সিরিয়ার রাসায়নিক অস্ত্রের মজুত তালিকাভুক্ত ও ধ্বংস করার কাজ তদারক করতে ১০০ সদস্যের একটি শক্তিশালী মিশন গঠনের প্রস্তাব দিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন। নিরাপত্তা পরিষদের কাছে পাঠানো চিঠিতে পুরো পরিকল্পনার একটি রূপরেখা দেন তিনি।
জাতিসংঘের মহাসচিব বলেন, আন্তর্জাতিক রাসায়নিক অস্ত্র পরিদর্শক ও সহায়ক কর্মীরা এখন একটি ‘বিপজ্জনক ও বিশৃঙ্খল’ পরিবেশে কাজ করছেন।
তিন ধাপে পরিচালিত হবে সিরিয়ার রাসায়নিক অস্ত্র ধ্বংসের কাজ। আগামী বছরের ৩০ জুনের মধ্যে শেষ হতে যাওয়া এই মিশন হবে নজিরবিহীন এক ঘটনা।
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদকে গত সোমবার পাঠানো এক প্রতিবেদনে বান কি মুন বলেছেন, জাতিসংঘ এবং অর্গানাইজেশন ফর দ্য প্রহিবিশন অব কেমিক্যাল ওয়েপনসের (ওপিসিডব্লিউ) এই যৌথ মিশন যে অভিযান চালাবে, এ রকম অভিযান অতীতে কখনোই চালানো হয়নি। মিশনের অগ্রবর্তী দলের সদস্য হিসেবে ওপিসিডব্লিউর ১৯ জন এবং জাতিসংঘের ১৬ জনকে এরই মধ্যে সিরিয়ায় পাঠানো হয়েছে বলে মহাসচিব জানান। তিনি বলেছেন, এই মিশনে মোট ১০০ জনের মতো অন্তর্ভুক্ত হতে পারেন। সাইপ্রাস থেকে মিশনের কাজ তদারক করা হবে।
সিরিয়ার রাসায়নিক অস্ত্র ধ্বংস করার ব্যাপারে গত ২৭ সেপ্টেম্বর নিরাপত্তা পরিষদে একটি প্রস্তাব পাস হয়।
এর আওতায় ২০১৪ সালের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ সরকারের রাসায়নিক অস্ত্রের সব মজুত ধ্বংস করার পরিকল্পনা রয়েছে। জাতিসংঘ ও ওপিসিডব্লিউর এই যৌথ মিশন সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করবে। সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কের কাছে একটি এলাকায় গত আগস্ট মাসে রাসায়নিক হামলায় শত শত লোক নিহত হওয়ার প্রেক্ষাপটে দেশটিকে রাসায়নিক অস্ত্রমুক্ত করতে উদ্যোগ নেয় রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র। এ দুই পরাশক্তির মধ্যে এ বিষয়ে মতৈক্যের মাধ্যমেই সিরিয়ায় অন্তত সাময়িকভাবে মার্কিন অভিযান ঠেকানো সম্ভব হয়েছে।
জাতিসংঘের মহাসচিব জানিয়েছেন, যৌথ মিশন তিন স্তরে কাজ করবে।
প্রথম দুই ধাপের মেয়াদ শেষ হবে আগামী ১ নভেম্বর। এই সময়ের মধ্যে মিশন প্রাথমিক পরিদর্শন এবং সিরিয়ার উৎপাদিত সব রাসায়নিক অস্ত্র ধ্বংসের কাজ তদারক করবে। তৃতীয় ধাপ ১ নভেম্বর থেকে শুরু হয়ে চলবে ২০১৪ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত। ওই সময়ের মধ্যে মিশন রাসায়নিক অস্ত্র কর্মসূচির কেন্দ্রগুলো ধ্বংস করা হয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখবে।
মুন আরও জানিয়েছেন, জাতিসংঘ বা ওপিসিডব্লিউ—কারোরই ধ্বংসের আসল কাজ সম্পন্ন করার ক্ষমতা নেই।
এ কাজের জন্য জাতিসংঘের সদস্যরাষ্ট্রগুলোই প্রযুক্তিগত ও নিরাপত্তা সহায়তাসহ অন্যান্য সহযোগিতা দেবে, এমন সম্ভাবনাই বেশি। সিরীয় সংকটের রাজনৈতিক সমাধানের পক্ষে নিজের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে তিনি আরও বলেছেন, সব পক্ষের অংশগ্রহণে এবং সিরীয়দের নেতৃত্বে একটি রাজনৈতিক প্রক্রিয়াই এই সংকট নিরসনের একমাত্র উপায়।
এ দিকে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন গতকাল বলেছেন, সিরিয়া খুবই সক্রিয়ভাবে অস্ত্র পরিদর্শকদের সহায়তা করছে। ইন্দোনেশিয়ায় অ্যাপেক শীর্ষ সম্মেলনে পুতিন বলেন, তিনি ইন্দোনেশিয়ার মতো বৃহৎ মুসলিম দেশের সিরিয়াবিষয়ক আন্তর্জাতিক সংলাপে যোগ দেওয়াকে স্বাগত জানাবেন। রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, তিনি মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরির সঙ্গে এ নিয়ে কথা বলেছেন।
দেশের অভ্যন্তরীণ বাজেট সংকটের কারণে প্রেসিডেন্ট ওবামা না এসে কেরিকে ইন্দোনেশিয়ায় পাঠিয়েছেন। আল-জাজিরা ও এএফপি।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।