ্যান পর্ব-৫: প্রমিথিউসের শাস্তি এবং আইও পর্ব-৬: আবার যুদ্ধ- জায়ান্ট এবং টাইফোয়িয়াস পর্ব-৭: ডিওক্যালিয়নের প্লাবন
দেবতাদের গল্পঃ এথেনা এবং আফ্রোদিতি পর্ব-৮: জিউস, মেটিস এবং এথেনার জন্ম পর্ব-৯: এথেনার গল্পকথা-প্রথম পর্ব পর্ব-১০: এথেনার গল্পকথা- দ্বিতীয় (শেষ) পর্ব পর্ব-১১: আফ্রোদিতির গল্পকথাঃ আফ্রোদিতি, হেফাস্টাস এবং অ্যারিসের ত্রিমুখী প্রেমকাহিনি পর্ব-১২: আফ্রোদিতির গল্পকথাঃ অ্যাডোনিসের সাথে অমর প্রেমকাহিনী পর্ব-১৩: আফ্রোদিতির গল্পকথাঃ এনকেসিসের সাথে দূরন্ত প্রেম
ভালোবাসার গল্পঃ পর্ব-১৪: পিগম্যালিয়ন এবং গ্যালাতিয়া পর্ব-১৫: পিরামাস এবং থিসবি পর্ব-১৬: হিরো এবং লিয়েন্ডার পর্ব-১৭: বোসিস এবং ফিলোমোন
লেখকঃ
এস এম নিয়াজ মাওলা
ছবি সূত্রঃ ইন্টারনেট

সোর্স: http://www.sachalayatan.com/     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.