আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

হুমায়ুনের প্রতি ভালোবাসা!

মানুষকে ভালোবাসি।

“বাদশাহ নামদার” লিখেছিলেন হুমায়ুন আহমেদ। বাদশাহ হুমায়ুনের জীবন নিয়ে, হুমায়ুন আহমেদ নামের যে বাদশাহ আমাদের সাহিত্য জগৎ, মনঃ জগৎ কে রীতিমত নিয়ন্ত্রন করে গেছেন তাকে নিয়ে কিছু কথা লিখতে ইচ্ছে করছে খুব। বাংলা সাহিত্যের কয়েকটা বিস্ময়ের নাম বলতে বললে আমি প্রথম তিনটা নাম এভাবে লেখবো- ১। ১৯/২০ বয়সে লেখা সুকান্তের ‘ক্ষুধার রাজ্যে পৃথিবী গদ্যময় পুর্নিমার চাদ যেন ঝলসানো রুটি… ২।

২৭ বছর বয়সে লেখা মানিক বন্দোপদ্ধ্যায়ের “পুতুল নাচের ইতিকথা” ৩। ২১ বছর বয়সে লেখা হুমায়ন আহমেদের ‘নন্দিত নরকে” (এই তালিকা নিশ্চয় আরো বড় করা যেতে পারে ,অন্যভাবেও হতে পারে, তবে সত্যি বলতে এই তিনটা উদাহরন আমাকে ব্যক্তিগত ভাবে সবচেয়ে বেশী বিস্মিত করে। ) একসময় একটা কথা বলা হতো “বঙ্গসমাজে তুমি যদি বিজ্ঞজন সাজতে চাও তো রবিকে অবজ্ঞা করো” । কথাটা কিছুটা হলেও হুমায়ুনের ব্যাপারেও চলে। বাংলা সাহিত্য নিয়ে আমার পড়ালেখা কোন ভাবেই সামান্য নয়।

আমি কখনোই বুঝিনা হুমায়ুন আহমেদ কে কিভাবে ছোট করে বলা যায়। জনপ্রিয়তাই ছিলো হয়তো তার সবচেয়ে বড় শ্ত্রু। আমাদের একটা ধারনা আছে সবাই যাকে পছন্দ করে তাকে যদি আমিও পছন্দ করি তো আলাদা কিছু হলাম কিভাবে। আলাদা কিছু মানুষ নিয়ে আমার কোন আকর্ষন নেই । আমার একটা বড় আকর্ষন হুমায়ুনের প্রতি ছিলো, এখনো আছে।

হুমায়ুন আহমেদ নিজের অজান্তেই যে জিনিসতা করে গেছেন তা হচ্ছে সবার লেখার ক্ষমতা বাড়িয়ে দিয়ে গেছেন। এই যে ফেসবুক/অন লাইনের অন্যান্য ক্ষেত্র গুলোতে আমাদের ছেলে মেয়েরা এতো সুন্দর করে লেখে, এতো গুছিয়ে কথা বলতে শিখেছে, এতো সুন্দর করে সব অনুভব করতে শিখেছে হুমায়ুন আহমেদ তার পিছনের একটা বড় কারন। সবাইকে লিখতে শিখিয়ে তিনি লেখা থামিয়ে দিলেন। এই দূ;খ কোথায় রাখি সব বিখ্যত মানুষই মারা যাবার পর ব্যবসায়ী পন্য হয়ে যান?? বঙ্গ ভাষা ভাষীদের জন্য সব চেয়ে বড় ব্যবসায়ী পন্য হচ্ছেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। কলকাতার মহান সুরকাররা রবীন্দ্র সংগীতের আগে পরে অদ্ভুত অদ্ভুত সব সুর লাগিয়ে বীর দর্পে ঘোষনা করেন “কবি গুরুকে নতুন ভাবে খোজা হচ্ছে।

উদ্দেশ্য নতুন প্রজন্ম” আমি জানি উদ্দেশ্য নতুন প্রজন্ম নয়, উদ্দেশ্য ব্যবসা। টয়লেট সামগ্রী বিক্রয়ের দোকানের পর্যন্ত নাম নয় “ছায়াবীথি” মেয়েদের অন্তর্বাস বিক্রী হয় “নন্দিনী স্টল” এ। আমি একটা টি শার্ট দেখেছিলাম কবি গুরুর মুখাবয়ব সহ কারে পাশে লেখা “This is tagore”. হুমায়ুন আহমেদ ও এখন আমাদের কাছে ক্রমশ ব্যবসায়ী পন্য হয়ে যাচ্ছেন। আমি তাকে ব্যবসার পন্য ভাবতে পারিনা। প্রিয় হুমায়ুন আহমেদ, আমি আপনাকে ব্যবসায়ী পন্য হতে দেখতে ভীষন কষ্ট পাই।

তবে আমিও আপনাকে নিয়ে স্ট্যাটাস দিচ্ছি। আপনার প্রতি ভালোবাসা প্রকাশের জন্য এই সামান্য উপায়ই আমার জানা আছে। কত শত পাতা আমি আপনাকে নিয়ে লেখে পার করে দিতে পারি। সেসব আর ইচ্ছে হচ্ছেনা। আমি বরং আপনারই লেখা “বাদশাহ নামদার” বই থেকে একটা কবিতার তিনতা লাইন আপনাকেই উৎসর্গ করছি।

(কবিতার আসল লেখক –বাদশাহ হুমায়ুন। ) “বন্ধু হবে এমন যাদের মাঝে কখনো দেখা হবেনা, দুজনেই থাকবে দুজনের কাছে অদৃশ্য,’ দৃশ্যমান থাকবে তাদের ভালোবাসা” হুমায়ুন আহমেদ অদৃশ্য হয়েছেন, দৃশ্যমান আছে আমাদের ভালোবাসা, দৃশ্যমান আছে তার ভালোবাসা। শুভ জন্মদিন প্রিয় বন্ধু!

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১৩ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.