বৃহস্পতিবার বিশ্বসেরাদের সঙ্গে খেলতে নামার আগের দিন ২৯তম জন্মদিন পালন করেছেন সিদ্দিকুর। এই রয়াল মেলবোর্ন গলফ ক্লাবেই গত সপ্তাহে আরেকটি টুর্নামেন্টে খেলেছেন তিনি। তবে বাংলাদেশের সেরা গলফার জানালেন, এবার গলফ কোর্সটির সবুজ গালিচায় হাটাটা উপভোগ করবেন তিনি। কারণ, প্রথম বাংলাদেশী হিসেবে বিশ্বকাপ খেলতে পেরে তিনি গর্বিত।
"আমি ফেইসবুক ও ই-মেইলে আমার ভক্ত ও বন্ধুদের অনেক বার্তা পেয়েছি।
তারা আমাকে ভালো খেলতে উৎসাহ যুগিয়েছে। "
১৯০০ ও ১৯০৪ সালে অলিম্পিকের দ্বিতীয় ও তৃতীয় আসরের পর বাদ পড়েছিল গলফ। আবার ২০১৬ সালে ব্রাজিলের রিও ডি জেনিরো অলিম্পিকে গলফকে ফেরানোর সিদ্ধান্ত ২০০৯ সালে যখন নেয়া হয়, তখন সিদ্দিকুর একটু একটু করে উঠে আসছেন বিশ্ব আসরে।
এখন বিশ্বকাপে সুযোগ পাওয়া সিদ্দিকুর আশা করতেই পারেন ব্রাজিলের রিও ডি জেনিরোতে বাংলাদেশের পতাকা ওড়ানোর। কারণ অলিম্পিকের বাছাই প্রক্রিয়া প্রায় বিশ্বকাপের মতোই।
বিশ্বকাপে আর কোনো বাংলাদেশী সুযোগ না পাওয়ায় দলগত প্রতিযোগিতায় নেই বাংলাদেশ। সিদ্দিকুর আশা করছেন, বিশ্বকাপে তিনি অংশ নেয়ায় দেশে গলফের প্রতি মানুষের আগ্রহ আরো বাড়বে।
"আগে বেশি মানুষ গলফ সম্পর্কে খোঁজ রাখতো না। এখন অনেক বেশি বাংলাদেশী গলফের খোঁজ রাখছেন, বিশেষ করে আমি যখন ভালো খেলছি। "
হিরো ইন্ডিয়ান ওপেনের ট্রফি হাতে সিদ্দিকুর।
ঢাকার কুর্মিটোলা গলফ ক্লাবে বলবয় হিসেবে যাত্রা শুরু করা সিদ্দিকুর এরই মধ্যে জিতে নিয়েছেন এশিয়ান ট্যুরের দুটি শিরোপা। ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় এশিয়ান ট্যুর শিরোপা (ইন্ডিয়ান ওপেন, প্রথমে জিতেছিলেন ব্রুনাই ওপেন) জিতে সিদ্দিকুর পেয়েছেন দুই লাখ ২৫ হাজার মার্কিন ডলার। এ বছরে তার মোট আয় প্রায় সাড়ে চার লাখ মার্কিন ডলার। বড় অঙ্কের এই প্রাইজমানিতে এশিয়ান ট্যুর অর্ডার অব মেরিটে সিদ্দিকুর উঠে এসেছেন তিন নম্বরে। এ বছর নিশ্চিতভাবেই শীর্ষ দশের মধ্যে থাকবেন তিনি, যা হবে চার বছরের মধ্যে তৃতীয়বার।
হিরো ইন্ডিয়ান ওপেনের ট্রফি হাতে সিদ্দিকুর।
এ পর্যায়ে উঠে আসা নিয়ে সিদ্দিকুর বলেন, "সত্যি কথা বলতে কি, আমি এশিয়ান ট্যুরে একজন ভালো পেশাদার গলফার হতে পারবো বা বিশ্বকাপ বা অলিম্পিকে খেলার সুযোগ পাব, তা কখনই ভাবিনি। এটা আমাদের স্বপ্নের মধ্যেও ছিল না। কিন্তু এখন স্বপ্ন সত্যি হয়েছে। প্রথমবারের মতো আমি বিশ্বকাপে অংশ নিচ্ছি।
"
একটা একটা করে তার স্বপ্ন সত্যি হচ্ছে বলে খুবই আনন্দিত সিদ্দিকুর। আর তার কল্যাণেই বাংলাদেশে গলফ জনপ্রিয়তা পাচ্ছে বলে সন্তুষ্ট তিনি।
"আমি এশিয়ান ট্যুরে ভালো করায় বাংলাদেশে গলফ দিনে দিনে জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। অনেক সম্ভাবনাময় তরুণ খেলোয়াড় উঠে আসছে। সরকারও গলফকে আরো সহায়তা করছে।
আশা করছি, বর্তমানের তরুণরা আমার চেয়েও ভালো করবে। "
দুই সপ্তাহ আগে ইন্ডিয়ান ওপেনে সাফল্য পেয়ে আত্মবিশ্বাসী সিদ্দিকুর বিশ্বকাপেও ভালো কিছু করার আকাঙ্খা করছেন। তবে তিনি জানেন, রয়াল মেলবোর্ন গলফ ক্লাবের সবুজ গালিচায় সাফল্য পেতে হলে আরো দক্ষতা অর্জন করতে হবে। প্রস্তুতি হিসেবে তাই গত সপ্তাহে এখানেই ট্যালিস্কার মাস্টার্স খেলেছেন।
"এ ধরনের সবুজে এটা আমার প্রথমবার খেলার অভিজ্ঞতা।
আমি মনে করি আমি ভালোই খেলেছি। তবে এখানে খেলা শিখতে আমার অনেক সময় লেগেছে। এ ধরনের কোর্স সম্পর্কে আমার কোনো ধারণাই ছিল না। তবে গত কয়েকটা দিন এখানে অনুশীলন করে এখন আমি ভালোই করছি। "
ট্যালিস্কার মাস্টার্সে দ্বিতীয় রাউন্ড শেষে ৬৬তম হওয়ায় একটুর জন্য পরের দুই রাউন্ডে খেলার যোগ্যতা অর্জন করতে পারেননি (কাট মিস করেছেন) সিদ্দিকুর।
৬৫তম পর্যন্ত গলফাররা খেলছেন পরের রাউন্ডে। তবে তাতে বিশ্বকাপে আত্মবিশ্বাস টলছে না বাংলাদেশের প্রথম পেশাদার গলফারের।
"আমি আত্মবিশ্বাস হারাইনি। আমি গত সপ্তাহে কাট মিস করেছি। তবে আর সবকিছু ঠিকই আছে।
আমি কিছু পাট (বল হোলে ফেলা) মিস করেছি। আমি আশা করছি, এবার (বিশ্বকাপে) পাট ঠিকমতো করে করে ভালো স্কোর করে উপরের দিকে থাকতে পারবো। এখানে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো গ্রিনে ভালো মতো খেলতে পারাটা। "
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।