আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সাকার রায় ফাঁসে নয়নের জবানবন্দি

বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর মামলার রায়ের খসড়া ফাঁস হওয়া নিয়ে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের অস্থায়ী কর্মচারী নয়ন আলী । বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর ম্যাজিস্ট্রেট তারেক মঈনুল ইসলাম ভূইয়া জবানবন্দি গ্রহণ করেন।

জবানবন্দিতে সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর আইনজীবী ব্যারিস্টার ফখরুল ইসলাম, সাকা চৌধুরীর ম্যানেজার ও ২ নম্বর ট্রাইব্যুনালের অফিস সহকারী ফারুক আহমেদ জড়িত বলে জানিয়েছেন নয়ন।

নয়নের জবানবন্দি অনুযায়ি গত ১৯ সেপ্টেম্বরের ৩/৪ দিন আগে ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার অফিসের অফিস সহকারী ফারুক তার কাছে সাকা চৌধুরীর মামলার আদেশের তারিখগুলো জানতে চান। কিন্তু, মূল ফাইল ছিল স্যারের (বিচারপতি) বাসায়।

ফারুকের কথায় নয়ন ওইদিন কম্পিউটার থেকে একশটা আদেশ ও সাকা চৌধুরী নামের ফোলডার বাছাই করে রাখেন। তার ২ দিন পর ব্যারিস্টার ফখরুল ইসলামের জুনিয়র মেহেদী হাসান এবং ফারুক তাকে একটি পেনড্রাইভ দেন। ওইদিন রোববার ছিল। নয়ন পেনড্রাইভে ওইসব ফাইল এনে দেন। ফারুক তখন মেহেদীকে বলেন, ‘টাকা কই?’ মেহেদী বলেন, ‘টাকা আনি নাই।

’ ফারুক নিজ পকেট থেকে নয়নকে ৫০০ টাকা দেন। ওইদিন বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে নয়ন চা খেতে আসলে মেহেদীর সঙ্গে দেখা হয়। মেহেদীর কথায় ব্যারিস্টার ফখরুলের কাকরাইলের চেম্বরে যান নয়ন। চেম্বারে ব্যারিস্টার ব্যারিস্টার ফখরুল ভালোমন্দ জিজ্ঞেস করে তাকে ৫০০ টাকা দেন।

নয়ন আরও জানান, টাকা দেয়ার পর মেহেদী বাইরে এসে ওইদিন তাকে আরেকটি পেনড্রাইভ দিয়ে আরেকদিন বাকী আদেশগুলো নিয়ে আসতে বলেন।

এর ২ দিন পর বেঞ্চ অফিসার গৌরিচন্দ্র তার বেতনের স্টেটমেন্ট টাইপ করতে বলেন। ট্রাইপ করাকালে তিনি দেখতে পান সাকা চৌধুরী নামে যে ফোলডারটি তিনি মেহেদীকে দিয়েছেন তাতে রায়ের কপি আছে। এরপর ব্যারিস্টার ফখরুলের চেম্বরে গিয়ে মেহেদীকে রায় ডিলেট করতে বলেলে মেহেদী জানায়, ডিলেট করা যাবে না, ফখরুল সাহেব ডিলেট করতে নিষেধ করেছেন। এরপর ব্যারিস্টার ফখরুলের কাছে গেলে সেখানে থাকা সাকা চৌধুরীর ম্যানেজার হুমকি দিয়ে বলেন, ‘রায়ের বাকী অংশ এনে না দিলে জানে মেরে ফেলবো। ’ ব্যারিস্টার ফখরুলও তাকে হুমকি দেন।

পরে তিনি ভয়ে চলে আসেন। এরপর ২২ সেপ্টেম্বর আবার চেম্বারে গেলে মেহেদী তাকে ব্যারিস্টার ফখরুলের কাছে নিয়ে যায়। ব্যারিস্টার ফখরুল তাকে বলেন, ‘নয়ন, তোমার কি আনরেজিস্ট্রার্ড সিম আছে?’ আছে জানালে তখন ব্যারিস্টার ফখরুল তাকে একটা সিমফোনি এক্সপ্লোরার মোবাইল ফোন দিয়ে বলেন, ‘ওই সিম এই মোবাইলে ভরে শুধু মেহেদীর সঙ্গে কথা বলবা। ’

নয়ন আরও জানায়, এরপরও প্রায় ৪ থেকে ৫ দিন ধরে সাকা চৌধুরীর মামলা নিয়ে যা টাইপ হতো তা তিনি পেনড্রাইভে করে মেহেদীকে ২৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দিয়েছেন। ১ অক্টোবর রায়ের দিন বেঞ্চ অফিসারের মুখে শুনতে পান রায় অনলাইনে প্রকাশ হয়ে গেছে।

শুনে তিনি মেহেদীকে ফোন দিলে চেম্বারে যেতে বলেন। চেম্বরের যাওয়ার পর মেহেদী জানায়, সাকা চৌধুরীর ম্যানেজার ও তার পরিবারের লোকজন ওই কপি নিয়ে গেছে। চিন্তা করতে নিষেধ করে মেহেদী বলেন, ‘ওরা দিয়ে থাকলে ওদের কাছ থেকে তোমাকে পঞ্চাশ হাজার টাকা এনে দেবো। ’ চলে আসার পর বিকেলে মেহেদী তাকে ফোন করে আর যোগাযোগ করতে নিষেধ করেন। সেই সঙ্গে মেরে ফেললেও তাদের নাম বলতে নিষেধ করেন।

এরপর বেঞ্চ অফিসার ডাকলে সে ঘটনা বলে দেয়।                          

সোর্স: http://www.bd-pratidin.com/

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।