আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বেহুদা রম্য।



গতকাল সন্ধ্যা হইতেই মাথা-ব্যাথা। কাজগুলো শিকেই ঝুলিয়ে ফেসবুকে ঢুকে পড়লুম। বহু কিছু পড়লুম এবং ভূলে গেলুম। রাত সাড়ে দশটায় দুটো নাপা দিয়া ডিনার সম্পন্ন করিয়া বিছানায় শয়ন করিলাম। দু-চক্ষু বন্ধ করিয়া ঘুমের জন্য যুদ্ধ করিতেছি কিন্তু কিছুতেই কিছু হইল না।

অবশেষে রাগ করিয়া আবার ফেসবুকে মনোনিবেশ করলুম। সাধারণত চ্যাট লাইনে খুব একটা তাকিই না ইদানিং কিন্তু এই প্রহরে ক্লিক করিলাম। দেখিলাম ৩৫ জন লাইনে আছে এর মধ্যে রহিয়াছে ৩ জন প্রেমিক-প্রেমিকা যুগল। রাগ করিলাম নিজের উপর। কেউ আমার লাগিয়া বসিয়া নাই…L…।

রুমে গুড-নাইট কয়েল জ্বলিতেছে তাই মশাও নাই যে মারিয়া সময় ক্ষেপন করিব। বিজ্ঞাপনের মত পাশের বাসা হইতে মশা আনিতে যাইতে হবে কিনা ভাবিতেছি এমনও কুক্ষনে ডিপার্টমেন্টের এক অগ্রজ চ্যাটে নক করিল। দেখিয়া আনন্দিত হইলাম যে আমার মত আরও সিনিয়র অভাগা এই পৃথিবীতে আছে। বলিলেন… “কিরে..ফাজিল…কেন আছস??? নবীন বরনত তো কাপাই পেলাইও ফালনার”.. আমি লিখলুম…হে হে হে…সব অনর বদ দোয়া। তারপরেই নানা আলাপচারিতা শুরু হইল।

যাকে বলে একেবারে প্রানবন্ত বিতর্ক। এক পর্যায়ে বলিলেন তিনি জানিয়া শুনিয়া বিষ পান করিতে ইচ্ছুক অর্থাৎ বিবাহ করিতে চান। আমাকে সুধাইলেন IR ডিপার্টমেন্টে সুন্দরী নারী আছে কিনা??? আমি বলিলাম থাকিতে পারে আমি বিশেষ জানি না। তবে থাকিলেও এরা বুকড। আপনার একমাত্র ভরসা প্রাইমারী স্কুল।

আজকাল হাই স্কুলের মেয়েরাও নম্বর দিব না। তিনি নিরাশ হইয়া কিছুকাল চুপ থাকিলেন। পরে জিজ্ঞাইলেন তোর কি খবর??? তুই তো জাউরগা….. কারুরে পটাইত ন পারছ??? পুসসসসস করিয়া দীর্ঘশ্বাস ছাড়িয়া বলিলাম….নারে ভাই ..গত ৫ বছরে টর্চলাইট মারিয়াও এমন কাউরে ন পাইলাম যে আমার জামা ধুয়ে ইসতারি করিয়া রাখিবে,আমার জন্য খাবার বানাইবে,আমার পাউরুটিতে জেলি লাগাইয়া খিলাইবে…….. তিনি আমাকে একখানা কাজের মানুষ রাখার পরামর্শ দিয়া অপমান করিলেন। আমি নিঃশব্দ রইলাম। আরও কিছু প্রহর গেজানোর পর বলিলেন যে তাহাকে উঠিতে হইবেক কেননা কাল সকালে তাহাকে কুলির কাজ করিতে যাইতে হইবে।

আমি সুধাইলাম… কোন স্টেশনে আপনি কুলিগিরি করেন???? অগ্রজ বলিলেন…. ……. ব্যাংকে। সাথীহারা পাখি হইয়া কম্পুটার টার্ন অফ করিয়া দিলুম। সিগেরেটের তৃষ্ণা পাইল। কিন্তু সিগেরেট নাই। তাই নিম্নাংশে থ্রী-কোয়াটার প্যান্ট জড়াইয়া বাহির হইতে যাইব তখনি দেখিলাম পিতৃদেব ড্রইংরুমে বসিয়া পত্রিকা পড়িতেছেন।

রাত দেড়টার সময় উনি কোনদিনের পত্রিকা পড়িতেছেন বুঝিলাম না……। পিতৃদেব জিজ্ঞাইলেন….এত রাত্তিরে কোথায় যাওয়া হচ্ছে??? আমি বলিলাম….সাজেনরা গরু কিনসে….একটু দেখে আসি….। পিতৃদেব অবাক হইয়া বলিলেন….আজব তোর কখন গরুর প্রতি ইন্টারেস্ট আসল??? আর গরু দেখারি বা কি আছে??? সব গরুর চেহারাই তো এক রকম। তাছাড়া রাত্রি দেড়টার সময় গরু দেখতে যাবার মানে কি??? সবার লাই পেয়ে তুই না মাথায় উঠে গেছস। বাবা…আমি নিজেও তো একজনকে বড় বেশী লাই দিতাম….সে তো আমাকে ছেড়েই চলে গেল।

(নিঃশব্দে)

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।