এক.
শ্যামলী আজকেও খুব বেশি সেজেছে। ও বরাবরই সাজুগুজুর পোকা। বিকালেই ওর মিঠুর সঙ্গে দেখা করার কথা। এমনিতেই সে নিজেকে খুব স্মার্ট ভাবে আর বাইরে বের হলে তো সে ওভার স্মার্ট! আজকে শ্যামলী ধবধবে সাদা পোশাকে পরীর মতো সেজে বাইরে বের হলো।
দুই.
ক্লোজআপ হাসিমুখে নিয়ে বাইরে এলো শ্যামলী।
মহল্লার পিচ্চিরা বালু নিয়ে হৈচৈ করছে। দেখে ভালো লাগল শ্যামলীর। কিন্তু মুহূর্তেই সেই ভালোলাগা মন্দলাগায় পর্যবসিত হলো। কারণ আর কিছু নয়, বালু হাতে দুই পিচ্চির ক্রসফায়ারের মধ্যে পড়ল শ্যামলী। ফলাফল? সাদা কাপড়ে মেঘের মতো বালুর ছাপ।
তিন.
মুড অফ হয়ে শ্যামলী এগিয়ে চলল। রিকশার জন্য একটা কর্নারে দাঁড়াল সে। দখিনা বাতাস বইছে। রিকশা ডেকে এগুতে যাবে, অমনি ওড়নায় টান পড়ল। ওড়না ছিঁড়ে গেল।
দখিনা বাতাসে ওড়না কখন যে কাঁটাতারের বেড়ায় আটকে গেছে সে টেরই পায়নি। ছেঁড়া ওড়না থেকে সুতা ছাড়াতে ওটা মুখে দিল সে। তখনি ওড়নায় লাগল লাল লিপস্টিক আর ঠোঁটের লিপস্টিকও গেল ভেস্তে। রিকশাতে আর ওঠল না সে। ভাবল বাসেই যাবে।
চার.
বাসে চেপে দেখে প্রতিটা সিটেই একজন করে বসা। একটা মাত্র সিট খালি। পুরুষের পাশে বসার চেয়ে খালি সিটে বসা ভালো। এই ভেবে জানালাঘেঁষে বসল শ্যামলী। সিটটা পেয়ে নিজেকে খুব ভাগ্যবান ভেবে যখনই সে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে চাইল তখনই টের পেল সিটটা কেন খালি।
জানালার পাশে কে যেন বমি করে রেখেছে। আর স্মার্ট শ্যামলীর হাতে ওড়নাতেও একটু ময়লা লেগেছে আর কি!
পাঁচ
মেজাজ খারাপ করে বাস থেকে নামল শ্যামলী। আজই চুলগুলো শ্যাম্পু করেছে। আনমনে রমনার উদ্দেশে হাঁটছে শ্যামলী। তখনই একটা পাগলপ্রায় বিবস্ত্রই বলা চলে এগিয়ে এলো।
এসেই শ্যামলীর দিকে তাকিয়ে হাসল সে। এর পরে শ্যামলীর দিকে বালুর মতো কী যেন মুঠো থেকে ছুড়ে দিল। শ্যামলীর লাল চুলে কী যেন পড়েছে। শ্যামলী কিছু বুঝে ওঠার আগেই পাগল উধাও। হাত দিয়ে টের পেল, এগুলো মনে হয় দাঁতের মাজন।
চুলের স্মার্টনেস নষ্ট!
ছয়.
ডেটিংস্পটে এসে শ্যামলী দেখে স্পট খালি। ধীরে ধীরে দুটি ঘণ্টা পেরিয়ে গেল। কিন্তু মিঠুর কোনো খোঁজ নেই। আরও কিছুক্ষণ পর দুটো ছেলে শ্যামলীকে ইঙ্গিত করে বলল, ওই নয়া পাগলি- আইছে রে! শ্যামলীর খুব কান্না পাচ্ছে। নিজের অজান্তেই সে বলে ওঠল- 'হায় স্মার্টনেস!' বোঝা গেল শ্যামলীর কপালটাই পোড়া।
নয়তো কেন এমন হবে?
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।