আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আলেকজান্ডারের দ্যা গ্রেট এর অন্তিম ৩ ইচ্ছা এবং শিক্ষা


আলেকজান্ডার দ্য গ্রেট, বিশ্বের বুকে মহান বীর খেতাবে পরিচিত। যুদ্ধের ময়দানে বীরত্ব দেখিয়ে জয় করেছিলেন রাজ্যের পর রাজ্য। বহু দেশ জয় করে অসুস্থ এই মহান বীরের এক পর্যায়ে বোধোদয় হলো; এতদিন তার অর্জিত সম্পদ, শক্তিশালী সৈন্য, সীমানা, ধারাল অস্ত্র সবকিছুই মূল্যহীন! আলেকজান্ডারের মনে তখন একটিই ভাবনা- মৃত্য নিকটবর্তী এবং তিনি আর তার নিজ দেশে ফিরে যেতে পারবেন না। তখন আলেকজান্ডার তার সৈন্যকে বললেন, ‘আমি খুব তাড়াতাড়ি পৃথিবী ছেড়ে চলে যাব। আমার অন্তিম তিনটি ইচ্ছে আছে, তোমার শুনে রাখা দরকার।

’ সেনা কর্মকর্তা অশ্রুসজল চোখে আলেকজান্ডারের কথায় সম্মতি জানালেন। তখন আলেকজান্ডার বললেন, ‘প্রথম ইচ্ছে; আমার মরদেহ যেন একজন চিকিৎসক বহন করে দেশে নিয়ে যান। ’ কিছুক্ষণ পর তিনি শ্বাস নিয়ে আবার বললেন, ‘আমার দ্বিতীয় ইচ্ছে হলো; যে পথ আমার সমাধি পানে গেছে সেই পথে আমার অর্জিত সব সোনা, রুপা, নামী-দামি জিনিসপত্র ছড়িয়ে দিবে। ’ কিছুক্ষণ বিশ্রামের পর আবারও আলেকজান্ডার বললেন, ‘আমার তৃতীয় এবং শেষ ইচ্ছে হলো; কফিনের ভেতর থেকে আমার দুই হাত বাইরে রাখবে, যা দেখে লোকজনের মনে প্রশ্ন জাগবে কিন্তু কেউই তা করার সাহস করবে না। ’ এরপর আলেকজান্ডার দ্য গ্রেটের প্রিয় সৈন্য তার হাতে চুম্বন করলেন এবং বললেন, ‘আমরা অবশ্যই আপনার এসব ইচ্ছে পূরণ করব।

’ কিন্তু মাই ম্যাজিস্টি, আপনি অনুগ্রহ করে বলবেন, ‘কেন আমরা এসব করব?’ গভীর আপ্লুত প্রশ্বাসে আলেকজান্ডার বললেন, ‘যে তিনটি বিষয় আমি শিখেছি, তা যেন সবাই বুঝতে পারে। ’ এরপর তিনি তার তিনটি ইচ্ছেপোষণের ব্যাখ্যা দিলেন। আলেকজান্ডার বলেন, ‘আমার কফিন চিকিৎসককে বহন করতে দিও, যাতে লোকেরা বুঝতে পারে একজন চিকিৎসক কখনোই রোগীকে সুস্থ করতে পারেন না, বিশেষত যখন মৃত্যু তাদের নিকটে এসে পড়ে। তখন চিকিৎসক থাকেন ক্ষমতাহীন। আমি আশা করি, এ থেকে মানুষ তার জীবনের মূল্য বুঝবে।

’ দ্বিতীয় ইচ্ছের ব্যাখ্যায় আলেকজান্ডার বলেন, ‘পথে ছিটানো সম্পদ দেখে মানুয় বলুক, বেশি সম্পদ ব্যয় করায় আমরা তাকে (আলেকজান্ডার) পছন্দ করি না। আমি সারা জীবন অঢেল সম্পদ ব্যয় করে কাটিয়েছি। আর এই সম্পদ ব্যয়ের মধ্যদিয়ে আমি আমার জীবনের সবচেয়ে মূল্যবান সময় নষ্ট করেছি। ’ আর তৃতীয় ইচ্ছে কফিন থেকে হাত বাইরে রাখার বিষয়ে আলেকজান্ডার দ্য গ্রেট বলেন, ‘এ থেকে জনগণ জানুক- আমি শূন্য হাতে পৃথিবীতে এসেছি; আবার যাওয়ার সময় শূন্য হাতেই ফিরে যাচ্ছি। কিছুই নিয়ে যাওয়ার ক্ষমতা আমার নেই।

’ প্রিয় সৈন্যের সঙ্গে কথপোকথনের এক পর্যায়ে চোখ দুটি বন্ধ হলে পরিসমাপ্তি ঘটে বীরত্বের কারণে ইতিহাস হয়ে থাকা আলেকজান্ডার দ্য গ্রেটের। একই সঙ্গে মানুষের জন্য তিনি রেখে যান কিছু শিক্ষণীয়; সময় সব সম্পদের চেয়ে মূল্যবাদ। কারণ এটি খুবই সীমিত। আমরা আমাদের সম্পদ বৃদ্ধি করতে পারি কিন্তু সময় বাড়াতে পারব না। সুতরাং আমরা কাউকে সময় দিলে প্রকৃতপক্ষে তাকে আমার জীবনের একটি অংশই দিয়ে দিচ্ছি।

এটি আর ফিরে পাওয়ার সুযোগ নেই। আমার সময় আমার জীবন।
 

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১০ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।