আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সংবাদ পরিবেশনে ভদ্রতার সীমা কতদূর হওয়া উচিত

ইংরেজিতে সম্বোধন করার সুবিধা হলো আপনি-তুমি-তুই ইত্যাদি নিয়ে মাথা না ঘামিয়ে ইউ বললেই হয়ে যায়৷ বাংলায় অত সুবিধা নেই৷ এখানে আপনি-তুমি-তুই নিয়ে বিস্তর মাথা ঘামাতে হয়৷ মাথা ঘামাতে ভুল হলে বিপদ হতে পারে৷ পাড়া বা মহল্লার বড় ভাই টাইপের কাউকে ভুল করে তুমি বা তুই বলে ফেললে প্যাঁদানি এড়ানো দুস্কর৷ বড় ভাইরা আবার এইসব ব্যাপারে খুব সচেতন৷ হয়তো এ ধরণের বিপদ এড়ানোর জন্যই, কেউ কেউ পাইকারি দরে সবাইকে আপনি-আজ্ঞে করে৷ অনেকদিন আগে এক বড় ভাই আমাকে আপনি আজ্ঞে করায় আমি তাকে বললাম তুমি করে বলতে৷ তিনি বললেন, “আমি কাউকেই তুমি বলি না৷ সবাইকে আপনি বলা আমার স্বভাব৷” আমি মেনে নিয়েছিলাম৷ কিন্তু সবক্ষেত্রেই কি এই অভ্যাস মেনে নেওয়া যায়? ইদানিং পত্রিকাগুলোতে দেখছি নির্বিচারে অনাকাঙ্খিত আপনি আজ্ঞের বাহুল্য৷ একদল ডাকাত বাসায় ঢুকে সবাইকে বেঁধে ডাকাতি করছে, পত্রিকা লিখছে- “ডাকাত দলের সদস্যরা বাসায় ঢুকে প্রথমেই সবাইকে বেঁধে ফেলেন৷ এরপর তাঁরা (চন্দ্রবিন্দুর ব্যবহারও লক্ষনীয়) তাদের ইচ্ছেমতো লুটপাট চালান৷” আঠারো বছর বয়সী একজন পাঁচ বছর বয়সী এক শিশুকে ধর্ষণ করে হত্যা করেছে৷ ধরা পরার পর পত্রিকা তার স্বীকারোক্তির খবর লিখছে এভাবে- “তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘ওর (মেয়েটির) জন্য আমি ছয় মাস জেল খাটছি৷ এ সময়ে আমার বাবাও মারা গেছে৷ আমি ওকে বাঁশবাগানে ডেকে নিয়ে পেটে লাথি মেরে হত্যা করেছি৷’ তবে তিনি ধর্ষণের কথা অস্বীকার করেন৷ সাংবাদিকরা নিশ্চয় ভদ্র পরিবার থেকেই সাংবাদিকতা পেশায় আসেন৷ সম্মানিতকে সম্মান দেয়ার বিষয়টা তারা নিশ্চয় ভালো জানেন৷ কিন্তু ডাকাত, শীর্ষ সন্ত্রাসি, ধর্ষণকারী ইত্যাদি সবাইকে এইরকম পাইকারি দরে আপনি আজ্ঞে করার প্রবণতা কেনো? এ কি অতি ভদ্রতার ফসল? যে দুটো উদাহারণ দিলাম দুটোই সর্বাধিক প্রচারিত দৈনিক প্রথম আলোর সংবাদ৷ এমন একটা পত্রিকায় সাংবাদিকদের এরকম ভুল ঠিক করে দেয়ার জন্য সম্পাদক-উপসম্পাদক থাকার কথা৷ তাদের চোখে কি বিষয়টা পড়ে না? নাকি এটাকে তারা ভুল বলে ভাবেন না? তা না ভাবতে পারেন৷ হয়তো সাংবাদিকতার নিয়ম এরকম, তাই এতে তাদের কোনো সমস্যা হয় না৷ কিন্তু সমস্যা হয় আমাদের৷ আমরা যারা এসব খবর পড়ি, অপরাধীকে এরকম আপনি আজ্ঞে করতে দেখে আমাদের আক্কেল গুড়ুম হয়ে যায়৷ আমাদের বুকের মধ্যে শিরশির করে৷ আমরা নিদারুন অস্বস্তিবোধ করি৷ ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে সাজিয়াকে হত্যা করেন ক্লিনিকের কর্মী ধর্ষণের চেষ্টা মামলায় জামিন পেয়ে সেই শিশুকে ধর্ষণ ও হত্যা

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.