উপাচার্যবিরোধী শিক্ষক ফোরামের দাবির মুখে এক মাস আগে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য মহিবুর রহমানকে প্রধান করে একটি কমিশন গঠন করা হয়।
শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে ওই কমিটি গঠনের সিদ্ধান্তের পর আন্দোলন স্থগিত করে শিক্ষক ফোরাম, অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে মুক্ত হন উপাচার্য অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন।
তবে কমিটিকে দেয়া সময়সীমা অতিক্রান্ত হওয়ার পরও প্রতিবেদন জমা না হওয়ায় আবার আন্দোলনে নামেন শিক্ষকরা। ওই আন্দোলনের অংশ হিসেবে ক্লাস বর্জন করে উপাচার্যের বাড়ির সামনে অবস্থানের মধ্যে প্রতিবেদন চূড়ান্ত হল।
শিক্ষাসচিব কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী বুধবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পেয়েছি।
”
তবে এখনো খুলে দেখিনি। মন্ত্রীর সঙ্গে বসে পর্যালোচনার পর এ বিষয়ে জানানো হবে,” বলেন তিনি।
উপাচার্যের বিরুদ্ধে নিয়োগসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ তুলেছেন আন্দোলনরত শিক্ষকরা। তাদের সেই অভিযোগ খতিয়ে দেখতে এই তদন্ত হয়।
উপাচার্য অধ্যাপক আনোয়ার অবশ্য তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ নাকচ করে আসেছেন।
মঙ্গলবার রাতে অর্ধ শতাধিক শিক্ষক বাড়ির সামনে অবস্থান নিলে পাল্টা কর্মসূচি হিসেবে নিজেও বাড়ির সামনে অবস্থান নেন অধ্যাপক আনোয়ার।
আন্দোলনরত শিক্ষকদের কয়েক গজ দূরে থেকে উপাচার্যও খোলা আকাশের নিচে রাত পার করেন। বুধবারও তাদের অবস্থান চলছে।
শিক্ষকদের কর্মসূচির সমালোচনা করে উপাচার্য সাংবাদিকদের বলেন, “বাসভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি নাগরিক অধিকার ও আইনের পরিপন্থী। আন্দোলনকারী শিক্ষকদের এ ধরনের অযৌক্তিক ও অমানবিক আচরণ বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্কট আরো বৃদ্ধি করবে, নিরসন করতে পারবে না।
”
বাসার সামনে একজন শিক্ষকও অবস্থান করলে বাসভবনে ঢুকবেন না বলে জানান অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন।
অন্যদিকে উপাচার্য পদত্যাগ না করা পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে সাধারণ শিক্ষক ফোরাম।
ফোরামের সদস্য সচিব কামরুল আহসান বলেন, “উপাচার্যের অবস্থানের কারণে আমাদের কর্মসূচির হেরফের হবে না। উপাচার্য সকলকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছেন। ”
অধ্যাপক শরীফ এনামুল কবির পদত্যাগ করলে গত বছর ১৭ মে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য করা হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আনোয়ার হোসেনকে।
পরে তিনি নির্বাচনের মধ্য দিয়ে উপাচার্য পদে স্থায়ী হন।
কিন্তু বছর না ঘুরতেই শিক্ষক সমিতি তার বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করলে বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থিরতা তৈরি হয়। এরই এক পর্যায়ে হাই কোর্ট সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের দৈনন্দিন কার্যক্রমে বাধা না দেয়ার নির্দেশ দিলে পিছু হটে শিক্ষক সমিতি।
এরপর ‘সাধারণ শিক্ষক ফোরাম’ ব্যানারে নতুন কৌশলে আন্দোলন শুরু হয়, যাতে অধ্যাপক শরীফ এনামুল সমর্থকদের সঙ্গে সক্রিয় হন বিএনপি সমর্থক শিক্ষকরাও।
উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে ২১ থেকে ২৪ অগাস্ট পর্যন্ত টানা চার দিন তাকে তার কার্যালয়ে অবরুদ্ধ করে রাখেন আন্দোলনরত শিক্ষকরা।
তাদের ধর্মঘটে অচল হয়ে পড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব কার্যক্রম।
পরে শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে ১৫ কার্যদিবসের জন্য আন্দোলন স্থগিত করেন আন্দোলনরত শিক্ষকরা। সেই সময় পেরিয়ে যাওয়ায় আবারো তারা আন্দোলনে নেমেছেন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।