লিখতে ভাল লাগে, লিখে আনন্দ পাই,তাই লিখি। নতুন কিছু তৈরির আনন্দ পাই। কল্পনার আনন্দ। (http://www.ishakkhan.blogspot.com)
ভাল আছেন স্যার?
আজ খুব গরম পড়েছে।
গতকাল যে ব্যাপারটা নিয়ে আলোচনার ঝড় উঠলো, সেটা কিন্তু তেমন গুরুত্বপূর্ণ কিছু ছিল না।
তা যা বলেছ। আজ দুপুরেই বেগুনভাজা দিয়ে ভাত খেয়েছি।
আর কি আশ্চর্য বলুন তো, কসাই মাংসের সাথে একগাদা চর্বি-পর্দা আর হাড় দিয়ে দিলো। দেশটা কোথায় যাচ্ছে?
বউয়ের পেটে গ্যাস হচ্ছে ক’দিন থেকেই, ডাক্তার দেখাতে হবে।
বহির্বিশ্বের সমস্যা নিয়ে ভাবা দরকার।
হ্যাঁ, শুনলাম ভয়েজার নাকি সৌরজগৎ ছেড়ে বাইরে চলে গেছে। এখন ফিরিয়ে আনবে কী করে?
দুধে মেশাচ্ছে ফরমালিন, আর মাছে মেশাচ্ছে মেলামাইন।
ভুল বললে তো। ধরছে জাটকা মাছ, আর দোষ হচ্ছে ফার্মের মুরগীর।
তবে যা-ই বলুন, এখন কিন্তু ডায়রিয়াতে কেউ মরছে না।
এটা একটা বিরাট অর্জন বলতে পারো। কাল কন্ডাক্টর আমাকে এক টাকার জায়গায় দু’টাকা ফেরত দিলো।
ছেড়ে দিন ওসব। মেয়ের বিয়ে দেবো কী করে তাই ভাবছি। স্বর্ণের যা দাম, ছুঁতে পারা তো দূরের কথা, দোকানের সামনে দিয়ে হেঁটে যেতেও সাহস হয় না।
আমিও তো তাই বলি। ব্রেক ঠিকমতো কাজ করছে না, সে গাড়ি রাস্তায় নামানোর কী দরকার? নিজের বাড়ির লনে প্র্যাকটিস করুক না।
তবে উনার ভিজিট কিন্তু বেড়েছে।
বাড়বে না? বেগুনে পোকা পাওয়া যাচ্ছে, সে খবর আছে তোমার?
থাকতেই হবে। অঙ্কটা মেলাতে গিয়ে হিমশিম খেয়ে গেলাম, ভাবছি মাস্টারমশাই না আমাকে সামনে পেলে মেরে বসেন।
আহ, তোমার যত বাজে ভাবনা। গায়ে একটু বিছুটি পাতা মেখে নিও, তাহলেই আর পানিতে ডুববে না।
বলছেন? সোয়া সের আতপ চালেই এত গুণ?
এই শর্মা কখনো বাজে কথা বলে না। হাতুড়ে ডাক্তার হলে কী হবে, ছোকরা রিকশা ভাল চালায়।
তা যা বলেছেন।
তবে সিঁড়ি বেয়ে ওঠানামা করলেই হাঁপ ধরে যায়, কী করি বলুন তো।
ওমা, তোমাকে না বললাম সকাল দশটার মধ্যে অফিসে থাকতে হবে। সামান্য কথাটা যদি মনে রাখতে না পারো, তোমরা কী করে খাবে বলো তো?
সরি স্যার, ভুল হয়ে গেছে। আসলে বাড়িতে চা-পাতা নেই, তাই ... ...
আমাকে বললে পারতে, আমি ওপরমহলে একটু গলাখাঁকারি দিলেই ফাইলটা ছাড়ানো হয়ে যেত।
আপনার সাথে অনেকক্ষণ কথা বললাম, খুব ভাল লাগলো।
আশা করি দর্শকেরাও উপভোগ করেছেন।
আর বোলো না, বাতের ব্যথায় একেবারে কাবু হয়ে পড়েছি।
প্রচারের পর একটি চমৎকার এবং বুদ্ধিদীপ্ত সাক্ষাৎকার অনুষ্ঠান উপহার দেয়ার জন্য উপস্থাপক এবং আমন্ত্রিত অতিথি, দু’জনই খুব প্রশংসিত হলেন। দর্শকেরা সবাই হাততালি দিলেন।
দিলেন না শুধু তিনজন।
উনারা একটু অন্যরকম।
প্রথম জন বললেন, আমার তো মনে হল দু’জন বধির মানুষ বাক্যালাপ করে যাচ্ছে। কেউ কারো কথা শুনতে পেলো না, তবুও চালিয়ে গেল।
দ্বিতীয় জন মাথা চুলকোতে চুলকোতে বললেন, কী নিয়ে কথা হচ্ছিল কিছুই তো বুঝলাম না মশাই।
আর তৃতীয় জন সজোরে বললেন, বুলশিট!
ফলাফল খুব শুভ হল না।
প্রথম ভদ্রলোক এখন নিজের বাড়িতে বন্দী অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন, পাড়াপড়শির ঢিল-পাটকেল থেকে বাঁচার জন্য।
দ্বিতীয় ভদ্রলোককে অত হ্যাপা সামলাতে হয় নি, তবে কেউ কেউ সামনাসামনিই বলেছে, মেধাবীদের কথাবার্তা তোমার মতো গোমূর্খ বুঝবে কেমন করে?
আর তৃতীয়জন? তাঁকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
[গল্পটি কাল্পনিক। বিনীত – ইসহাক খান]
(৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৩)
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।