মাক্স নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (নোবিপ্রবি) প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় যোগদান, ব্যানার সরানো ও কমিটি বিষয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতাদের সঙ্গে দেখা করা নিয়ে মঙ্গলবার রাত ৮টা থেকে দুই গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়া, সংর্ঘষ ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।
এ সময় ইভান-বাপ্পি গ্রুপ ও মহসীন গ্রুপের মধ্যকার এ সংঘর্ষে অন্তত ১৫ জন সাধারণ ছাত্র আহত হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ছাত্ররা বাংলানিউজকে জানান, মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নোয়াখালী সফর উপলক্ষে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দ নোয়াখালী আসেন। এ সময় কমিটি বিষয়ে কথা বলতে নোবিপ্রবির ছাত্রলীগের মহসীন গ্রুপ, ইভান গ্রুপ ও বাপ্পি গ্রুপ দেখা করতে যায়।
কেন্দ্রীয় নেতাদের সামনেই মহসীন ও বাপ্পি গ্রুপের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও সংঘর্ষ হয়।
ওই সময় নেতারা বিষয়টি মীমাংসা করে দিলেও বাইরে এসে আবারও তারা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়লে আমির হামযাসহ ৪/৫ জন আহত হয়।
এর আগে সোমবার সন্ধ্যায় মহসীন গ্রুপ বাপ্পি গ্রুপের প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় গেটে লাগানো কয়েকটি ব্যানার সরিয়ে ফেলে।
এনিয়ে সোমবার রাতে ক্যাম্পাসে দুই গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়া হয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মহসীন গ্রুপ প্রধানমন্ত্রীর জনসভার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে দেয়া ৫টি বাসের ছাত্রছাত্রীদের আসতে দেয়নি।
এর জের ধরে মঙ্গলবার রাত আটটায় ইভান ও বাপ্পি গ্রুপ এক হয়ে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মহসীন গ্রুপকে ধাওয়া করে।
একপর্যায়ে দুই গ্রুপের মধ্যে সংর্ঘষে অন্তত ১০ ছাত্র আহত হয়।
পরে ইভান ও বাপ্পি গ্রুপ মহসীন ও আমির হামযাকে খুঁজতে ভাষা শহীদ সালাম হলে হানা দেয়। এ সময় তারা হলের তৃতীয় তলায় বেশ কয়েকটি রুমের দরজা, জানালা, ছাত্রদের খাট, আসবাবসহ ব্যাপক ভাঙচুর চালায়।
এ সময় তারা কলাপসিবল গেটের তালা ভেতর থেকে বন্ধ করে থেমে থেমে হামলা চালায়।
তবে ছাত্রলীগ ক্যাম্পাসে দফায় দফায় তাণ্ডব চালালেও কর্তৃপক্ষ কোন ব্যবস্থা নেয়নি বা কর্তৃপক্ষের কাউকে দেখা যায়নি বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের একমাত্র হলের অন্য ছাত্ররা আতঙ্কে রয়েছে।
এ বিষয়ে ফার্মেসী ৪র্থ ব্যাচের ছাত্র আবদুল হামিদ বাপ্পি বাংলানিউজকে জানান, কমিটি নিয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতাদের সামনে তার গ্রুপের ছেলেদের মারধর করে মহসীন গ্রুপ। পরে ব্যানার সরিয়ে ফেলে এবং শিবিরের ছাত্রদের সঙ্গে এক হয়ে মারার প্রস্তুতি নেয় তারা।
কিন্তু সিএসটি ২য় ব্যাচের ছাত্র মঞ্জুরুল আলম মহসীন বাংলানিউজকে অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, মঙ্গলবার সকাল থেকে বহিরাগত অস্ত্রধারী শতাধিক ছেলে হলে ব্যাপক হামলা ও ভাঙচুর চালালেও প্রশাসনের কেউ তাদের বাঁধা দিচ্ছে না।
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, নোবিপ্রবি ক্যাম্পাসে রাজনীতি নিষিদ্ধ হলেও বর্তমান ভিসি যোগদান করার পর মহসীন, বাপ্পি ও মাজেদ এ তিন ছাত্রলীগের গ্রুপ তৈরি হয়।
ভিসি যখন যার অবস্থান ভালো তাকে সুযোগ মতো ব্যবহার করেন।
সংঘর্ষের ব্যাপারে ভাষা শহীদ আবদুস সালাম হলের প্রভোস্ট প্রফেসর মো. সেলিমের বক্তব্য নেয়ার জন্য তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে বার বার চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।
ঘটনার ব্যাপারে সুধারাম মডেল থানা পুলিশেল ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর জাহেদুল হক রনি বাংলানিউজকে জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।
এদিকে, মঙ্গলবার রাত দেড়টার দিকে হলে পুলিশ অভিযান চালালে ইভান গ্রুপ পালিয়ে গেলেও বাপ্পি ও ইভান গ্রুপ হলেই অবস্থান করছে।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত বুধবার সকাল থেকেই ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
অপরদিকে এখনো ক্যাম্পাসের পরিস্থিতি থমথমে রয়েছে।
তথ্যসূত্র ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।