ব্যস্ত এই শহরের পর্দার বাইরের খবর আমরা কেউ রাখতে চাইনা। রাখার প্রয়োজনও পড়ে না। মাঝে মাঝে ভদ্রতার খোলস ভেঙ্গে বেড়িয়ে আসে কর্পোরেট ঢাকার অন্তরালের কিছু চিত্র। যেখানে অর্থের বিনিময়ে বিকিকিনি হয় কাম,দেহ ভিত্তিক ভালোবাসা নামক এক আপেক্ষিক বস্তু । এ জগতের মানুষগুলোর খবরও আমরা রাখি না।
রাখতেও চাইনা। এবার আসল কথায় আসি। কলগার্লরা চলমান, গতিশীল, আধুনিক ও অদৃশ্য। তাদেরকে আপনি চারপাশে প্রতিনিয়ত দেখেন কিন্তু বুজতে পারেন না। অর্থাৎ কলগার্ল প্রসটিটিউটের আপডেট, মডার্ন ভার্সন।
এই শহরে ইদানিংকালে কলগার্লব্যবসা খুবই সংগঠিত ও শক্তিশালী। প্রশাসনের নাকের ডগায় হরদম ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে কিছু চক্র। রাজধানীর অভিজাত এলাকাসহ প্রায় সব এলাকায় চলছে এসকর্ট বিজনেস। মডেল যোগানদাতা অনেক পরিচালক এবং নামিদামি স্টাররা এই কর্মতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে অবিরাম। আর এই ব্যবসায় কলগার্ল-এজেন্ট-খদ্দের এই তিনে মিলে একটি ত্রিমাত্রিক সর্ম্পকের তৈরি হয়।
একে অন্যের পরিপুরক। জীবনের স্বপ্ন পুরণের সহজ হাতিয়ার এসকর্ট বনে যাওয়া! দীর্ঘদিন এ নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট আর স্টিং অপারেশন করে একটি বিষয় নজর কাড়ল, আর তা হলো পরিচালকদের লোভনীয় ফাঁদে পা দিয়ে, মডেল হওয়ার স্বপ্নে,কামনার বসে কিংবা বন্ধুর মাধ্যমে উঠতি তরুণীরা জড়িয়ে পড়ছে এই পেশায়। সবাই যে টাকার অভাবে এই পেশায় নাম লিখিয়েছে তাও নয়, তবে বেশির ভাগই অর্থের নেশায়। এই কলগার্ল বাজারের ব্যবসা রমরমা, বিনিয়োগ ছাড়াই লাখ লাখ কামানোর সহজ পন্থা। অনেকেই বাড়তি রোজগারের লোভে,ভাল ক্যারিয়ারের আশায়, কারোর কাছ থেকে প্রতারিত হয়ে কিংবা স্বামীর অবহেলায় ক্লান্ত হয়ে, প্রেমে ব্যর্থ হয়ে, নামকরা মডেল বা অভিনেত্রী হওয়ার আশায় এই শহরে গোপনে গোপনে নাম লেখাচ্ছেন কলগার্লদের খাতায়।
আছেন সিনেমা, টেলিভিশনের মডেল থেকে শুরু করে উঠতি গায়িকা,মডেল ছাড়াও মধ্যবিত্ত, উচ্চবিত্ত পরিবারের বিবাহিত-অবিবাহিত তরুণীরা। এ যেন চেনামুখের আড়ালে অচেনামানুষ…!!! বাইরের থেকে দেখে কোনভাবেই বোঝার উপায় নেই এরা কলগার্ল। কলগার্লের পাশাপাশি এদের আলাদা পরিচিতিও রয়েছে। সেই পরিচিতি এদেরকে সমাজে আড়াল করে রাখে। কেউ স্টুডেন্ট, কেউ বিউটিশিয়ান, কেউ প্রাইভেট টিউটর, কেউ বুটিক চালান, কেউ অভিনেত্রী।
আর খদ্দের..?? মূলত বেশিরভাগই ব্যবসায়ী,বড় চাকুরীওয়ালা। সাধারণের জন্য এ যেন আকাশ কুসুম কল্পনা। তৃপ্তির সঙ্গে এক রাত্তির পার করতে গুণতে হয় ২৫ হাজার থেকে ২ লাখ টাকা পর্যন্ত। যাদের কাঁচা টাকা ওড়াতে কোন বাধা নেই, কেবল তারাই কলগার্লদের নিয়ে মেতে ওঠেন কামনা-বাসনার জমকালো আয়োজনে। সাধারণ মানুষও যে নেই,তাও নয়।
তবে সে সংখ্যা হাতে গোনা মাত্র। খদ্দেরদের কাছে কম বয়সী স্কুল এবং কলেজের মেয়েদের চাহিদা অনেক বেশি। ফলে এই সব এসকর্ট এজেন্টদের নজর থাকে ইংরেজি মাধ্যম স্কুল আর স্বনামধন্য স্কুল কলেজগুলোর দিকে। বিভিন্ন ফাঁদ ফেলে স্কুল-কলেজের মেয়েদের কৌশলে বানানো হয় কলগার্ল। অর্থের লোভ দেখিয়ে নতুন নতুন মেয়েদের নেটওয়ার্কে নিয়ে আসতেও যথেষ্ট দক্ষ এই চক্র।
এসকর্ট এজেন্সিগুলো কখনো কখনো ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ব্যবসা চালায়। খদ্দের আকৃষ্ট করতে কলগার্লদের যাবতীয় তথ্য, ছবি এবং রেট দিয়ে ছেড়ে দেয়া হয় অনলাইন, বিভিন্ন সাইট, ফেসবুকে পেইজে। তরুণীদের সুযোগ-সুবিধার কথা বলে কলগার্ল হতে প্রলুব্ধ করা হয় এসব সাইটে । ক্যাটাগরি অনুযায়ী কলগার্ল পেতে টাকার অঙ্কেও পরিবর্তন আসে। এলিটদের জন্য বুকিং দিলে কমপক্ষে অর্ধলক্ষের ওপরে।
তবে সময় বাড়লে রেটের তারতম্য হয়। পছন্দের কলগার্ল নিয়ে ঢাকার বাইরে যাওয়ারও সুযোগ আছে। আছে হিল ট্রাক্টস্, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি, কক্সবাজার এমনকি দেশের বাইরেও নিয়ে যাওয়ার সুযোগ। দরকার শুধু টাকা…আর টাকা….বিদেশী খদ্দেরদের মনোরঞ্জন করে থাকেন ঢাকার কলগার্লদের পছন্দসই কলগার্ল অর্ডার দেয়ার পর রাজধানীতে আয়োজনে সময় লাগবে সর্বোচ্চ ২ঘণ্টা। পছন্দ না হলে অর্ডার বাতিল ।
প্রাইভেসির জন্য শুধু নগদ ক্যাশে বিল। চাহিদা মতো কলগার্ল পেতে খদ্দেরকে পালন করতে হয় বেশ কিছু শর্ত। এরপর অত্যন্ত গোপনীয়তায় কয়েক ধাপ পেরিয়ে পৌছতে হয় আসল ঠিকানায়। যেখানে মাংসের পসরার ন্যায় সাজিয়ে রাখা হয় কলগার্লদের। বর্তমান বিশ্বে যেকোনো পণ্যের চেয়ে সেক্স এবং নারী পণ্যের বাজার রমরমা।
শিশু বাদ দিলে চার বিলিয়ন মানুষ এর ক্রেতা কিংবা বিক্রেতা। পৃথিবী যতদিন থাকবে ততদিন দুটি জিনিসের চাহিদা কখনোই কমবে না। তা হলো খাদ্য আর সেক্স। যেখানে জীবন সেখানে খাদ্য, যেখানে মানুষ সেখানেই সেক্স। দুটিই মানুষের মৌলিক চাহিদা।
এই চাহিদার যেমন শেষ নাই,তেমন যোগানেরও কমতি নাই।
সবশেষে এটাই বলার মডার্ন কলগার্ল হচ্ছে সমাজে মুখোশের আড়ালে চালিয়ে যাওয়া একটি স্বাধীন পেশা। যেখানে পেশাজীবীরা থাকেন আড়ালে, অন্তরালে। এই সমাজে এদের সংখ্যা একেবারেই কম নয়…..
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।