এয়ারপোর্ট কোড
পৃথিবীর প্রতিটি বিমান বন্দরের একটা কোড নাম থাকে। যাঁরা উড়োজাহাজে চড়েন তাঁরা নিশ্চয়ই খেয়াল করে থাকবেন কোডটি বানানো হয় তিনটি ইংরেজি অক্ষর দিয়ে। এক এয়ারপোর্টের কোড কখনই অন্যটার সাথে মিলবে না।
যেমন
ঢাকা = DAC
চট্টগ্রাম = CGP
সিলেট = ZYL
লন্ডন হিথরো = LHR
লন্ডন গ্যাটউইক = LGW
ইত্যাদি।
আমার এক বন্ধু আছে, তার বাড়ি ভারতের গোয়ায়।
বানান ভুল করে গয়াকে গোয়া বলছিনা। জায়গাটার নাম আসলেই গোয়া। ইংরেজিতে GOA. সে একবার ছুটিতে দেশে যাবে। ট্র্যাভেল এজেন্টকে বলে দিয়েছে GOA র টিকেট বুক করার জন্য। এজেন্ট তার কম্পিউটারের বুকিং সিস্টেমে প্রথমে destination বা গন্তব্য সার্চ দিল GOAর জন্য।
পেয়েও গেল GOAর টিকেট। সাথে সাথে আমার বন্ধুকে জানিয়ে দিল টিকেটের প্রাপ্যতা এবং দাম। আমার বন্ধু এত কম দামে টিকেট পেয়ে তড়িঘড়ি করে টিকেট কনফার্ম করলো এবং দাম দিয়ে টিকেট নিয়ে নিল। সে ভেবেছে এজেন্ট বুঝি ভুল করে তাকে অতি অল্প দামে টিকেট দিয়ে দিচ্ছে, পাছে আবার এজেন্ট ভুল বুঝতে পেরে দাম বাড়িয়ে দেয় এই ভয়ে সে তাড়াতাড়ি টিকেটটা কেটে ফেলেছিল।
কিন্তু তার ভুলটা তখনই ভাংলো যখন সে দেখলো তার ফ্লাইট ভারতের গোয়া এয়ারপোর্টে নয়, ল্যান্ড করেছে ইতালীর জেনোয়া ‘ক্রিস্টোফার কলম্বাস’ এয়ারপোর্টে।
সে মহা হৈ চৈ শুরু করে দিল এয়ারলাইন্স কর্মীদের সাথে। সে যতই বুঝাতে চায় সে ভারতের GOAর যাত্রী ততই বিমানের কর্মকর্তারা তাকে ইতালীয়ান ভাষায় তাকে উল্টা বুঝায় এটাই GOA বিমান বন্দর। অবশেষে অনেক ঝগড়াঝাঁটির পর সে বুঝতে পারলো ‘ক্রিস্টোফার কলম্বাস’ এয়ারপোর্টের কোড GOA.
কাজেই টিকেট কেনার সময় ভাল করে দেখে নিতে হবে কোন এয়ারপোর্টে যাবার টিকেট কাটা হচ্ছে। (এই প্রসঙ্গে বলে রাখি ভারতের গোয়া এয়ারপোর্টের কোড GOI)।
ঢাকার যাত্রীদের যে এমন হয়রানী পোহাতে হয়না তা কিন্তু নয়।
অনেক সময় ঢাকার টিকেট চাইলে এজেন্ট সেনেগালের রাজধানী DAKAR এর টিকেট অফার করে বসে। অতএব, সাবধান!!!
অনেক এয়ারপোর্টের কোড কিন্তু তার নামের সাথে মোটেই মিলে না, যেমন নিউইয়র্ক = JFK. জন এফ কেনেডির নামে রাখা তাই এরকম মিলবিহীন কোড। আবার প্যারিস এয়ারপোর্টের কোড = CDG (চার্লস দ্য গল)।
ম্যালা তো বক বক করলাম, এবার কাজের কথায় আসি। পৃথিবীর সমস্ত এয়ারপোর্টের কোড নাম তিনটি করে ইংরেজি অক্ষর দিয়ে করা হয়েছে।
হাজার হাজার এয়ারপোর্ট আছে পৃথিবীতে যাদের সবগুলিই ইংরেজির ছাব্বিশটি অক্ষরকে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে বসিয়ে কোডিং করা হয়েছে। কিন্তু এয়ারপোর্ট নির্মাণ তো থেমে নেই। আরও হাজার হাজার এয়ারপোর্ট তৈরি হচ্ছে এবং হবে কেয়ামত পর্যন্ত। তাহলে কি সমস্ত এয়ারপোর্ট মাত্র ছাব্বিশটি অক্ষর দিয়ে কোডিং করা যাবে?
আছেন কি এমন কোন বুদ্ধিমান যিনি বলতে পারবেন ২৬ টি অক্ষর দিয়ে তিন অক্ষর বিশিষ্ট কতগুলি কোড বানানো সম্ভব?
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।