আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ফিরে দেখা টেন্ডুলকারের দুই যুগ

সেই ছেলেবেলা থেকে শুরু। এক এক করে ক্রিকেটের প্রায় সব রেকর্ডই নিজের করে নিয়েছেন শচীন টেন্ডুলকার। কখনো অপরের রেকর্ড ভেঙেছেন, কখনো বা নিজের রেকর্ড ভেঙে নতুন করে গড়েছেন। নিজেকে নিয়ে গেছেন অনেকটা অস্পর্শ দূরত্বে। আজ বিদায়ের আগাম ঘোষণা দিয়েছেন লিটল মাস্টার।

জানিয়ে দিয়েছেন, আগামী মাসে ঘরের মাঠে ২০০তম টেস্ট খেলেই ইতি টানবেন ক্রিকেটের সবচেয়ে বর্ণাঢ্য অধ্যায়ের। একনজরে দেখে নেওয়া যাক ক্রিকেট ইতিহাসের উজ্জ্বলতম এই নক্ষত্রের দুই যুগের ক্রিকেট ক্যারিয়ার—

১৯৮৮ সাল: টেন্ডুলকারের বয়স তখন মাত্র ১৪। বয়সে দুই বছরের বড় বিনোদ কাম্বলিকে সঙ্গে নিয়ে গড়েন ৬৬৪ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি। দীর্ঘ ১৮ বছর ধরে সেটি ছিল যেকোনো ধরনের ক্রিকেটে সর্বোচ্চ জুটি। তিন দিনের ম্যাচে স্কুল ক্রিকেটের ওই ঐতিহাসিক ইনিংসে ৩২৬ রান নিয়ে অপরাজিত থাকেন টেন্ডুলকার।

আর কাম্বলি অপরাজিত থাকেন ৩৪৯ রান নিয়ে। ২০০৬ সালের নভেম্বরে ৭২১ রানের অবিচ্ছিন্ন ইনিংস গড়ে ওই রেকর্ড ভেঙে দেয় হায়দরাবাদের দুই স্কুলছাত্র।

১৯৮৯ সাল: ১৫ নভেম্বর করাচি টেস্ট দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক। বয়স তখন ১৬ বছর। পাকিস্তানের বিপক্ষে ওই টেস্ট সিরিজের ছয় ইনিংসে হাঁকেন দুটি হাফ সেঞ্চুরি।

টেন্ডুলকারের ওয়ানডে অভিষেকও পাকিস্তানের মাটিতেই, ১৮ ডিসেম্বর। ওই ম্যাচে মাত্র দুই বল খেলতে পেরেছিলেন লিটল মাস্টার, আউট শূন্য রানে!

১৯৯০ সাল: প্রথম আন্তর্জাতিক সেঞ্চুরি। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওল্ড ট্রাফোর্ড টেস্টে। অপরাজিত ছিলেন ১১৯ রানে।

১৯৯০ সাল: দেশের মাটিতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রথম সেঞ্চুরি।

সেটাও টেস্টে, প্রতিপক্ষ সেই ইংল্যান্ড। চেন্নাইয়ে অনুষ্ঠিত ওই ম্যাচে করেন ১৬৫ রান।

১৯৯৪ সাল: ওয়ানডে সেঞ্চুরির জন্য দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান। কলম্বোতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ওই ম্যাচটা ছিল টেন্ডুলকারের ৭৯তম ওয়ানডে।

১৯৯৬ সাল: টেন্ডুলকারময় এক বিশ্বকাপ।

ভারত, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কায় অনুষ্ঠিত ওই বিশ্বকাপে ৮৭.১৬ গড়ে সর্বোচ্চ ৫২৩ রান করেন লিটল মাস্টার। হাঁকান দুটি সেঞ্চুরি ও তিনটি হাফ সেঞ্চুরি। একই বছর মোহাম্মদ আজহারউদ্দিনের কাছ থেকে নেন দলের নেতৃত্ব। টেন্ডুলকারের বয়স তখন ২৩ বছর।

১৯৯৭ সাল: সাহারা কাপে পাকিস্তানের বিপক্ষে ভারতের ৪-১ ব্যবধানে জয়ে নেতৃত্ব দেন।

একই বছর নির্বাচিত হন উইজডেনের বর্ষসেরা ক্রিকেটার।

১৯৯৮ সাল: ১৫ মাসের অধিনায়কত্বের অবসান। দলের নেতৃত্ব হারানোর পরই দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দেখান নির্ভার টেন্ডুলকার। প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি। ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তিন টেস্টের সিরিজে দুটি সেঞ্চুরি ও একটি হাফ সেঞ্চুরি।

ভারত সিরিজ জেতে ২-১-এ।

২০০১ সাল: ওয়ানডে ক্রিকেটের ইতিহাসে প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে ১০ হাজার রান করেন টেন্ডুলকার। বল হাতে পূর্ণ করেন ওয়ানডেতে ১০০ উইকেট।

২০০২ সাল: ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ১১৭ রানের ইনিংস খেলে স্পর্শ করেন স্যার ডন ব্রাডম্যানের ২৯টি টেস্ট সেঞ্চুরির রেকর্ড। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে নিজের ৯৯তম টেস্টে ১৯৩ রান করে ছাড়িয়ে যান ব্রাডম্যানকে।

২০০৩ সাল: বিশ্বকাপের ১১ ম্যাচে ৬৭৩ রান করেন। এর আগে এক বিশ্বকাপে এত বেশি রান করতে পারেননি কোনো ব্যাটসম্যানই। রানের বন্যা বইয়ে দিয়ে টেন্ডুলকার জেতেন টুর্নামেন্টের সেরা ক্রিকেটারের পুরস্কার।

২০০৪ সাল: স্পর্শ করেন টেস্টে সুনীল গাভাস্কারের ৩৪ সেঞ্চুরির বিশ্ব রেকর্ড। গ্যারি কারস্টেন ও স্টিভ ওয়াহর পর তৃতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে টেস্ট খেলুড়ে সব দেশের বিপক্ষে সেঞ্চুরির হাঁকানোর কৃতিত্ব অর্জন করেন।

একই বছর প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে ৫০টি ওয়ানডেতে ম্যাচসেরার পুরস্কার জেতার রেকর্ড গড়েন।

২০০৫ সাল: টেস্টে ১০ হাজার রান পূর্ণ করেন। সেটি ছিল টেন্ডুলকারের ১২২তম ম্যাচ।

২০০৬ সাল: ওয়ানডেতে ১৪ হাজার রান পূর্ণ করে নতুন রেকর্ড গড়েন। কুয়ালালামপুরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দেখা পান নিজের ৪০তম ওয়ানডে সেঞ্চুরির।

২০০৭ সাল: নিজের ৪০০তম ওয়ানডে খেলেন টেন্ডুলকার।

২০০৮ সাল: ওয়ানডেতে প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে ১৬ হাজার রানের মাইলফলক ছাড়িয়ে যান। একই বছর ব্রায়ান লারার ১১ হাজার ৯৫৩ রান পেরিয়ে টেন্ডুলকার হন টেস্টে সর্বোচ্চ রানের মালিক।

২০০৯ সাল: হায়দরাবাদে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ওয়ানডেতে ১৭৫ রানের ইনিংস খেলে টেন্ডুলকার স্পর্শ করেন ইতিহাসের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে ১৭ হাজার রানের মাইলফলক।

২০১০ সাল: ওয়ানডের ইতিহাসে প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে ডাবল সেঞ্চুরি করেন টেন্ডুলকার।

একই বছর ভেঙে দেন স্টিভ ওয়াহর ১৬৮টি টেস্ট খেলার রেকর্ড।

২০১১ সাল: বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলার রেকর্ড গড়েন। ভেঙে দেন সনত্ জয়াসুরিয়ার ৪৪ ম্যাচ খেলার রেকর্ড। ভারতের বিশ্বকাপ জয়ে বড় অবদান রাখেন। ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সর্বোচ্চ ৪৮২ রান তাঁরই।


২০১২: এশিয়া কাপে বাংলাদেশের বিপক্ষে ১১৪ রান করে ‘সেঞ্চুরির সেঞ্চুরি’ গড়েন টেন্ডুলকার। ওয়ানডেতে টেন্ডুলকারের সেঞ্চুরি দাঁড়ায় ৪৯টি। এর আগে টেস্টে হাঁকান ৫১ সেঞ্চুরি। নিজের শততম সেঞ্চুরিটাই এখন পর্যন্ত তাঁর শেষ সেঞ্চুরি হয়ে আছে। ওই ম্যাচটায় বাংলাদেশের কাছে হেরেও গিয়েছিল ভারত!



সোর্স: http://www.prothom-alo.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.