ঈদের পরপরই, অথবা অন্ততপক্ষে হরতাল শুরু হওয়ার দু'দিন আগে ফোন করলে সার্বিক দিক থেকে নিশ্চয় ভালো হতো। শেখ হাসিনাকেও আল্টিমেটামের কাছে মাথা নত করার লজ্জা পেতে হতো না, আশরাফ-হানিফ-ইনু-মখাদের মাথা এতটা হেট হতো না। যাহোক, দিনভর নাটক মঞ্চস্থ করে অবশেষে প্রধানমন্ত্রী ফোন করলেনই। তবে এটাও আওয়ামী লীগের চিরাচরিত রাজনৈতিক চাল ও ধূর্তামী থেকে মুক্ত নয়। সুতরাং এ চালটাও বিএনপি ধরতে পারবে এমনটাই আশা করেছিলাম।
কিন্তু তা হতে দেখা যায়নি। তবে এই দু'দিন হরতাল-ভাঙচুর এবং ১২ জন মানুষ হত্যাসহ অসংখ্য ক্ষয়ক্ষতির দায়ভার আওয়ামী লীগকেও নিতে হবে এতে কোনো সন্দেহ নেই।
আশরাফকে ফখরুলের চিঠি দেয়া, সংসদে গিয়ে আলোচনার প্রস্তাব দেয়া, নয়া পল্টন থেকে সোহরাওয়ার্দীতে সমাবেশ স্থানান্তর করা- প্রতিটি সিদ্ধান্তই ছিল দক্ষতায় পরিপূর্ণ। এর ফলে জনগণের মনে যে জায়গা করে নেওয়া, এটাই আজকের সংলাপ বা আলোচনায় আওয়ামী লীগকে বাধ্য করার সাফল্য নিয়ে এসেছে। আমি মনে মনে বলেছি, বিএনপির এই রাজনৈতিক দক্ষতাপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলো থেকে হুজুরদেরও রাজনীতির অনেক কিছু শেখার আছে।
এটাই ইতিবাচক রাজনীতি। আওয়ামী লীগের কতিপয় নেতা সমস্যা দিন দিন বাড়িয়েই চলেছে। তাদের নাম নিচ্ছি না, শুধু ইনুকে একটা অনুরোধ করবে, তিনি যেন নাক্যা কথা না বলেন। আমার একদম ভালো লাগে না। তার নাকটা সম্ভবত অপারেশন করা দরকার।
শেখ হাসিনার ফোনালাপের পর বিএনপি হরতাল অব্যাহত রাখায় তাদের রাজনৈতিক বড় ধরনের একটা পরাজয় ঘটতে পারে, এই রকম মুহূর্তে এসে অনেকেই হিতাহিত জ্ঞান হারান। এমনকি আমি নিজেও দলের ভেতরে থাকলে এমনটাই হতো। যাহোক, অতি সত্তর হরতাল প্রত্যাহার ও ভাঙচুর-খুনোখুনির রাজনীতি পরিহার করা দরকার। গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে সবচেয়ে বড় বিষয় জনগণের সমর্থন। হরতালের পক্ষে পার্টির যত যুক্তিই থাকুক, কিন্তু এটা বুঝতে হবে শেষ মুহূর্তের ফোনালাপ রাজনৈতিক চাল ওলট-পালট করে দিয়েছে।
রাজনীতিতে খেলাটা দক্ষতার সঙ্গে চালিয়ে যেতে হয় বিজয়ের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত। এক মুহূর্তের ব্যবধানে হিসেব ওলট-পালট হয়ে যায়। জনসমর্থন একদিক থেকে অন্যদিকে কাত হয়ে যায়।
আবারো বলব, বিএনপি অন্তত আগামীকালের হরতালটি প্রত্যাহার করুক। তারা যদি রাজনীতিই করতে চায়, নৌকাকে ভয় পাবার কিছু নেই।
বিশাল টাইটানিকও ডুবে গিয়েছিল। আরেকটি কথা, এই সংকটময় পরিস্থিতিতে কিছু বলতে বিবেক বাধ্য করে। নইলে আমি মূলত রাজনৈতিক কোনো কথাই বলতে চাই না, রাজনীতি, মিটিং-মিছিল করিও না। অনেকেই আমার লেখা পড়ে প্রথমেই আওয়ামী লীগ অথবা হেফাজত-বিএনপি-জামায়াত সমর্থন করি কি না ভাবতে বসে যাবেন। যেন এছাড়া কারও কোনো স্বতন্ত্র পরিচয় ও সত্ত্বা থাকতে পারে না।
একজন আওয়ামী সমর্থিত ব্লগার একবার আমার লেখা পড়ে মন্তব্য করেছিলেন, আমার লেখায় আওয়ামী লীগের ভোট নাকি আরও বাড়বে। আমি তাকে জিজ্ঞেস করি, আপনি কি ভোটের হিসেবের ভিত্তিতেই কউকে গ্রহণ বা বর্জন করেন, অথবা ভালো বা মন্দ বলেন? কিন্তু আমি তো কারো ভোটের হিসেব করে কথা বলি না, সবসময় আম-পাবলিকের স্বার্থটা মাথায় রাখার চেষ্টা করি। এই মূল পয়েন্টটার সঙ্গে কোথাও বিরোধ ঘটলে ধরিয়ে দেবেন এটাই প্রত্যাশা। সবাইকে ধন্যবাদ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।