অ্যালার্জির উপসর্গ কমাতে হলে প্রথমেই এলার্জির কারণ জানতে হবে এবং অ্যালার্জির কারণ জানার জন্যই মূলত দরকার এলার্জি টেস্ট বা অ্যালার্জি পরীক্ষা নিরীক্ষা।
কাদের এবং কেন টেস্ট করা প্রয়োজন : বয়স্ক বা শিশু যেই হোক না কেন, অ্যালার্জিতে আক্রান্ত হলে বিশেষত : অ্যাজমা, অ্যালার্জিক রাইনাইটিস, এটোপিক ডার্মাটাইটিস, আটিকেরিয়া, অ্যালার্জিক কনজাংটিভাইটিস। রোগীর অ্যালার্জির সঠিক চিকিৎসা করতে হলে চিকিৎসককে প্রথমে জানতে হবে ঠিক কোন জিনিসটির দ্বারা অ্যালার্জি সংঘটিত হচ্ছে। অ্যালার্জি টেস্ট সঠিক এবং প্রত্যক্ষভাবে নির্ধারণ করে দেয় যে কিসে কিসে অ্যালার্জি এবং কিসে কিসে অ্যালার্জির ভয় নেই। যদি সুনির্দিষ্ট অ্যালার্জেনগুলোকে শনাক্ত করা যায়, তাহলে রোগীর জন্য সঠিক চিকিৎসার পরিকল্পনা করা সম্ভব হয়।
রোগীর অ্যালার্জি উপসর্গগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে তার জীবন ধারায় ইতিবাচক পরিবর্তন আনা সম্ভব। শ্বাসতন্ত্রের সংকোচনন না থাকলে রোগীর ঘুম ভালো হয়, নাক দিয়ে দিনভর সর্দি গড়ানো কিংবা হাঁচি থেকে মুক্তি পাওয়া যায়, রোগীর ব্যায়াম করার শক্তি এবং কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। অ্যাটোপিক ডার্মাটাইটিস না থাকলে রোগী স্বাভাবিক জীবনে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন।
এলার্জি টেস্টের প্রকারভেদ : স্কিন প্রিক পদ্ধতি : এ পদ্ধতিতে সামান্য পরিমাণ অ্যালার্জেন রোগীর ত্বকের মধ্যে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। যদি রোগীর অ্যালার্জি থাকে, তাহলে তার শরীরে সুনির্দিষ্ট ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখা যাবে।
অ্যালার্জি রোগীদের শরীরে অ্যালার্জি এন্টিবডি থাকে, যার নাম ইমুনোগ্লোবিউলিন-ই বা আইজি-ই। এ দ্রব্যটি রোগীর শরীরের মাস্ট কোষকে সক্রিয় করে তোলে, তখন মাস্ট কোষ কিছু রাসায়নিক দ্রব্য উৎপাদন করে, যাদের বলা হয় কেমিক্যাল মেডিয়েটর বা রাসায়নিক মাধ্যম। এ রকম একটি দ্রব্য হচ্ছে হিস্টামিন। হিস্টামিনের কারণেই অ্যালার্জির জায়গায় ত্বক ফুলে ওঠে ও লাল হয়ে যায়। পরীক্ষার সময় ত্বকের শুধু সেই জায়গাতেই এ ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখা যায়, যেখানে অ্যালার্জেন ঢুকিয়ে দেওয়া হয়।
এ পরীক্ষা সম্পন্ন করতে ২০-৩০ মিনিটের বেশি সময় লাগে না। ফলে
রোগীকে লম্বা সময় অপেক্ষা করতে হয় না। তাছাড়া এ পরীক্ষার সময় শরীরে ত্বকে যে প্রতিক্রিয়া হয় তা ৩০ মিনিটের মধ্যেই স্বাভাবিক হয়ে যায়।
স্ক্যাচ টেস্ট : এ টেস্ট সব সময় করা হয় না। পরীক্ষার সময় রোগীর শরীর বা ত্বকে আঁচড় কাটা হয়।
তারপর আঁচড়ের ক্ষতের ওপর এলার্জেন ঢেলে দেওয়া হয়।
চ্যালেঞ্জ টেস্ট : এ ক্ষেত্রে সন্দেহকৃত অ্যালার্জেন রোগীকে খাইয়ে দেওয়া হয়। সচরাচর খাদ্য অ্যালার্জির ক্ষেত্রে এ টেস্ট করা হয়। পরীক্ষা করার সময় রোগীর পাশে অবশ্যই ডাক্তারকে উপস্থিত থাকতে হবে।
রক্তের আরএএসটি (রাস) টেস্ট : এটির পুরোনাম রেডিও অ্যালারগোসোরবেন্ট টেস্ট।
ত্বকের এলার্জি পরীক্ষা কোনো কারণে অসম্ভব হলে তখন এ পরীক্ষা করা হয় । এতে এলার্জেনের সুস্পষ্ট কারণ বের করা যায়। অল্প বয়স অর্থাৎ ৫ বছরের কম, বৃদ্ধ রোগী এবং যাদের স্কিন প্রিক টেস্ট করতে ভয় পান তাদের জন্য বিশেষ ভাবে প্রযোজ্য।
ডা. গোবিন্দ চন্দ্র দাস, দি এলার্জি অ্যান্ড অ্যাজমা সেন্টার
ঢাকা। ফোন : ০১৭২১ ৮৬৮৬০৬, ০৩১-২৮৬৮২৪০
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।