আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সাকার বিরুদ্ধে ৭ অভিযোগ প্রমাণিত

একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযোগে আটক বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিরুদ্ধে আনা ৮ নম্বর অভিযোগও প্রমাণিত হয়েছে। তবে ১ নম্বর এবং ৯ থেকে ১৪ নম্বর অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি।    

৮ নম্বর অভিযোগে বলা হয়েছে, ১৭ এপ্রিল সকাল আনুমানিক ১১টার দিকে চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা শেখ মোজাফফর আহম্মদ ও তার ছেলে শেখ আলমগীরসহ তার পরিবারের কয়েকজন সদস্য প্রাইভেটকারযোগে চট্টগ্রামের রাউজান থেকে চট্টগ্রাম শহরে আসছিলেন। পথে হাটহাজারী থানার খাগড়াছড়ি-রাঙামাটি তিন রাস্তার মোড়ে পৌঁছামাত্র সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর সঙ্গে থাকা পাকিস্তানি সৈন্যরা শেখ মোজাফফর আহম্মেদ ও তার ছেলে শেখ আলমগীরকে গাড়ি থেকে নামিয়ে স্থানীয় পাকিস্তানি সেনা ক্যাম্পে নিয়ে যায়। সেখান থেকে তাদের আর উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।

প্রমাণিত ৭ নম্বর অভিযোগে বলা হয়েছে, ১৪ এপ্রিল দুপুর ১২টার দিকে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর নির্দেশে পাকিস্তানি সৈন্যরা রাউজান পৌরসভার সতীশ চন্দ্র পালিতের বাড়িতে প্রবেশ করে তাকে গুলি করে হত্যা করে এবং তার লাশ কাঁথাকাপড় দিয়ে মুড়িয়ে তাতে পাউডার ছিটিয়ে আগুন দিয়ে লাশ পুড়িয়ে ফেলে।

৬ নম্বর অভিযোগে বলা হয়েছে, ১৩ এপ্রিল বিকেল ৪টায় সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর উপস্থিতিতে রাউজানের ঊনসত্তরপাড়ায় ক্ষিতীশ মহাজনের বাড়ির পেছনে পুকুর পাড়ে শান্তি মিটিংয়ের নামে হিন্দু নর-নারীদের একত্রিত করে পাকিস্তানি সৈন্যরা ব্রাশফায়ারে হত্যা করে।

৫ নম্বর অভিযোগে বলা হয়, ১৩ এপ্রিল বেলা একটার দিকে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী তার অনুসারীদের নিয়ে চট্টগ্রাম জেলার রাউজানের সুলতানপুর গ্রামে হামলা চালান। সেনা সদস্যরা বণিকপাড়ায় প্রবেশ করে ধর্মীয় বিদ্বেষপ্রসূত হয়ে অভিযান চালিয়ে নেপাল চন্দ্র ধর, মনীন্দ্র লাল ধর, উপেন্দ্র লাল ধর ও অনিল বরণ ধরকে গুলি করে। এতে প্রথম ৩ জন শহীদ ও শেষের জন আহত হন।

হত্যাকাণ্ড শেষে বাড়িঘরে আগুন দিয়ে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও তার বাবা ফজলুল কাদের চৌধুরী তাদের অনুসারী ও পাকিস্তানি সৈন্যদের সুলতানপুর গ্রাম ত্যাগ করেন।

৪ নম্বরে অভিযোগে বলা হয়েছে, একাত্তরের ১৩ এপ্রিল সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী পাকিস্তানি সৈন্যদের সঙ্গে নিয়ে হিন্দু অধ্যুষিত জগৎমল্লপাড়ায় অভিযান চালান। এ সময় সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর দুই সহযোগীর আহবানে সেখানকার হিন্দু নর-নারীরা কিরণ বিকাশ চৌধুরীর বাড়ির আঙিনায় জড়ো হয়। সেখানে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর উপস্থিতিতে তাদের ওপর গুলিবর্ষণ করা হয়। এতে ৩২ নারী-পুরুষ মারা যান।

৩ নম্বর অভিযোগে বলা হয়েছে, একাত্তর সালের ১৩ এপ্রিল সকাল ৯টার দিকে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর নির্দেশে পাকিস্তানি সৈন্যরা গহিরা শ্রী কুণ্ডেশ্বরী ঔষধালয়ের প্রতিষ্ঠাতা মালিক নূতন চন্দ্র সিংহকে ব্রাশফায়ার করে। সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী নিজে তাকে গুলি করে মৃত্যু নিশ্চিত করেন। এছাড়াও সাকার বিরুদ্ধে ২ নম্বর অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। ২ নম্বর অভিযোগে বলা হয়েছে, ১৩ এপ্রিল সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর নেতৃত্বে পাকিস্তানি সৈন্যরা গহিরা গ্রামে হিন্দু অধ্যুষিত পাড়ায় অভিযান চালিয়ে ৫ জনকে ডাক্তার মাখন লাল শর্মার বাড়িতে জড়ো করা হয়। সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর উপস্থিতিতে পাকিস্তানি সৈন্যরা তাদের ব্রাশফায়ারে হত্যা করে।

তবে ১৯৭১ সালে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীর বিরুদ্ধে ১ নম্বর অভিযোগ প্রমাণ হয়নি। ১ নম্বর অভিযোগে বলা হয়েছে, ১৯৭১ সালের ৪ বা ৫ এপ্রিল রাত ৯টার পর মতিলাল চৌধুরী, অরুণ চৌধুরী, যোগেশ চন্দ্র দে, পরিতোষ দাসরা একত্রিত হয় শহীদ মতিলাল চৌধুরীর চট্টগ্রাম শহরের রামজন লেনের বাসভবনে। সেখান থেকে পাকিস্তানি সৈন্যের সহায়তায় সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর অনুসারী সোবহান ছয়জনকে অপহরণ করে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বাসভবন গুডসহিলে নিয়ে যান। সেই ৬ ব্যক্তির আর কোনো হদিস পাওয়া যায়নি। যা থেকে নিশ্চিত ধরে নেওয়া যায় যে, তাদের সেখানেই হত্যা করা হয়েছে।

সোর্স: http://www.bd-pratidin.com/

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।