আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বিয়ে যখন বাধ্যতামূলক !

প্রতিটি জিনিসের ভিন্ন ভিন্ন সৌন্দর্য বোঝার ক্ষমতা মানুষের নেই , যদি কোনো মানুষের থেকে থাকে তবে সে মহামানব নয়ত মহাবেকুব ।

শিরোনাম দেখে ঘাঁবড়ানোর কিছু নেই । একটু পড়লেই বুঝতে পারবেন । রাজধানীর বাসা বাড়িতে কোনো মেস , কোয়ার্টার , ভাড়া দেয়া যাবে না কোনো ব্যাচেলর ব্যক্তিকে । যারা আছেন তাদের আগামী সাত দিনের মধ্যে বাসা ছেড়ে দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে পুলিশ ।

অনলাইনের বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যমের খবরে এ কথা বলা হয়েছে । সম্প্রতি পুলিশের সদর দফতর থেকে ডিএমপির থানাগুলোকে এমন একটি নির্দেশনা দেয়ায় বিপাকে পড়েছেন সংশ্লিষ্ট থানার পুলিশ কর্মকর্তারা । সংশ্লিষ্ট থানার পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন , নগরীর বাসা বাড়িতে মেস কোয়ার্টারগুলো এখন পুলিশের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে । সম্প্রতি নগরীর বিভিন্ন এলাকায় বেশ কিছু মেস কোয়ার্টার থেকে বিপুল পরিমাণে বিস্ফোরক দ্রব্য এবং বোমা তৈরির কারখানার সন্ধান পাওয়ায় পুলিশের টনক নড়েছে । ওইসব বাসায় আশ্রয় নিয়ে হরতালে নাশকতা সৃষ্টির পরিকল্পনার অভিযোগে জামায়াত- শিবিরের বেশ কিছু নেতাকর্মীকেও গ্রেফতার করেছে আইন- শৃঙ্খলা বাহিনী ।

এ কারণে নগরীর প্রতিটি থানা এলাকায় কোনো কোনো বাসা বাড়িতে মেস বা ব্যাচেলরদের ভাড়া দেয়া হয়েছে । তার একটি তালিকা ও ইতোমধ্যে তৈরি করেছে নিজ নিজ থানার কর্মকর্তারা । ওই তালিকা অনুযায়ী অনেক বাড়ি মালিককে ব্যাচেলরদের উঠিয়ে দেয়ার নির্দেশও দিয়েছে পুলিশ । এদিকে পুলিশের এমন সিদ্ধান্তের কারণে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে নগরীর মেস কোয়ার্টার বাড়ি মালিকদের মধ্যে । অন্যদিকে আইন- শৃঙ্খলা বাহিনীর এমন নির্দেশনায় মেস কোয়ার্টারের ব্যাচেলরদের মধ্যে দেখা দিয়েছে চরম ক্ষোভ আর হতাশা ।

অনেকেই ইতোমধ্যে নিকটস্থ আত্মীয়দের বাসায় ধরনা দিচ্ছেন । এদিকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হঠাৎ এমন সিদ্ধান্তকে আইন বহির্ভুত এবং মানবাধিকার লঙ্ঘন বলে মন্তব্য করেছেন মানবাধিকারের কয়েকটি সংগঠন । তারা বলছেন , জনগণের নিরাপত্তার স্বার্থে বিকল্প চিন্তা করা উচিত । কতিপয় অপরাধীর কারণে এমন ঢালাওভাবে সবাইকে ভোগান্তিতে ফেলা , এটা ঠিক নয় । এতে করে লাখ লাখ ব্যাচেলর গৃহহীন হয়ে রাস্তায় থাকতে হবে ।

কারণ পুলিশের নিষেধাজ্ঞার কারণে কোনো বাড়ির মালিক ব্যাচেলরদের মেস ভাড়া দেবেন না । এদিকে এক জরিপে দেখা গেছে নগরীতে প্রায় ৪৫ হাজার বাসা-বাড়িতে মেস কোয়ার্টার আছে । এতে প্রায় সাড়ে ১০ লাখ ব্যাচেলর বসবাস করছেন । এরমধ্যে ছোট-বড় প্রায় চার হাজার ৫৫৬টি মেস কোয়ার্টার আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কড়া নজরদারিতে রয়েছে । বিভিন্ন সময়ে ওইসব মেস কোয়ার্টারের ব্যাচেলর সদস্যদের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে বলে গোয়েন্দা সূত্রে জানা যায় ।

কথা এটা না , কথা হল অন্য কোনো শহর থেকে ঢাকা তে এসে পড়াশোনা করে বা চাকরি করে এমন মানুষের সংখ্যা কম না । কিছুসংখ্যক অপরাধীদের জন্য সবাইকে কেন ভোগান্তি পোহাতে হবে ? আর নাশকতা কি শুধু একজন ব্যাচেলর ই সৃষ্টি করতে পারে ? দুই তিনটা বাচ্চার জনক কি নাশকতা সৃষ্টি করতে পারে না ? কোনো ব্যাচেলরকে বাসা ভাড়া দেওয়া হবে না , তাহলে কি ঢাকায় বাসা ভাড়া নিতে হলে বিয়ে করতে হবে ? যে ছেলেটা ঢাকাতে এসেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি কোচিং করতে , ভালো একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার স্বপ্ন নিয়ে তাহলে তাকেও কি বিয়ে করতে হবে বাসা ভাড়া পাওয়ার জন্য ? আজব দেশের আজব আইন ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.