বিডিআর বিদ্রোহের মামলার রায়ে বাহিনী কলঙ্কমুক্ত হয়েছে বলে মনে করছেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) মহাপরিচালক। রাষ্ট্রপক্ষও এতে সন্তুষ্ট। তবে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা বলছেন, রায়ে গোঁজামিল দেওয়া হয়েছে। নিচে তাঁদের প্রতিক্রিয়া বিস্তারিত তুলে ধরা হলো:|
কলঙ্কের তিলক উঠে গেছে: বিজিবির মহাপরিচালক
বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আজিজ আহমেদ রায়ের প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘বাহিনীর ওপর কলঙ্কের তিলক ছিল। এ রায়ের মাধ্যমে সেটা উঠে গেল।
রায় দেখে আমি বাহিনীর প্রধান হিসেবে অত্যন্ত খুশি। বিদ্রোহের সময় যাঁরা মারা গেছেন, এ রায়ে তাঁদের আত্মা শান্তি পাবে। রায়ের মাধ্যমে মামলা থেকে যাঁরা খালাস পেয়েছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে আর কোনো মামলা না থাকলে তাঁরা চাকরি ফেরত পাবেন। ’
আদালত রায়ের পর্যবেক্ষণে যে বিষয়গুলোর অবতারণা করেছেন, সেগুলোর মধ্যে বাহিনীর জন্য প্রযোজ্য বিষয়গুলো তাঁরা বিবেচনা করবেন।
২৭১ জন আসামির খালাসের বিষয়ে জানতে চাইলে আজিজ আহমেদ বলেন, এ ব্যাপারে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা ব্যবস্থা নেবেন।
মামলার রায়ে আমরা সন্তুষ্ট: রাষ্ট্রপক্ষ
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল বলেছেন, মামলার রায়ে তাঁরা সন্তুষ্ট। এ রায়ে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। রায়ে ২৭১ জন খালাস পাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি প্রথম আলো ডটকমকে বলেন, খালাশ পাওয়ার ব্যাপারটা খতিয়ে দেখে তাঁরা আপিল করবেন।
এটা গোঁজামিলের রায়: আসামিপক্ষের আইনজীবীরা
সবচেয়ে বেশি আসামির আইনজীবী আমিনুল ইসলাম, ফারুক আহমেদ ও শামীম সরদার প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে বলেন, এটা একটা গোঁজামিলের রায়। এ রায়ে তাঁরা সংক্ষুব্ধ।
তাঁরা উচ্চ আদালতে আপিল করবেন। যাঁদের খালাস দেওয়া হয়েছে, তাঁদের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ ছিল, সে সব অভিযোগ ফাঁসির আদেশ পাওয়া অনেক আসামির বিরুদ্ধেও ছিল না। তাঁদের অনেকের বিরুদ্ধে মাত্র সাক্ষ্য দিয়েছেন একজন।
‘পিন্টু রাজনৈতিক আক্রোশের শিকার’
বিএনপির নেতা নাসির উদ্দিন পিন্টুর আইনজীবী আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘পিন্টু রাজনৈতিক আক্রোশের শিকার হয়েছেন। তিনি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হওয়ার মতো কোনো অপরাধে জড়িত ছিলেন না।
তাঁর বিরোধী পক্ষের একজনকে (স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা তোরাব আলী) শাস্তি দেওয়ার ঘটনাকে ব্যালান্স করার জন্য পিন্টুকে শাস্তি দেওয়া হয়েছে। আমরা সংক্ষুব্ধ। আমরা এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করব। এটা একটা প্রহসনের বিচার হয়েছে। ’
প্রসঙ্গত, বিডিআর বিদ্রোহের সময় পিলখানা হত্যাকাণ্ডের মামলায় ডিএডি তৌহিদসহ ১৫৪ জনের ফাঁসির আদেশ হয়েছে।
বিএনপির নেতা নাসির উদ্দিন পিন্টু ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা তোরাব আলীসহ ১৫৯ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছে। সর্বোচ্চ ১০ বছরের কারাদণ্ডসহ বিভিন্ন মেয়াদে সাজার আদেশ হয়েছে ২৬২ জনের। রাষ্ট্রপক্ষ অভিযোগ প্রমাণে ব্যর্থ হওয়ায় খালাস পেয়েছেন ২৭১ জন।
হত্যা মামলার বিচারে গঠিত বিশেষ আদালতের বিচারক মো. আখতারুজ্জামান আজ মঙ্গলবার এ রায় ঘোষণা করেন।
।অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।