আলবার্ট আইনস্টাইন কেন এতটা মেধাবী ছিলেন? ১৯০৫ সালে ‘অলৌকিক বছরে’ তাঁর চারটি গবেষণা নিবন্ধ প্রকাশের পর স্থান, সময়, শক্তি ও ভরের ব্যাপারে মানুষের দৃষ্টিভঙ্গিই পাল্টে যায়। আইনস্টাইনের অসাধারণ মেধার নেপথ্য কারণ সম্পর্কে বিশ্বের মানুষ তখন থেকেই কৌতূহলী হয়ে ওঠে।
জার্মান বংশোদ্ভূত মার্কিন পদার্থবিদ আইনস্টাইনের মস্তিষ্কের গঠন নিয়ে বেশ কয়েক দফা গবেষণা হয়েছে। তবে স্বাভাবিক মস্তিষ্কের সঙ্গে তাঁর মস্তিষ্কের বড় কোনো পার্থক্য পাওয়া যায়নি। তবে সম্প্রতি চীনের একদল গবেষক দাবি করছেন, আইনস্টাইনের মস্তিষ্কের গঠন ব্যতিক্রমী ছিল।
আর এ কারণেই তিনি অনন্যসাধারণ মেধার অধিকারী ছিলেন। বিজ্ঞান সাময়িকী ব্রেন এই গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
চীনের সাংহাইয়ে অবস্থিত ইস্ট চায়না নরম্যাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষক উইউই মেনের নেতৃত্বে একদল গবেষক নতুন একটি কৌশল প্রয়োগ করে কাজ শুরু করেন আইনস্টাইনের মস্তিষ্কের ছবি নিয়ে। মার্কিন গবেষকদের কাছ থেকে এসব ছবি সংগ্রহ করা হয়েছিল। চীনা গবেষকেরা আইনস্টাইনের মস্তিষ্কের মধ্যবর্তী তন্তুময় অংশটি (করপাস কলোসাম) বিশদভাবে পর্যবেক্ষণ করেন।
করপাস কলোসামই মস্তিষ্কের ডান ও বাঁ অংশের মধ্যে যোগাযোগ বা সমন্বয় রাখে। তুলনামূলক পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, আইনস্টাইনের করপাস কলোসাম সুগঠিত ছিল। হয়তো এটিই তাঁর ব্যতিক্রমী মেধার মূল রহস্য।
গবেষকেরা বলেন, মস্তিষ্কের ডান অংশটি ভাষা ও সাধারণ গণনাসংক্রান্ত তথ্য প্রক্রিয়াজাত করে। আর বাঁ অংশটি ব্যাকরণ, শব্দভান্ডার স্মৃতিতে ধারণ এবং গাণিতিক সমাধানের মতো কাজগুলো করে।
মানুষ যখন কোনো কিছু বোঝার চেষ্টা করে, তখন মস্তিষ্কের ডান ও বাঁ অংশের মধ্যে তথ্য আদান-প্রদান হয়। এই তথ্য বিনিময়ের ব্যাপারটি করপাস কলোসামের মাধ্যমেই হয়ে থাকে। তাই যাঁর মস্তিষ্কের এই অংশটির গঠন ভালো, তাঁর বিশ্লেষণী দক্ষতাও তত বেশি।
১৯৫৫ সালে আইনস্টাইনের মৃত্যুর মাত্র কয়েক ঘণ্টা পর তাঁর মস্তিষ্ক আলাদা করে এর একটি বড় অংশ সংরক্ষণ করেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসক ও গবেষক টমাস হার্ভে। তিনি গবেষণার জন্য ওই মস্তিষ্কের কিছু অংশ পাতলা টুকরো করেন।
২০১০ সালে ১৪টি স্বতন্ত্র ছবিসহ আইনস্টাইনের মস্তিষ্কের বাকি অংশ যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল মিউজিয়াম অব হেলথ অ্যান্ড মেডিসিনে দান করা হয়। গার্ডিয়ান এক্সপ্রেস।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।