কোরবানির পশুর চামড়া কেনার দাম গত কয়েক বছর আগে থেকে নির্ধারণ করা হয়নি। সে কারণে চামড়া বিক্রি নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়। মাঠপর্যায়ের বিক্রেতারা তাই ভালো দামও পাননি।
তবে এবার চামড়ার ভালো দাম পাবেন বিক্রেতারা। কারণ, চামড়াসংশ্লিষ্ট তিন সংগঠন এবার আগে থেকেই চামড়ার দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে।
নির্ধারিত দর অনুযায়ী, ঢাকায় লবণযুক্ত প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়া ৮৫ থেকে ৯০ টাকা আর ঢাকার বাইরে ৭৫ থেকে ৮০ টাকায় কেনা হবে। খাসির চামড়ার দর প্রতি বর্গফুট ৫০ থেকে ৫৫ টাকা এবং বকরির চামড়ার ৪০ থেকে ৪৫ টাকা। এ ছাড়া মহিষের চামড়ার দাম নির্ধারণ করা হয়েছে প্রতি বর্গফুট ৪০ থেকে ৪৫ টাকা।
চামড়ার এ দর নির্ধারণ করেছে ট্যানারি মালিকদের দুই সংগঠন বাংলাদেশ প্রস্তুত চামড়া, চামড়াপণ্য ও জুতা রপ্তানিকারক সমিতি (বিএফএলএলএফইএ) ও বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএ) এবং কাঁচা চামড়ার আড়তদারদের সংগঠন বাংলাদেশ হাইড অ্যান্ড স্কিন মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশন।
রাজধানীর ধানমন্ডিতে বিএফএলএলএফইএ কার্যালয়ে গতকাল শনিবার এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এ দর ঘোষণা করা হয়।
বিএফএলএলএফইএ সভাপতি বেলাল হোসেন লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান।
রাজধানীর চকবাজারের পোস্তায় কাঁচা চামড়ার আড়তদারদের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, সারা বছর যে দামে চামড়া বেচাকেনা হয়, কোরবানির সময় এর চেয়ে ১০ থেকে ১৫ টাকা কমে বেচাকেনা হয়। এ সময় পর্যাপ্ত চামড়া থাকার সুবিধা নেন আড়তদার ও ট্যানারির মালিকেরা।
তবে গত দুই বছর আন্তর্জাতিক বাজারের দোহাই দিয়ে স্বাভাবিক সময়ের বাজারদরের চেয়ে ৩০ থেকে ৪০ টাকা কমে কোরবানির পশুর চামড়া কেনেন ট্যানারির মালিকেরা। সে কারণে তখন চামড়া কেনাবেচা নিয়ে জটিলতা দেখা যায়।
মাঠপর্যায়ের বিক্রেতাও ভালো দাম পাননি।
পোস্তার কয়েকজন আড়তদার প্রথম আলোকে বলেন, কোরবানি সামনে রেখে এক মাস আগে থেকেই চামড়া বেচাকেনা বন্ধ আছে। তবে গত মৌসুমের পুরোটা সময়েই প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়া ৯৫ থেকে ১০০ টাকায় বেচাকেনা হয়েছে। খাসির চামড়া ৬০ টাকা এবং বকরির চামড়া ৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। আর মহিষের চামড়া বিক্রি হয় প্রতি বর্গফুট ৫০ টাকায়।
সেদিক থেকে ঘোষিত দর বাজারদরের সঙ্গে বেশ সংগতিপূর্ণ।
সংবাদ সম্মেলন শেষে বেলাল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘চামড়ার সর্বনিম্ন রপ্তানিমূল্য এক ডলার ৪০ সেন্ট ধরে এ দর নির্ধারণ করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে মন্দাভাব সত্ত্বেও আমরা বেশি দাম নির্ধারণ করেছি। এর মূল কারণ হলো দেশের চামড়াটা যেন পার্শ্ববর্তী দেশে পাচার না হয়ে যায়। ’
অবশ্য গত মঙ্গলবার এই সংগঠনগুলোকে ডেকে চামড়ার যৌক্তিক দাম নির্ধারণ করতে বলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
আন্তর্জাতিক বাজারদরের সঙ্গে সংগতি না রেখে চামড়ার দর নির্ধারিত হলে কিংবা কৃত্রিম উপায়ে চামড়ার দর কমিয়ে নির্ধারণ করলে চামড়া রপ্তানির সিদ্ধান্ত নিতে পারেন বাণিজ্যমন্ত্রী, এমন কথাও বলা হয়।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।