আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে রয়েছে বড় ধরনের কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র। ইতিহাস একদিন এ ষড়যন্ত্র উদঘাটন করবে।

অহন থিক্কা সব শয়তানরে দৌরের উপর রাখুম।

সব প্রশংসা মুবারক যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি অফুরন্ত দুরূদ মুবারক ও সালাম মুবারক। পিলখানা হত্যা মামলার বহু প্রতীক্ষিত রায় দেয়া হয়েছে গত পরশু ইয়াওমুস ছুলাছায়ি বা মঙ্গলবার। ইতিহাসের এক নৃশংসতম হত্যাযজ্ঞের মামলার এ রায়ে ১৫২ বিদ্রোহী বিডিআর সদস্যকে মৃত্যুদ- দেয়া হয়েছে।

দেশের ইতিহাসে কোনো একক মামলায় এটিই সর্বোচ্চ সংখ্যক ফাঁসির আদেশ। এছাড়াও বিএনপি নেতা নাসির উদ্দিন আহম্মেদ পিন্টু ও আওয়ামী লীগ নেতা তোরাব আলীসহ ১৬১ জনকে যাবজ্জীবন কারাদ- দেয়া হয়েছে। সর্বোচ্চ ১০ বছরসহ বিভিন্ন মেয়াদে কারাদ- দেয়া হয়েছে ২৬২ জনকে। ২৭১ জনকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়। চার্জশিট থেকে জানা যায়, ঘটনার সময় পুরো পিলখানায় বিডিআরের সদস্য ছিলেন ছয় হাজার ৯০৩ জন।

দরবার হলে ৯৭ সেনা কর্মকর্তাসহ বিডিআরের দুই হাজার ৪৮৩ জন সদস্য উপস্থিত ছিলো। এ ঘটনায় দুই হাজার ৪১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র থেকে গুলি করা হয়েছিল। এর মধ্যে এক হাজার ৮৪৫টি রাইফেল, ৫২৮টি সাব-মেশিনগান, ২৩টি পিস্তল ও ১৮টি এলএমজি ছিল। হাসপাতালের হিমঘর থেকে ৯টি, গণকবর থেকে ৪৮টি, ডিজি’র বাংলো থেকে দুটি ও অন্যান্য স্থান থেকে বাকি লাশগুলো উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় নিহত ৭৪ জনের মধ্যে সেনা কর্মকর্তা ছিলো ৫৭ জন।

বিডিআর সদস্য ছিলো ১০ জন। ৭ জন ছিলো বেসামরিক ব্যক্তি। বিডিআর হত্যাকা- বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে মর্মান্তিক ও পৈশাচিক ঘটনা। প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধেও এক দিনে এত বিপুলসংখ্যক সেনা কর্মকর্তা মারা যায়নি। সে হিসেবে এটি একটি বড় বিচার।

একযোগে এতগুলো মানুষের ফাঁসি ও যাবজ্জীবনের ঘটনাও আগে কখনো ঘটেনি। ৪ বছর ৮ মাস ধরে বিচার শেষে গত পরশু এর রায় ঘোষণা করা হলো। মূলত, পিলখানায় বিডিআর হত্যাকা- নিয়ে জনমনে অনেক প্রশ্ন রয়েছে। মানুষ মনে করছে, বিচার হয়েছে খ-িত। সাজাপ্রাপ্তদের বাইরেও অনেক নেপথ্যনায়ক রয়েছে।

তারা আড়ালে থেকে গেছে। তারা দৃশ্যপটে আসেনি। কাজেই পুরো ঘটনা উদঘাটন করতে হবে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, আমরা মনে করি- বিডিআর এত সুন্দর বাহিনী, আমাদের পুরো সীমান্তের অতন্দ্র প্রহরী, মহান মুক্তিযুদ্ধের গর্বিত অংশীদার তারা। দেশের জন্য এই প্যারা মিলিটারি বাহিনীর অনেক অবদান রয়েছে।

সেই বাহিনীর এতগুলো সদস্য বিশ্ব ইতিহাসের সবচেয়ে জঘন্য হত্যাকা-ে জড়িয়ে পড়লো, যা ভাবলে শিউরে উঠতে হয়। এখনো মানুষ মনে করে, শুধু ডাল-ভাতের কর্মসূচির অসন্তুষ্টির কারণে এত বড় ঘটনা ঘটতে পারে না। এর নেপথ্যে অনেক বড় ষড়যন্ত্র ছিল। বিচারের অনুসন্ধানে সেসবের কতটুকু আনা গেছে, তা মানুষ জানতে চায়। জনগণের অনেক জিজ্ঞাসা ছিল, সেগুলো ঠিকভাবে আসেনি।

অনেক চাঞ্চল্যকর বিষয় আড়ালে থেকে গেছে। অনেক সত্য চাপা পড়ে গেছে। কারা এর পরিকল্পনা করেছে সেগুলো ঠিকভাবে আসেনি। বিচারের সময় অনেকে মারা গেছে, আত্মহত্যা করেছে, সেগুলো আসেনি। এসব বিষয় পুনর্বিবেচনা করা প্রয়োজন।

আদালতের রায়েও এসব মন্তব্য এসেছে। বলা হয়েছে, বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে ‘অপারেশন-ডালভাত’এর অর্থসংশ্লিষ্ট কর্মসূচিতে সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিডিআর’কে (বর্তমানে বিজিবি) জড়ানো ঠিক হয়নি বলে পিলখানার হত্যা মামলায় রায়ের পর্যবেক্ষণে উল্লেখ করেছে আদালত। আদালত পর্যবেক্ষণে বলেছে, পিলখানা হত্যাকা-ের ঘটনায় ‘অপারেশন ডাল-ভাত’ একটি বড় কারণ। বিচারক তার পর্যবেক্ষণে বলেছে, ২০০৯ সালের ২৫-২৬ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় বিডিআর সদর দফতরে বিদ্রোহের ঘটনার পেছনে অর্থনৈতিক মোটিভ ছিল। রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক মোটিভও থাকতে পারে।

এই বিদ্রোহের তথ্য আগে জানতে না পারার ঘটনায় ‘গোয়েন্দা দুর্বলতা’ ছিল বলেও মনে করছে আদালত। রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারক আরো বলেছে, বিডিআর বিদ্রোহের কারণ হিসেবে সামরিক নিরাপত্তা-সম্পর্কিত কারণ থাকতে পারে; যাতে আমাদের সেনাবাহিনীর মনোবল নষ্ট করা যায়। কূটনৈতিক কারণ হিসেবে বিচারক বলেছে, বহির্বিশ্বে আমাদের শৃঙ্খলাবদ্ধ বাহিনীকে উচ্ছৃঙ্খল দেখানো, যাতে দেশের সুনাম নষ্ট হয়। এছাড়া অর্থনৈতিক কারণ হিসেবে বিচারক বলেছে, দেশে গ-গোল থাকলে বাহিনীর মধ্যে উচ্ছৃঙ্খলতা থাকবে। এতে বিনিয়োগ হবে না।

অর্থনৈতিক মেরুদ- দুর্বল করার জন্য হতে পারে। সামাজিক কারণ হিসেবে বিচারক বলেছে, সশস্ত্র বাহিনীকে নিরুৎসাহিত করার জন্য। সেনাবাহিনীর পরিবারবর্গকে হেয় করা। যাতে এ বাহিনীতে যোগ দিতে আর কেউ সাহস না পায়। পর্যবেক্ষণে সেনাবাহিনীর সিনিয়রদের উদ্দেশ্যে আদালত বলেছে, কমবয়সী সদস্যদের উপর বেশি বয়সীরা বিক্ষিপ্ত আচরণ করবে না।

মূলত, বিডিআর বিদ্রোহের নেপথ্যে যে গভীর ষড়যন্ত্র রয়েছে- এটি এখন সবার কাছেই পরিষ্কার। ইন্টারনেটের বদৌলতে দেশের সচেতন নাগরিকরা এখন অনেক অতিগোপনীয় তথ্যই জানতে পারছে। বিডিআর বিদ্রোহের বিচার হলেও সেনা কর্মকর্তাদের হত্যার বিচার এখনো শেষ হয়নি। পৃথিবীর ইতিহাসে এ ধরনের নৃশংস ও নির্মম হত্যাকা-ের কোনো নজির নেই। তাই মেধাবী, সৎ ও দেশপ্রেমিক সেনা কর্মকর্তাদের হত্যায় নেপথ্যে মদদদাতা ও পরিকল্পনাকারীদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে পিলখানা হত্যাকা-ের বিচার অসম্পূর্ণ থেকে যাবে।

তবে আশা করা যায়- ইনশাআল্লাহ অচিরেই ইতিহাস এ ষড়যন্ত্র উদঘাটন করবে। সেদিন নেপথ্য ষড়যন্ত্রীরা দোষী সাব্যস্ত হবে। সেদিন প্রকৃত বিচারের পথ খোলাশা হবে। মূলত, সব সমস্যা সমাধানে চাই সদিচ্ছা ও সক্রিয়তা তথা সততা। কিন্তু এর জন্য প্রয়োজন নেক ছোহবত মুবারক, নেক সংস্পর্শ মুবারক তথা রূহানী ফয়েজ-তাওয়াজ্জুহ মুবারক।

যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার নেক ছোহবত মুবারক-এ কেবলমাত্র তা পাওয়া সম্ভব। খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদেরকে তা নছীব করুন। (আমীন)

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.