প্রায়ই মেয়েদের বলতে শুনি, "সংসারের প্রয়োজনে না, চাকরি করি নিজের প্রয়োজনে। " দুটো ব্যাপার হতে পারে, সংসারে উনার অবদান দরকার নেই, কিংবা দরকার থাকাটা স্বামীর উপার্জন ক্ষমতা তথা উনার স্ট্যাটাসের পক্ষে সম্মানজনক নয়। পুরুষ সহপাঠিরা যথার্থই আফসোস করতো, "তোদের তো বিয়ে করলেই হলো, পেশাতে ঢুকে গেলি। আমাদের তো খাটাখাটনি করতে হবে চাকরি পেতে। " সত্যিই তো তাই।
গৃহিনী এক স্বীকৃত পেশাই বটে। হাউজ ওয়াইফ এখন আধুনিক নাম পেয়েছে, ' হোম মেকার'।
টেন্ডুলকারের আবেগমথিত বিদায়ী ভাষণের মধ্যে মিডিয়ার কাছে সবচেয়ে গুরুত্ব পেয়েছে তাঁর স্ত্রীর আত্মত্যাগের ঘটনা। অনেককে আবার স্যালুট জানাতে দেখলাম মন্তব্যের জায়গায়। কিন্তু কথা হলো, তাঁর স্ত্রী যদি স্বাভাবিক ক্যারিয়ার বজায় রাখতো, তাহলে টেন্ডুলকার কি আজকের এই জায়গায় আসতেন না??? কে কার জন্য কতটা ছাড়বে সেটা ব্যাক্তিগত ব্যাপার।
আমার আপত্তি এই মহিমান্বিত করার ব্যাপারটাকেই। এ ধরনের স্যাক্রিফাইস তো নতুন কিছু না। ঘরে ঘরে হরহামেশাই এ ধরনের এ্যাডজাস্টমেন্ট হচ্ছে। স্ত্রীরা পেশাতে জড়াচ্ছেন না কিংবা জড়ালেও সংসারের সময় যাতে দেয়া যায় তেমন কিছু বেছে নিচ্ছেন। স্বামী যেখানে চাকরি করবেন সেখানে থাকার জন্য স্ত্রী ভালো দামি চাকরী ছেড়ে প্রাইমারি স্কুলের টিচার।
সন্তান হলো, মানুষ করতে হবে তো মাকেই। অতএব ছাড়ো। টেন্ডুলকারের কীর্তি মহৎ কিন্তু তাঁর স্ত্রী আমাদের চেনা পরিচিত মেয়েটাই। সন্তানের উপর আইনের হিসেবে বাবার অধিকার বেশি অথচ জন্মদান থেকে বড় করা, সবটুকুই মায়ের স্যাক্রিফাইসের পাহাড়ের উপর গড়ে উঠে। মহিমান্বিত করে এই সব আত্মত্যাগকে আমরা মূল্য দেবার চেষ্টা করি।
আর এই মহিমান্বিত করাটাই মেয়েদের ছাড় দেবার এইসব প্রবণতাকে বাড়িয়ে তোলে।
এ ধরনের মহৎ কাজ কিন্তু কোন ছেলে করতে রাজী হবে না। মেয়েরা ছাড়বে, সমাজ পিঠ চাপড়ে দেবে। অথচ ছাড়তে রাজী না হলে মারতে কিন্তু ছাড়বে না।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।