আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

চট্টগ্রামে মাদরাসায় বিস্ফোরণ------হলুদ মিডিয়ার কারসাজী, পুলিশ-আম্লীগের নাটক ও একটি নিরপেক্ষে খবর...পবিত্র কুরআন পুরানো, তেতুল তত্ব, কথিত জঙ্গি কানেকশন খোজা...আরো কত কি আবিষ্কার হবে তারপরও কি শেষ রক্ষা হবে?


চট্টগ্রাম মহানগরীর লালখানবাজারে জামেয়াতুল উলুম আল ইসলামিয়া মাদরাসায় আইপিএস বিস্ফোরণের ঘটনাকে সরকার ‘বোমা বিস্ফোরণের’ নাটক সাজানোর চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করছেন স্থানীয়রা। বিস্ফোরণের পর পুলিশ প্রশাসনের লোকজন ছুটে গিয়ে ঘটনা জেনে দুর্ঘটনা বলে মন্তব্য করলেও পরে প্রচার করা হয় সেখানে বিস্ফোরক থাকায় বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। সেখান থেকে তিনটি হাতে তৈরি গ্রেনেড পাওয়া গেছে বলে বলা হচ্ছে। আর সরকার সমর্থিত মিডিয়া এ ঘটনা ব্যাপকভাবে প্রচার করছে। মাদরাসা কর্তৃপক্ষ আইপিএস বিস্ফোরণে আগুনের ঘটনা ঘটেছে সরকারের আজ্ঞাবহ মিডিয়া প্রচার করছে বোমা বিস্ফোরণের খবর।

তবে এটা নাশকতা নাকি দুর্ঘটনা এ ব্যাপারে পুলিশ এখনো নিশ্চিত নয়। এদিকে মাদ্রাসার ভেতরে বোমার বিস্ফোরণ ঘটেছে দাবি করে এ ঘটনার পর মাদরাসাটি ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেছে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ কর্মীরা। তারা মাদরাসার পরিচালক মুফতি ইজাহারকে গ্রেফতারের দাবিও জানায়। উল্লেখ্য, গত ১১ মার্চ রাজধানীর বিএনপির নয়াপল্টনস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ককটেল উদ্ধারের নাম করে গণগ্রেফতারের ঘটনা ঘটে। সে সময় বিএনপির মহাসচিবসহ অর্ধশত নেতাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল উপরের নির্দেশেই।

দেশের আলেম-ওলামারা এ ধরনের দুর্ঘটনাকে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা হিসেবে প্রচারের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন। চট্টগ্রাম ব্যুরো জানায়, চট্টগ্রাম নগরীর লালখান বাজার জামেয়াতুল উলুম আল ইসলামিয়া মাদরাসার ছাত্রাবাসের একটি কক্ষে গতকাল সোমবার চুলার আগুন থেকে বৈদ্যুতিক সামগ্রী বিস্ফোরণে ৫ ছাত্র আহত হয়েছে। মাদরাসার ছাত্র শিক্ষক ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, চারতলা ভবনের তৃতীয় তলায় ছাত্রাবাসের একটি ছোট কক্ষে এলোমেলোভাবে রাখা মেয়াদ উত্তীর্ণ আইপিএসএর দুইটি বড় ব্যাটারী, একটি কম্পিউটারের ইউপিএস, একটি ল্যাপটপের ব্যাটারী চার্জার এবং একটি টিভির পাশেই কেরোসিন চুলায় (স্টোভ) রান্না চড়ানো হয়েছিল। এ ধরনের অবহেলা অবস্থায় দরজা টেনে দিয়ে ওই কক্ষের শিক্ষার্থীরা চতুর্থ তলায় শ্রেণীকক্ষে ও অন্যান্য রুমে চলে যায়। অবিরাম গরমে তপ্ত হয়ে বেলা ১১টায় চুলার আগুনে বৈদ্যুতিক সামগ্রীতে আকস্মিক এ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।

আর দরজা, জানালা বন্ধ থাকায় বিস্ফোরণের শব্দে জানালার কাচ ভেঙ্গে পড়ে। সেখানে ছড়ানো অবস্থায় থাকা বৈদ্যুতিক সামগ্রী, বই-পুস্তক ও কাপড়-চোপড়ে আগুন ধরে যায়। বিস্ফোরণে পাশের কক্ষ ও ওই কক্ষের দরজার সামনে থাকা ৫ জন ছাত্র আহত হয়। তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহতরা হল- মো. আব্দুল্লাহ, আবদুল খালেক, আবদুল জব্বার, আবদুল করিম ও মো. আমানুল্লাহ।

দুর্ঘটনার পরই মাদরাসার শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা দমকল বিভাগে খবর দেয়। তখন দমকল বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এ দুর্ঘটনার পর ধারাবাহিকভাবে পুলিশ, র‌্যাব, দমকল বাহিনী, সিআইডির ফরেনসিক টিম, পুলিশের বোমা বিশেষজ্ঞ দলসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন মাদরাসায় ছুটে যায়। তখন থেকে ঘড়ির কাঁটায় সময় বাড়ার সাথে সাথে উক্ত দুর্ঘটনাকে ভিন্নখাতে রূপ দেয়ার জোরদার অপচেষ্টা চলতে থাকে। সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, প্রথম দিকে ঘটনা পুলিশ স্বাভাবিকভাবে নিলেও পরবর্তীতে ওপরের মহলের কঠোর চাপের মুখে আগের বক্তব্য থেকে সরে আসে।

পুড়ে যাওয়া কক্ষটি থেকে বিভিন্ন সংস্থার পক্ষ থেকে আলামত সংগ্রহ করা হয়। তাৎক্ষণিক পুড়ে যাওয়া কক্ষ এবং আশপাশের কক্ষে ব্যাপক তল্লাশি চালানো হয়। এরপর পুড়ে যাওয়া কক্ষটি এবং এর আশপাশের বেশ কয়েকটি কক্ষ খালি করে দেয়। সেখানে মাদরাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ সবার প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ করা হয়। নগর পুলিশের কর্মকর্তারা ঘটনার পর থেকে বিকেল পর্যন্ত ঘটনার ব্যাপারে কোন মন্তব্য না করে বলেন, কি কারণে বিস্ফোরণ ঘটেছে তা এখনও বলা যাবে না।

দমকল বাহিনী পুলিশের বোমা বিশেষজ্ঞ দল এবং সিআইডির ফরেনসিক বিভাগ যে আলামত সংগ্রহ করেছে তা যাচাই বাছাই শেষে বিস্ফোরণের কারণ বলা যাবে। কিন্তু সময় গড়িয়ে সন্ধ্যা নাগাদ পুলিশের মনোভাব ও সুর ক্রমশ পাল্টাতে শুরু করে। মাদরাসাটির পরিচালক মুফতি ইজাহারুল ইসলাম চৌধুরী হেফাজতে ইসলামের নায়েবে আমীর ও ১৮ দলের শরীক নেজামে ইসলাম পার্টির একাংশের নেতা হওয়ায় নিছক একটি দুর্ঘটনাকে নিয়ে সরকারের নির্দেশে প্রশাসন নাটক সাজাচ্ছে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। বিকেল পৌনে ৪টায় সিএমপির উপ-কমিশনার (উত্তর) হারুনুর রশিদ হাজারী ওই ভবনের সামনে দাঁড়িয়ে সাংবাদিকদের জানান, বিস্ফোরণ ঘটেছে এটা সত্য, তবে কি কারণে বিস্ফোরণ ঘটেছে তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। মাদরাসা কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে মেয়াদ উত্তীর্ণ আইপিএসএর ব্যাটারী, কম্পিউটারের ইউপিএসএর পাশে চুলায় রান্না বসানোর ফলে প্রচ- গরমে বিস্ফোরণ ঘটেছে।

আমরা তাদের এ বক্তব্য খতিয়ে দেখছি। এসব বিষয়ে তদন্ত শেষে বলা যাবে বলে তিনি সাংবাদিকদের জানান। উপ-পুলিশ কমিশনার মাদরাসা ভবন ত্যাগ করার পর বিকেল ৫টা নাগাদ বিপুল সংখ্যক পুলিশ নিয়ে সেখানে ছুটে যান সিএমপির কমিশনার মো. শফিকুল ইসলাম। তিনি সীলগালা করে দেয়া কক্ষটি পরিদর্শন করে এসে সাংবাদিকদের বলেন, সেখান থেকে তিনটি হাতে তৈরি গ্রেনেড পাওয়া গেছে এবং বিস্ফোরক থাকায় ওই কক্ষে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিক তদন্তে নিশ্চিত হয়েছেন বলেও দাবি করেন। এরপর কয়েকশ’ পুলিশ গিয়ে পুরো মাদরাসা ঘেরাও করে রাখে।

রাতে মাদরাসায় শুরু হয় তল্লাশি অভিযান। এদিকে মাদরাসায় দুর্ঘটনার পরপর স্থানীয় ছাত্রলীগ ও যুবলীগের চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের নেতৃত্বে ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতাকর্মীরা মাদরাসায় বোমা বিস্ফোরণ হয়েছে দাবি করে লালখান বাজার এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল বের করে। তারা মাদরাসায় হামলারও চেষ্টা চালায়। ছাত্রলীগ-যুবলীগের বিক্ষোভ মিছিলের পাশাপাশি স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের কতিপয় নেতা মাদরাসায় ঢুকে পড়ে পুলিশ ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের মাদরাসায় অভিযান চালানোর চাপ দিতে থাকে। সরকারী দলের কতিপয় নেতা রীতিমত মাদরাসায় হামলে পড়ে।

কিন্তু মাদরাসার শিক্ষক শিক্ষার্থীরা স্বাভাবিকভাবে তাদের ক্লাস ও শ্রেণী কার্যক্রম চালিয়ে যায়। দুর্ঘটনার পর থেকে মাদরাসার গেইটে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়। ভেতরে বিভিন্ন পয়েন্টে অবস্থান নেয় পুলিশ, আর্মড পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা। দফায় দফায় পুলিশ কর্মকর্তারা দিনভর মাদরাসার পুড়ে যাওয়া কক্ষটি পরিদর্শন করেন। মিডিয়া কর্মীরাও ওই কক্ষে ঢুকে ভিডিও ফুটেজ ও স্টিল ছবি ধারণ করেন।

কিন্তু সেখানে বোমা কিংবা বিস্ফোরক জাতীয় কোন বস্তু কেউ দেখেনি। বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তারা কক্ষটিতে তন্ন তন্ন করে আলামত সংগ্রহ করেছে। তখনও কেউ অবৈধ কিছু পায়নি। কিন্তু সন্ধ্যার আগ মুহূর্তে ওই কক্ষটিতে কথিত হাতে তৈরি গ্রেনেড কোথা থেকে আসল তা নিয়ে বিস্ময়ের সৃষ্টি হয়েছে। মুফতি ইজাহারের বক্তব্য মাদরাসার পরিচালক মুফতি ইজাহারুল ইসলাম ইনকিলাবসহ বিভিন্ন মিডিয়ার সাংবাদিকদের জানান, সকাল ১০টার পর থেকে তিনি তার অফিস কক্ষেই ছিলেন।

বেলা ১১টায় হঠাৎ করে চারতলা মাদরাসা ভবনের তৃতীয় তলায় প্রচ- শব্দ শুনতে পান। তিনি খবর নিয়ে জানতে পারেন ছোট ওই কক্ষে কম্পিউটার, ল্যাপটপ, ইউপিএস ও আইপিএসসহ বেশকিছু বৈদ্যুতিক সামগ্রী এলোমেলোভাবে পড়েছিল। আর সেখানেই শিক্ষার্থীরা স্টোভ জ্বালিয়ে রান্না বসিয়ে, দরজা টেনে দিয়ে চতুর্থ তলায় ক্লাসে চলে যায়। তিনি বলেন, দরজা-জানালা বন্ধ থাকায় বিস্ফোরণের শব্দ বেশি হয় এবং তাতে আগুন ধরে যায়। তিনি বলেন, তাৎক্ষণিক ছাত্রদের সাথে কথা বলে তিনি যা জেনেছেন তাতে মনে হয়েছে চুলার পাশে আইপিএস, ইউপিএসহ বৈদ্যুতিক সামগ্রী থাকায় প্রচ- গরমে আকস্মিক এ বিস্ফোরণ ঘটেছে।

তবে আইপিএস, ইউপিএস নাকি চুলা থেকে বিস্ফোরণের সূচনা তা বলা যাচ্ছে না, কারণ সবকিছু পুড়ে গেছে। খবর পেয়ে দমকল বাহিনী এবং পুলিশ প্রশাসন সেখানে আসে এবং আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। তিনি বলেন, দুর্ঘটনার পর স্বাভাবিকভাবে শিক্ষা কার্যক্রম চলেছে। পুলিশের কর্মকর্তারা তার কাছ থেকে ঘটনা জানতে চেয়েছেন, তিনি তাদের ঘটনা জানিয়েছেন। পুলিশের সকল কার্যক্রমে মাদরাসার ছাত্র শিক্ষকরা সহযোগিতা করেছে বলেও জানান তিনি।

তিনি বলেন, মাদরাসার একটি কক্ষে এ দুর্ঘটনার কিছুক্ষণের মধ্যে মাদরাসা গেইটে বিক্ষোভ মিছিল করে সরকারী দলের লোকজন। তিনি দাবি করেন এ মাদরাসায় দ্বীনী শিক্ষা এবং দ্বীনের চর্চা হয়। এখানে অন্য কোন কিছু হওয়ার সুযোগ নেই। বিকেল ৫টায় তার অফিস কক্ষে বসে তিনি সাংবাদিকদের আরও বলেন, এ বিষয়ে পুলিশ তদন্ত করছে। তদন্তে আমি কোন ধরণের প্রভাব খাটানোর চেষ্টা করবো না।

আশা করি তদন্তে সঠিক তথ্য বেরিয়ে আসবে। প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা ছোট আকারের ওই কক্ষে মাদরাসার ইসলামি আইন অনুষদের পাঁচজন ছাত্র থাকতেন। ওই কক্ষের বাসিন্দা শিক্ষার্থী মো. আবদুল্লাহ বলেন, ছোট একটি কক্ষে অনেকগুলো বৈদ্যুতিক সামগ্রী এলোমেলোভাবে পড়েছিল। তার পাশেই একটি চুলায় আমরা প্রায় রান্না করতাম। ঘটনার আগে বৈদ্যুতিক সামগ্রীর পাশে চুলায় রান্না বসিয়ে আমরা চতুর্থ তলায় ক্লাসে যাই।

বেলা ১১টায় বিস্ফোরণের শব্দ শুনে দৌড়ে কক্ষে যাই। সেখানে গিয়ে দেখি কক্ষে আগুন জ্বলছে। পাশের কক্ষে এক শিক্ষার্থী বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকেও দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। কারণ সেখানে বৈদ্যুতিক সামগ্রীতে সংযোগ নিয়েছে ছাত্ররা নিজেরাই। বিস্ফোরণের পর ওই কক্ষে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে থাকা তিনটি বৈদ্যুতিক পাখার মধ্যে দুটি বাঁকা হয়ে গেছে।

রুমে থাকা আসবাব পত্র এলোমেলোভাবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। পুড়ে গেছে বইপত্র। জানালার গ্রিল বাঁকা হয়ে আছে। ছাত্রাবাস কক্ষের পাশের বাথরুমে ছাত্রদের জামাকাপড়ও পুড়ে গেছে। ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে পায়ের জুতা।

ছাত্রলীগের মিছিল পুলিশের ভূমিকা দুর্ঘটনার পর ছাত্রলীগ-যুবলীগ মাদরাসা ও হেফাজত বিরোধী বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মাদরাসার প্রধান ফটকে বিক্ষোভ সমাবেশও করে তারা। সেখান থেকে দাবি করা হয় এ মাদরাসায় বোমা বানানোর সময় বিস্ফোরণ ঘটেছে। তারা পুলিশ কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে বলেন, মাদরাসা ঘেরাও করে অভিযান চালান জঙ্গিদের গ্রেফতার করেন। তা না হলে পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার হুমকি দেন ছাত্রলীগের নেতারা।

দুপুর পর্যন্ত তাদের বিক্ষোভ অব্যাহত থাকে। এসময় আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সাথে ছাত্রলীগ-যুবলীগের ক্যাডাররাও মাদরাসায় ঢুকে পড়ে। তারা পুলিশকে মাদরাসায় অভিযান চালাতে চাপ দিতে থাকে। বিকেলের পর পুলিশ আহত ছাত্রদের সন্ধানে মাঠে নামে। নগরীর হালিশহর জেনারেল হাসপাতাল থেকে আহত দুই ছাত্রকে পুলিশ আটক করে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়।

এরপর নগরীর পাঁচলাইশ এলাকায় সার্জিস্কোপ নামে একটি বেসরকারী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও দুই ছাত্রকে আটক করে পুলিশ। পুলিশি হেফাজতে তাদের চিকিৎসা চলছে। পুলিশের পক্ষ থেকে বিকেল নাগাদ দাবি করা হয় দুর্ঘটনার কারণ সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই তাদের আটক দেখানো হয়েছে। পুলিশ কমিশনার আসতেই পরিস্থিতি পাল্টে যায় দুর্ঘটনার পর থেকে র‌্যাব-পুলিশের কর্মকর্তারা সেখানে যান। তাদের কেউ এ ঘটনায় বোমা বা বিস্ফোরকের কারণে বিস্ফোরণ বলে দাবি করেননি।

সরকার সমর্থক কিছু মিডিয়া কর্মীদের চাপাচাপির মধ্যেও পুলিশ কর্মকর্তারা দাবি করেন আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত ছাড়া মন্তব্য করা যাবে না। কিন্তু পুলিশের এ মনোভাব বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। হঠাৎ করে বিপুল সংখ্যক পুলিশ সদস্য নিয়ে মাদরাসায় ছুটে যান সিএমপির কমিশনার। আর তিনি সেখানে পৌঁছার কিছুক্ষণের মধ্যে পুড়ে যাওয়া ওই কক্ষটিতে হাতে তৈরি গ্রেনেড উদ্ধার করা হয়। একই সাথে কক্ষটিতে বিস্ফোরকেরও আলামত পান পুলিশ কর্মকর্তারা।

পুলিশ কমিশনার সাংবাদিকদের জানান, ছাত্রাবাসের বিধ্বস্ত কক্ষটিতে তল্লাশি চালিয়ে বেশকিছু হ্যান্ড গ্রেনেডের সন্ধান পাওয়া গেছে। এর মধ্যে কিছু গ্রেনেড নিষ্ক্রিয় এবং আরও কিছু বিপজ্জনক ও অক্ষত অবস্থায় আছে বলে জানান সিএমপি কমিশনার মো.শফিকুল ইসলাম। মাদ্রাসা পরিদর্শন শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, কক্ষটিতে বিস্ফোরক দ্রব্য ছিল এটা আমরা নিশ্চিত হয়েছি। এছাড়া হাতে তৈরি বেশকিছু গ্রেনেড এখনও ছাত্রাবাসে রয়ে গেছে। আগুন নেভাতে গিয়ে পানি ছিটানোর ফলে বেশকিছু গ্রেনেড নষ্ট হয়ে গেছে।

এখনও আরও কিছু গ্রেনেড বিপদজনক এবং অক্ষত অবস্থায় আছে। নাটক বলছেন শিক্ষার্থীরা ব্যাপক তল্লাশি মিডিয়া কর্মীদের আসা যাওয়া এবং বিধ্বস্ত কক্ষ থেকে বিভিন্ন সংস্থার আলামত সংগ্রহের পর হঠাৎ করে সেখান থেকে হাতে তৈরী গ্রেনেড পাওয়ার ঘটনাকে নাটক বলছেন মাদরাসার শিক্ষার্থীরা। তারা বলেন, দুর্ঘটনার পর থেকে শত শত পুলিশ ও সাংবাদিক কক্ষটিতে আসা যাওয়া করেছে। এরপর পুলিশ কক্ষটি সীলগালা করে দেয়। দিনের আলোতে তন্ন তন্ন করেও তারা সেখানে অবৈধ কিছু পাননি।

অথচ সন্ধ্যার আগ মুহূর্তে অন্ধকার কক্ষটি থেকে কথিত গ্রেনেড বেরিয়ে এল। এ ঘটনাকে নাটক বলে দাবি করেন তারা। আ.লীগ ক্ষমতায় এলে লালখান বাজার মাদরাসায় অভিযান আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলেই লালখান বাজার মাদরাসায় অভিযান চলে। কখনো জঙ্গী, কখনো হরকাতুল জেহাদ, কখনো হেফাজত ধরার নামে এ মাদরাসায় অভিযান চালায় পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা। এর আগের বার আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালে এ মাদরাসায় দফায় দফায় অভিযান চালিয়ে ছাত্র শিক্ষার্থীদের আটক করা হয়।

কথিত হরকাতুল জেহাদের সন্ধানে তখন অভিযান চালানো হলেও এর কোন সত্যতা মেলেনি। আওয়ামী লীগ বর্তমান মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর বেশ কয়েক দফায় মাদরাসায় অভিযান চালানো হয়। গ্রেফতার হন মুফতি ইজাহার। হেফাজতের আন্দোলন শুরু হওয়ার পর কয়েক দফায় মাদরাসায় অভিযান পরিচালনা করা হয়। এদিকে রাত সোয়া ৮টায় পুলিশ দাবি করেছে, মাদরাসা ক্যাম্পাসের মুফতি ইজাহারের বাসা থেকে কয়েক বোতল এসিড পাওয়া গেছে।

রাত ১০টায় তল্লাশি অভিযান শেষ হয়। এ সময় ৫ জনকে আট৫ক করে পুলিশ। খবর দৈনিক ইনকিলাব
 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.