শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বোয় আজ শুক্রবার তিন দিনব্যাপী কমনওয়েলথ শীর্ষ সম্মেলন শুরু হচ্ছে। সম্মেলন শুরুর আগেই শ্রীলঙ্কায় তামিলদের ওপর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল বৃহস্পতিবার শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট মাহিন্দা রাজাপক্ষে বলেছেন, তাঁদের ‘লুকানোর কিছু নেই’।
২০০৯ সালে তামিল বিদ্রোহীদের দমনে সামরিক অভিযানের সময় শ্রীলঙ্কার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘন ও যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ ওঠে। বিষয়টি নিয়ে আন্তর্জাতিক চাপে রয়েছে শ্রীলঙ্কা।
এই সম্মেলনে সেই অভিযোগ আবার আলোচনায় এসেছে।
৫৩ সদস্যরাষ্ট্রের সংগঠন কমনওয়েলথ শীর্ষ সম্মেলন সামনে রেখে গতকাল পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের দুই দিনব্যাপী বৈঠক শেষ হয়। আজ শুরু হওয়া তিন দিনের সম্মেলনে সরকারপ্রধানেরা অংশ নেওয়ার কথা। যদিও শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগকে কেন্দ্র করে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং, কানাডার প্রধানমন্ত্রী স্টিফেন হার্পার ও মরিশাসের প্রধানমন্ত্রী নবীন চন্দ্র রামগুলাম সম্মেলন বর্জনের ঘোষণা দেন। কমনওয়েলথপ্রধান রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ (৮৭) এই সম্মেলনে অংশ নিচ্ছেন না।
তাঁর পক্ষে সম্মেলনে সভাপতিত্ব করবেন ব্রিটিশ রাজসিংহাসনের প্রথম উত্তরাধিকারী প্রিন্স চার্লস।
শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গতকাল প্রায় ৩০ মিনিটের সংবাদ সম্মেলনে সরকারি বাহিনীর বিরুদ্ধে ওঠা যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ খণ্ডনের চেষ্টা করেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের সবকিছু স্পষ্ট, লুকানোর কিছু নেই। ’ সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তামিলদের প্রতি একটি বার্তাও পাঠিয়েছেন রাজাপক্ষে। সেই বার্তা হলো, তিনি বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তামিলদের সঙ্গে আলোচনা করতে চান।
রাজাপক্ষে বলেন, ‘নির্যাতন বা মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে যারাই জড়িত থাকুক, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ’ তিনি বলেন, কোনো অভিযোগ থাকলে আইনি প্রক্রিয়া রয়েছে। ওই সময় নির্যাতন, ধর্ষণ ও হত্যার মতো ঘটনা ঘটে থাকলে যে কেউ মানবাধিকার কমিশন ও লেসনস লার্নট অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন কমিশনে (এলএলআরসি) অভিযোগ দায়ের করতে পারেন।
ডেভিড ক্যামেরনকে সতর্ক করল শ্রীলঙ্কা: সম্মেলনে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ প্রসঙ্গে কোনো প্রশ্ন না তুলতে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনকে সতর্ক করে দিয়েছে শ্রীলঙ্কা।
তামিল প্রতিনিধিরা এই সম্মেলনে অংশ না নিতে ক্যামেরনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন।
তবে যোগদানের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে ক্যামেরন বলেন, সম্মেলনে অংশ নিয়ে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়গুলো তুলে ধরবেন তিনি। তাই সম্মেলন বর্জন করে নয়, এতে অংশ নিয়েই লক্ষ্য অর্জন সম্ভব।
ক্যামেরনের এই মন্তব্যের পর শ্রীলঙ্কার তথ্য ও যোগাযোগমন্ত্রী কেহেলিয়া রামবুকবেলা বলেন, ‘আমরা স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র। কোনো দেশের উপনিবেশ নই। মানবাধিকার বিষয় নিয়ে কথা বলার জন্য ক্যামেরনকে সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি।
’ বিবিসি, পিটিআই।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।