আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

তরুণদের দাপট, আছেন বিতর্কিতরাও

আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম বিক্রি শেষ হয়েছে আজ রোববার। এ পর্যন্ত ফরম সংগ্রহে এগিয়ে রয়েছেন দলটির তরুণ নেতারা। একই সঙ্গে ফরম সংগ্রহ করেছেন পুরোদস্তুর ব্যবসায়ী, ব্যাংকের চেয়ারম্যান, প্রবাসী, নিষ্ক্রিয় নেতাসহ বেশ কয়েকজন বিতর্কিত ব্যক্তি।


আওয়ামী লীগের দেওয়া তথ্যমতে, দলটির মোট ফরম বিক্রি হয়েছে দুই হাজার ৬০৮টি। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপকমিটির সহ-সম্পাদক থেকে ৪০ জনের বেশি, যুবলীগ থেকে ৩৫ জন ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের ২৭ জন ফরম কিনেছেন।

এ ছাড়া কৃষক লীগ, জাতীয় শ্রমিক লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, যুব মহিলা লীগের নেতা-নেত্রীরা কমপক্ষে ১০টি করে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন। এঁদের সঙ্গে সাবেক যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগের বহু বিতর্কিত নেতাও রয়েছেন।

এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত এক আলোচনা সভায় বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ নির্বাচনমুখী। নির্বাচনকে তারা উত্সব মনে করে। আর আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম বিক্রিতে দলের তরুণদের উত্থান ঘটেছে।

আমি তাদের স্বাগত জানাই। ’

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় জানিয়েছে, ২৪ নভেম্বর বেলা তিনটায় গণভবনে ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলটির মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন আওয়ামী লীগ ও সংসদীয় বোর্ডের সভাপতি শেখ হাসিনা। মতবিনিময় সভায় মনোনয়ন প্রত্যাশীদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য রাখবেন বলে জানা গেছে।

অনুসন্ধানে দেখা গেছে, হল-মার্ক কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িত সোনালী ব্যাংকের সাবেক পরিচালক জান্নাত আরা হেনরী সিরাজগঞ্জ থেকে মনোনয়ন ফরম কিনেছেন। এ ছাড়া পদ্মা সেতু দুর্নীতির দায়ে মন্ত্রিত্ব হারানো সৈয়দ আবুল হোসেন মাদারীপুর ও অর্থ উপদেষ্টা মসিউর রহমান খুলনা থেকে মনোনয়ন ফরম কিনেছেন।

বিএনপির নেতা নুরুল ইসলামকে টুকরা টুকরা করার অভিযোগ আছে লক্ষ্মীপুরের পৌর মেয়র আবু তাহের ও তাঁর ছেলের বিরুদ্ধে। তিনিও ফরম কিনেছেন। আর চাঁদাবাজি-টেন্ডারবাজিতে জড়িত আওয়ামী লীগের সহ-সম্পাদক হাসিবুর রহমানসহ বেশ কয়েকজন নেতা এবারের মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন।

জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের একজন সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য প্রথম আলোকে বলেন, ‘ফরম কিনলেই যে তাঁকে মনোনয়ন দেওয়া হবে, এমনটা নয়। আওয়ামী লীগের যেকোনো কর্মী ফরম কিনতে পারেন।

কিন্তু মনোনয়ন দেবে দলটির সংসদীয় বোর্ড। ’

খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, দলীয় মনোনয়ন ফরম বিক্রি উপলক্ষে এসব বিতর্কিত ও অপরিচিত নেতাদের পোস্টার ও ব্যানারে ছেয়ে গেছে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ ও ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয় এলাকা। এ ছাড়া সংশ্লিষ্ট নেতাদের নির্বাচনী এলাকায়ও শোভা পাচ্ছে রং-বেরঙের সব পোস্টার, ব্যানার ও ফেস্টুন।

মনোনয়ন সংগ্রহকারী এসব নেতা বলছেন, মনোনয়ন ফরম কিনলেই তাঁরা দলীয় মনোনয়ন পাবেন, এমনটা আশা করেন না। কারণ তিনি যে সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকার মানুষ, এটা প্রচারে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ একটি মাধ্যম।

এটি তাঁদের জন্য ভবিষ্যতের একটি ‘রাজনৈতিক পুঁজি’ বলেও অনেক নেতা মন্তব্য করেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কক্সবাজার-৩ আসন থেকে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহকারী ও জেলা আওয়ামী লীগের সংস্কৃতিবিষয়ক সম্পাদক নাজনীন আসিফ সরোয়ার প্রথম আলো ডটকমকে বলেন, ‘অনেকে এ রকম থাকতে পারেন। কিন্তু দলীয় মনোনয়ন পেতেই আমি মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছি। ’

সিরাজগঞ্জ-২ আসন থেকে ফরম তুলেছেন জেদ্দা পারভীন। ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক এই সভাপতি বর্তমানে আওয়ামী লীগ কিংবা এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কোনো সংগঠনের পদে নেই।

মনোনয়ন সংগ্রহের বিষয়ে প্রথম আলো ডটকমকে তিনি বলেন, ‘জানি না নেত্রী আমাকে মনোনয়ন দেবেন কি না, তবে এলাকায় পরিচিতি পেতে মনোনয়ন ফরম আমাকে কিনতেই হবে। কারণ এটা এলাকায় পরিচিতি পেতে একটু ভালো মাধ্যম। ’

জামালপুর-২ (দেওয়ানগঞ্জ-ইসলামপুর) আসনের বর্তমান সাংসদ ফরিদুল হক দুলাল। দল থেকে এবারও মনোনয়ন ফরম কিনেছেন তিনি। এই আসনের ইসলামপুর থানা সভাপতি জিয়াউল হকও মনোনয়ন ফরম কিনেছেন।

এই আসন থেকে মুক্তিযুদ্ধের ২ নম্বর সেক্টর কমান্ডার খালেদ মোশাররফের মেয়ে মাহজাবীন খালেদ মোশাররফ মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন। পিতৃ পরিচয়ের ওপর ভিত্তি করে মনোনয়ন পেতে চান আওয়ামী লীগের প্রাথমিক এই সদস্য। জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘মনোনয়ন ফরম ক্রয়ের মাধ্যমে নির্বাচনী প্রক্রিয়া শুরু করে দিলাম। যদি মনে করা হয়, আমার অন্যরা ভালো, তাহলে তাঁদের জন্য কাজ করব। ’



সোর্স: http://www.prothom-alo.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।