দুই ইনিংসেই জনসনের শিকার। ব্রিসবেন টেস্টে সংগ্রহ মোটে ১৯ (১০ ও ৯)। রান খরায় ভুগছেনও দীর্ঘদিন। গত জুলাই-আগস্টের অ্যাশেজে অস্ট্রেলিয়াকে উড়িয়ে দেওয়ার সময় ছিলেন ভীষণ নিষ্প্রভ। সর্বশেষ চার টেস্টে তার ঝুলিতে মোটে একটি অর্ধশতক।
বোঝা যাচ্ছে সময়টা মোটেও ভালো যাচ্ছে না ইংলিশ ব্যাটসম্যান জোনাথন ট্রটের। কিন্তু তাই বলে সরেই দাঁড়াবেন ব্যাট-বলের লড়াই থেকে? ক্রিকেট বিশ্বকে চমকে দিয়ে এমন সিদ্ধান্তই নিয়েছেন এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান। ‘মানসিক-চাপজনিত অসুস্থতা’র কারণ দেখিয়ে সরে দাঁড়িয়েছেন অ্যাশেজ সিরিজ থেকে। ইতিমধ্যে দেশের পথে রওনাও দিয়ে ফেলেছেন তিনি। ব্রিসবেনে অস্ট্রেলিয়ার কাছে ৩৮১ রানের বিশাল ব্যবধানে পরাজয়ের পর ইংল্যান্ড দলের জন্য আরেকটি ধাক্কা হয়েই এসেছে ট্রটের সিদ্ধান্ত! মূল সমস্যা কি সেটি অবশ্য খুলে বলেননি ইংল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ডকে (ইসিবি)।
কেবল বলেছেন, ‘আসলে খেলার জন্য শতভাগ ফিট নয়। আগে যেভাবে খেলেছি, সেভাবে এখন খেলতে পারছি না। এক্ষেত্রে একমাত্র করণীয়— বিশ্রাম নেয়া। এখন কেবল সুস্থতা নিয়েই ভাবছি। ’ ট্রটের এমন অনাকাঙ্ক্ষিত ছিটকে পড়ায় বেশ ভাবনায় পড়েছে ইংল্যান্ড দল।
ট্রট কবে ফিরবেন সে বিষয়েও নিশ্চিত করতে পারেনি ইংল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি)। শুধু জানিয়েছে, ট্রট ‘অনির্দিষ্ট সময়ে’র জন্য বিরতি নিয়েছে। সুস্থতার উপর নির্ভর করছে কবে ফিরবেন। ইংল্যান্ড দলে অবশ্য এ ধরনের ঘটনা নতুন নয়। বছর ছয়েক আগে অ্যাশেজ সফরে মার্কাস ট্রেসকোথিকও ‘বিষণ্নতা’র কারণে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছিলেন সিরিজ থেকে।
এরপর আর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরতে পারেননি ট্রেসকোথিক। সংগতকারণে ট্রটের প্রতি তাঁর দরদও খানিকটা বেশি। ‘প্রথম দিকে এ সমস্যা থেকে বেরিয়ে আসা কিংবা কারো সঙ্গে কথা বলা খুবই কঠিন। আমি নিশ্চিত ওর মোটেও ভালো লাগছে না। তবে সে ভালো সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
’ বিবিসি রেডিওকে বলেছেন ট্রেসকোথিক। কেন এমন অপ্রত্যাশিত ‘বিদায়’ ট্রটের? কারণ হিসেবে অনেক কথাই উঠছে। কেউ বলছেন সংবাদমাধ্যমের সমালোচনা কিংবা ব্রিসবেনে টেস্টে অস্ট্রেলিয়ানদের স্লেজিং ট্রটের মানসিক চাপ সৃষ্টিতে দায়ী। এ কারণে অন্যতম সমালোচক মাইকেল ভন ভুগছেন অনুশোচনায়, ‘এ সপ্তাহে ট্রটকে সমালোচনা করায় নিজেকে ভীষণ অপরাধী মনে হচ্ছে। আসলে জানতাম না ও এমন সমস্যার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।
যা দেখেছি কেবল সেটি নিয়েই মন্তব্য করেছি। ’ টুইটারে লিখেছেন ভন।
এদিকে আগের দিন মাঠে অস্ট্রেলিয়ানরা ইংলিশ ব্যাটসম্যানদের বাজেভাবে উত্ত্যক্ত করার প্রসঙ্গটিও এসেছে। সেসব ট্রটের ওপর প্রভাব ফেলেছে কিনা, তা নিয়েও বেশ জোরেশোরে আলোচনা হচ্ছে। অবশ্য ইংল্যান্ডের পেশাদার ক্রিকেটার অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান নির্বাহী অ্যাঙ্গাস পোর্টার জানিয়েছেন, ‘ট্রটের সমস্যা মাঠে অস্ট্রেলিয়ানদের উত্ত্যক্ত কিংবা সংবাদমাধ্যমের সমালোচনার কারণে নয়।
এটি সম্ভবত তাঁর মস্তিষ্ক সংশ্লিষ্ট সমস্যা। ’
সাম্প্রতিক সময়ে ফর্মহীনতায় ভুগলেও ২০০৯ সালে অভিষেকের পর নিজেকে নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যান হিসেবেই প্রমাণ করেছিলেন ট্রট। ৪৯ টেস্ট খেলে ৪৬ দশমিক ৪৫ গড়ে করেছিলেন ৩ হাজার ৭৬৩ রান। যার মধ্যে আছে নয় শতক ও ১৮টি অর্ধশতক। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে নিজের সঙ্গেই যেন আর পেরে উঠছিলেন না।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।